গজারিয়ায় গাছের মগডালে যুবক, নম্বর ৯৯৯-এ ফোন,ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় উদ্ধার।


গজারিয়ায় গাছের মগডালে যুবক, নম্বর ৯৯৯-এ ফোন,ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় উদ্ধার।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার টেংগারচর ইউনিয়নের টেংগারচর গ্রামে গাছের মগডালে উঠে অস্বাভাবিক আচরণ করা এক যুবককে নাটকীয় ভাবে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এলাকাজুড়ে ঘটনার চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।জানা গেছে, নয়ন (২৪) নামের ওই যুবক টেংগারচর গ্রামের মহিউদ্দিনের ভাগিনা এবং পেশায় অটো চালক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫ দিন আগে সন্ধ্যায় নয়ন তার ব্যবহৃত অটোরিকশা ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন স্থানে রেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যায়। ফেরার পর দেখে, তার অটোরিকশার উপর একটি বিড়াল বসে আছে। নয়ন বিড়ালটিকে লাথি মারার সাথে সাথেই তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।পরিবারের দাবি, এরপর থেকেই নয়ন জ্বীনে আছর করার মতো আচরণ শুরু করে। প্রথমে স্থানীয়ভাবে কবিরাজি চিকিৎসা ও গ্রামের ইমামের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁকের ব্যবস্থা করা হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়নি।গত কাল মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ নয়ন বাড়ির পাশে টেংগারচর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের কণারে একটি বড় আমগাছে উঠে যায় এবং গাছের মগডালে গিয়ে বসে পড়ে। দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা তাকে নামাতে ব্যর্থ হলে, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করা হয়।খবর পেয়ে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে মোঃ জাকির হোসেনের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় এবং স্থানীয়দের সহায়তায় নয়নকে নিরাপদে গাছ থেকে নামানো হয়।পরবর্তীতে নয়নের আক্রমণাত্মক আচরণ বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়ির উঠানে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। হাত-পা শক্ত করে রশি দিয়ে বাঁধা হয়।পরে স্থানীয় ইমাম আব্দুল আওয়াল দীর্ঘ সময় ধরে কোরআনের বিভিন্ন সুরা পাঠ করে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে নয়নকে কিছুটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। পরিবারের দাবি, ঝাড়ফুঁকের সময় দাবি করা হয়, ‘জ্বিন’ নয়নকে ছেড়ে যাবে যদি ৫ কেজি মিষ্টি দেওয়া হয়। পরিবার মিষ্টি দেওয়ার পর নয়ন অজ্ঞান হয়ে পড়ে।ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে টেংগারচর ইউনিয়নের আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শত শত মানুষ নয়নকে দেখতে ভিড় জমায়।এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণ জানান, নয়নের আচরণ শুরু থেকেই অস্বাভাবিক ছিল। কারও কারও ধারণা, বিষয়টি মানসিক রোগ বা আতঙ্কের ফলাফল হতে পারে।এ ব্যাপারে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, “৯৯৯-এ কল পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। যুবককে নিরাপদে উদ্ধার করেছি।”তবে নয়নের পরিবার দাবি করেছে, বিষয়টি পুরোপুরি ‘অলৌকিক’ এবং ‘অদৃশ্য শক্তির’ কাজ। এ নিয়ে এলাকায় নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা চলমান রয়েছে।প্রসঙ্গত,স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।