ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি চীনের অর্থনীতিকে কি দুর্বল করবে?


আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই প্রত্যাবর্তন অন্য যে কোনো অঞ্চলের মতো দক্ষিণ এশিয়ার মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত নানাবিধ দ্বন্দ্বের সম্মুখীন হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। একটি আশঙ্কা সবার মধ্যে কাজ করছে যে- ডোনাল্ড ট্রাম্প পূর্ণাঙ্গ শুল্কযুদ্ধ করবেন কি না। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) এক সংবাদে বলা হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ শুল্কযুদ্ধের সম্ভাবনা আছে, কিন্তু বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত নয়। শুল্কযুদ্ধ বলতে এফটি বুঝিয়েছে, বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি করা সব পণ্যে অন্তত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। চীন ছাড়া কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। এই দুই দেশ থেকে মোট আমদানির ৩০ শতাংশ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। তারাও নানাভাবে ট্রাম্পের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে। কিন্তু অতিরিক্ত শুল্ক প্রাপ্তির কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই শুল্ক লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে ধারণা করছে এফটি। ফলে বছরের শেষ নাগাদ এসব শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে, এমনটা মনে করেন না ট্রাম্প। ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়, দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে প্রবেশের আগেই শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় তৈরি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নভেম্বরের শেষ দিকে ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট শুল্কচাপের ঘোষণাও দিয়েছেন। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক এমন সময়ে খারাপ হতে চলেছে যখন চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাও দুর্বল বলে বিবেচিত হচ্ছে। ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস (এনবিএস) এর তথ্যমতে, চীনের শিল্প উৎপাদন নভেম্বরে ৫.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৫.৩ শতাংশ। তবে খুচরা বিক্রি গত মাসে মাত্র ৩.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অক্টোবরে ৪.৮ শতাংশ ছিল। চীনা অর্থনীতির ক্যাপিটাল ইকোনমিক্স প্রধান জুলিয়ান ইভান্স-প্রিচার্ড বলেছেন, সাম্প্রতিক নীতির কারণে চীনের অর্থনীতি গত মাসে মন্থর হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে আমরা মনে করি যে অর্থনীতি একবার ঊর্ধ্বমুখী হলে স্বল্পকালীন সমস্যা এটিকে আটকে রাখতে পারবে না। কারণ ট্রাম্প তার কিছু শুল্ক হুমকি কার্যকর করা শুরু করলে রপ্তানি চাহিদায় এর খুব একটা প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এনবিএসের মুখপাত্র ফু লিংঝুই একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন, যে ভোক্তা চাহিদা পরিবর্তিত হয়নি এবং ২০২৫ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অব্যাহত রাখার জন্য আরও প্রচেষ্টার অব্যাহত রাখা হবে। তবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে নিজেদের নীতি বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চীন সব সময় নিজস্ব বিষয়ের ওপর মনোযোগ দেবে এবং তার সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ দৃঢ়ভাবে রক্ষা করবে। একই সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে অতি উদার থাকার রীতি পরিবর্তিত হবে না।’