টঙ্গীবাড়িতে মাকে হ-ত্যার অভিযোগে সৎ বাবার বিরুদ্ধে ছেলের মামলা।


মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামে কিস্তির টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারার ঘটনায়  সৎ বাবার  বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ছেলে। নিহতের ছেলে ইব্রাহিম বাদি হয়ে  শুক্রবার রাতে সৎ বাবা আনোয়ার হোসেন আনুকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন।  ঘটনার পর হতে ঘাতক পলাতক রয়েছে। এদিকে শনিবার বিকালে জানাজা শেষে নিহতকে উপজেলার বেসনাল কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, নিহত নাজমার বাড়ি বরিশাল জেলায়। নাজমার আগের স্বামী আবুল কালাম সর্দার বরিশাল জেলার মেদিনীপুর থানার উলানিয়া বাজার গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন যাবৎ সে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বেসনাল এলাকায় বাড়া থেকে শ্রমিকের কাজ করতো। ৯ বছর আগে ওই এলাকায় একটি গাছ কাটতে গিয়ে গাছ হতে পরে মারা যায় আবুল কালাম। ছোট ৩ সন্তান নিয়ে বিপাকে পরেন নাজমা ।পরে ঘাতক আনোয়ার হোসেন আনুর সাথে দ্বিতীয় বিবাহ হয় নাজমার। আনোয়ার হোসেন আনু এর আগেও অনেকগুলো বিবাহ করেছিলেন। প্রত্যেক স্ত্রীই তার অত্যাচারে পালিয়ে যায় বলে স্থানীয় মোহন সৈয়াল জানান। নাজমা ঘাতক আনোয়ার হোসেন আনুকে বিবাহ করলেও সে দিঘিরপাড় বাজারের বিভিন্ন দোকানে পানি বিক্রি করে ও অন্যের বাসা বাড়িতে কাজ করে নিজের ছেলেদের লালন পালন করতো। এদিকে ঘাতক আনোয়ার হোসেন আনু একজন মাদক সেবি। সব সময় গাজা সেবন করতো ।তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও হতে অনেক টাকা উত্তোলন করায় সে। কিন্তু এখোন এনজিওর টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করছিল আনু। এ নিয়ে নাজমার সাথে দ্বন্দ্ব চলছিল ঘাতক আনুর।  গত ১৫ অক্টোবর রাতে কিস্তির টাকা চাওয়ায় স্ত্রী নাজমা বেগমকে বেধড়ক মারধর করে ঘাতক আনোয়ার হোসেন আনু। পরে গত ১৬ অক্টোবর এ নিয়ে টঙ্গীবাড়ী থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নিহত নাজমা বেগম। অভিযোগ দায়েরের পর নাজমা তার বড় বোনের বাসায় বসবাস করছিল। কিন্তু  শুক্রবার (১৮ই অক্টোবর) দুপুর বারোটার দিকে কিস্তি টাকা দেওয়ার কথা বলে মুঠোফোনে কামারখাড়া কবরস্থানের সামনে স্ত্রী নাজমা বেগমকে ডেকে নেয় ঘাতক স্বামী আনোয়ার হোসেন আনু। পরে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে কবরস্থানে ফেলে পালিয়ে যায় আনু। গুরুতর আহত নাজমা বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে টঙ্গীবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুপুর দুইটার টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সাইনবোর্ড এলাকায় মারা যায় নাজমা বেগম।ঘাতক আনোয়র হোসেন আনু উপজেলার কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির বাসিন্দা।এই ব্যাপারে নিহতের সৎ ছেলে ইব্রাহিম বলেন আমার বাবা দীর্ঘ ৯ বছর আগে মারা যায়। পরে আনোয়ার হোসেন আনুকে আমার মা দ্বিতীয় বিবাহ করে। সৎ বাবা নেশাখোর সে আমার মাকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও হতে টাকা উঠিয়ে নেশা করতো। এনিয়ে সৎ বাবা ও  মায়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত  দ্বন্দ্ব চলে আসছে । আমার সৎ বাবা নেশা করে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক ক্ষতি হলে সে বিভিন্ন ব্যাংক হতে নেওয়া কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছিল না। আমার মা কিস্তির টাকা চাইলে সে প্রায়ই তাকে মারধর করতো। এ নিয়ে আমার মা টঙ্গীবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে  টাকা দেওয়ার কথা বলে নিয়ে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করলে আমরা তাকে ঢাকা নেওয়ার পথে সে মারা যায়। তিনি আরো বলেন, আমি এ ঘটনায় আমার সৎ বাবার বিরুদ্ধে টঙ্গিবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি আমার সৎ বাবার ফাঁসি চাই।এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ি থানার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুহিদূল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘাতককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।