নওগাঁয় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন


নওগাঁয় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন
১৫ বছর আগে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামিদের ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মেহেদি হাসান তালুকদার এ আদেশ দেন। দণ্ডিতরা হলেন- মান্দা উপজেলার চকদেবী রামপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৮) ও বালুবাজার গ্রামের মোরশেদ হোসেন। মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামি সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়। মামলার বিবরণী সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরীর সঙ্গে রবিউলের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রবিউল ওই কিশোরীকে উপজেলার বালুবাজার গ্রামে মোরশেদ হোসেনের বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় রবিউল তার মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। ভুক্তভোগী কিশোরী পরবর্তীতে রবিউলকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও তাতে তিনি রাজি হননি। পরে রবিউল বিয়ে না করায় ওই কিশোরীর পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়। কিশোরীর বিয়ে হওয়ার পর রবিউল তার স্বামীকে ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও পাঠান। এ কারণে ওই কিশোরীর স্বামী তাকে তালাক দেন। ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে পুনরায় বিয়ে দিলে দ্বিতীয় স্বামীকেও রবিউল ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও পাঠান। এ ঘটনার পর ওই কিশোরীর দ্বিতীয় স্বামী তাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ওই কিশোরী নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগ দায়ের করেন। এতে রবিউল, মোরশেদ ও সুলতানা পারভীনকে আসামি করেন। আদালত ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও উভয়পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলার রায় দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ কৌঁসুলি রেজাউল ইসলাম এবং আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হারুন-অর-রশীদ ও আতিয়ার রহমান।