ক্লাশে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে


ফেল করা শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ না করায় ভেদরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ক্লাশে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতির বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক বলছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রলীগ সভাপতি বলছেন- শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ করার বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক পাপিয়া আক্তার, অফিস সহকারী মোজাম্মেল হক জানান, বুধবার দুপুরে ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে আগামী ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা গত কয়েক দিন পূর্বে শেষ হয়। সেখানে ১৪০ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে ৬১ জন উত্তীর্ণ হয়। তারা বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৬১ জনকে ফরম ফিলাপ করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ প্রদান করেন। সে অনুযায়ী ফরম ফিলাপের কাজ চলছে। উক্ত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সরদার গত ২ বছর এসএসসিতে ফেল করে। এ বছর সে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই ফরম ফিলাপ করতে যায়। এতে প্রধান শিক্ষক অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও তার আপন বড় ভাই ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহাদাত হোসেন হিরু সরদার ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমে ঢুকে লাঞ্ছিত করে। এতে শিক্ষক ও উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখানের কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সরদার গত ২০২২ সালের নিয়মিত এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। দুবছর ফেল করায় এ বছরও সে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই ফরম ফিলাপ করতে চায়। আমি রাজি না হওয়ায় সে ও তার বড় ভাই ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহাদাত হোসেন হিরু সরদার আমাকে অফিস রুমে এসে লাঞ্ছিত করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি শাহাদাত হোসেন হিরু সরদার বলেন, ভেদরগঞ্জ হেডকোয়াটার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কিছু ছাত্রছাত্রী নির্বাচনী পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করেছে। তারা বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছিল। এদের দেখে আমি বিদ্যালয়ে যাই। প্রধান শিক্ষককে তাদের ফরম ফিলাপ করতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। লাঞ্ছিত করার কথা মিথ্যা ও বানোয়াট। লাঞ্ছিত করার ঘটনা স্বীকার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিক্ষকদের ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠাই। পরে আমি শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।