গাজার পথে গ্রেটা, যা বলল ইসরাইল


গাজার পথে গ্রেটা, যা বলল ইসরাইল
২২ বছর বয়সি সুইডিশ জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ গত রোববার ‘ম্যাডলিন’ নামক একটি নৌযানে চড়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। নৌযানটি মূলত ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত। এতে গাজার সাধারণ নাগরিকদের জন্য জরুরি ত্রাণ সামগ্রী বহন করা হচ্ছে।এদিকে গ্রেটার গাজা অভিমুখে যাত্রার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ইসরাইলের এক শীর্ষ সামরিক মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, তারা গ্রেটার এই নৌযান গাজায় পৌঁছানো ঠেকাতে প্রস্তুত।ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব লন্ডন–কে বলেন,এ ক্ষেত্রেও আমরা প্রস্তুত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, সে অনুযায়ী কাজ করব।তবে ইসরাইল কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত বলেননি।২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলদার ইসরাইলের আগ্রাসনে রীতিমত ধ্বংসস্তুপ ও মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার ওপর টানা ৯০ দিনেরও বেশি সময় ধরে অবরোধ চালিয়ে আসছে।মূলত ২০০৭ সাল থেকেই অঞ্চলটি স্থল, জল ও আকাশপথে অবরুদ্ধ।২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় এ পর্যন্ত ৫৪,৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তারওপর টানা তিন মাসের অবরোধে পুরো গাজা উপত্যকা এখন দুর্ভিক্ষের কবলে।এ অবস্থায় আর বসে থাকতে পারেননি সুইডিশ জলবায়ু কর্মী ২২ বছরের তরুণী গ্রেটা।নিরীহ গাজাবাসীর জন্য পানি পথেই ছুটেছেন ত্রাণ নিয়ে। তার ত্রাণবাহী নৌযানে রয়েছে— দুধ, প্রোটিন বার, শিশু খাদ্য, ডায়াপার, আটা, চাল, পানি পরিশোধন যন্ত্র, স্বাস্থ্যবিষয়ক সামগ্রী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম।এ যাত্রায় গ্রেটা থুনবার্গ ছাড়াও আছেন ১২ জন আন্তর্জাতিক শান্তিকর্মী। যার মধ্যে গেমস অব থর্নস অভিনেতা লিয়াম কানিংহ্যামও রয়েছেন।এই ফ্লোটিলা মিশনকে তারা বলছে, ইসরাইলের অবৈধ অবরোধ ও যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে অহিংস, সরাসরি প্রতিরোধ।এদিকে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কাটানিয়া থেকে যাত্রা শুরুর পর গ্রেটার নৌযানকে ড্রোনে অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অংশগ্রহণকারীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি গ্রিক কোস্ট গার্ডের ড্রোন। নিরাপত্তার জন্য তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।গ্রেটা থুনবার্গ ইতোমধ্যেই তার সোশ্যাল মিডিয়ায় সফরের বিভিন্ন মুহূর্ত শেয়ার করছেন। যেখানে তাকে দেখা যাচ্ছে ভূমধ্যসাগরে সাঁতার কাটা নৌযানে কেফিয়েহ (ফিলিস্তিনি রুমাল) পরে ও ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে।রওনা হওয়ার আগে কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, আমরা এটা করছি কারণ, পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক না কেন, চেষ্টা থামিয়ে দিলে মানবতা হারিয়ে যাবে।এর আগেও এফএফসি পরিচালিত আরেকটি জাহাজ মাল্টার পথে যাওয়ার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময় তারা অভিযোগ করে, ইসরাইল ড্রোন হামলা চালিয়ে জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।সূত্র:এনডিটিভি