ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাজছে ডাকসু নির্বাচনের দামামা। ছেলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীরা সমান তালে লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে ৫ জনসহ প্রায় ৬০ জন নারী লড়াই করছেন। তারা বিজয়ী হলে নারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন। তবে প্রার্থিতা ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুলিংসহ নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন নারী শিক্ষার্থীরা। এদিকে দূরত্ব বিবেচনায় ভোটকেন্দ্র স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন ডাকসুর ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। অন্যদিকে প্রচারণামূলক বিলবোর্ড-ব্যানার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সরব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা। মনোনয়নপত্র জমা ও প্যানেল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচনি উত্তেজনা পরিবেশ বিরাজ করছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র প্যানেল ঘোষণা করছে। নারী প্রার্থীদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৫ জন, জিএস পদে ১ জন, এজিএস পদে ৪ জন লড়াই করছেন। তবে প্রার্থিতা ঘোষণার পর নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন নারী প্রার্থীরা। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছেন। নির্বাচনে জেতার বিষয়ে তারা দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এদিকে সরেজমিন দেখা গেছে, শুক্রবার ডাকসু নির্বাচন ঘিরে সকাল থেকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সকালে উপস্থিতির হার কম ছিল। তবে জুমার নামাজের পর প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। নামাজ শেষে প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে দেখা গেছে। প্রার্থীদের দেখে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ ছবি তুলছেন আবার কেউ পরিচয় হচ্ছেন। আবার বিকালের দিকে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীদের সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের সামনে নানা অঙ্গীকার তুলে ধরতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল সারাদিন।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, আমি বলব যে ঢাকা ইউনিভার্সিটিকে আমি একটা একাডেমিক ক্যাম্পাসে রূপান্তরিত করার দিকে নিয়ে যাব। হয়তো প্রথমদিকে এটা সম্ভব হবে না কিন্তু যদি আমি এখানে বিজয়ী হই অবশ্যই এখানকার কারিকুলাম এবং এখানকার ডিপার্টমেন্টের যে পড়াশোনার স্টাইল আমাদের শিক্ষক মূল্যায়ন থেকে শুরু করে আমাদের শিক্ষার্থীরা আসলে যেভাবে ডিমোটিভেটেড হয়ে পড়ে ডিপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে। সেই জায়গাগুলোকে নিয়ে আমার কাজ করার বেশি ইচ্ছা। আর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা বড় সমস্যা হচ্ছে আবাসন। আর পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব-এই দুটি বিষয়কে আমার পক্ষ থেকে আমি সমাধান করে আনতে চাই। প্রত্যেকটা সমস্যাই আসলে ইন্টারকানেক্টিং কিন্তু যদি একাডেমিক বিষয়টাকে আমি প্রাধান্য দিই তাহলেই কিন্তু অন্য সমস্যাগুলো আমরা ইজিলি সমাধান করে আনতে পারব।
উমামা ফাতেমা বলেন, নারী হিসাবে অবশ্যই এখানে একটা হ্যারেসমেন্ট চিন্তা আছে। অনলাইনে নানান ধরনের কথাবার্তা এগুলো তো আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা মনে করি, যেহেতু ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমাদের এখানে প্যারালাল হিসাবে ফাইট দিতে হচ্ছে, তাই ছাত্র সংগঠনগুলোর এক ধরনের সাংগঠনিক অবস্থা বিভিন্ন হলের মধ্যে আছে, তাদের বিভিন্ন জায়গায় কাজ গোছানো আছে। আমরা যারা স্বতন্ত্র আছি তাদের অনেক বেশি কিন্তু অ্যাগেজ করতে হচ্ছে নিজেদের কমিউনিটির মতো সে জায়গায় আমাদের পরিশ্রমটাও বেশি। তবে আমরা মনে করি, যেহেতু আমরা অনেক বেশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পারছি, অনেক বেশি জেনারেল অ্যাপ্রোচে যেতে পারছি, সেটাও আমাদের একটা অ্যাডভান্টেজ।
‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ প্যানেল থেকে ডাকসু নির্বাচনের একমাত্র জিএস প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমাকে কেন ভোট দেবে, আমি বলব যে একজন প্রার্থীর পার্সোনাল বিষয়গুলো একটা বড় ফ্যাক্টর। সে কতটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলছে। বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল তার অ্যাক্টিভিটিস আছে কিনা সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করেই ভোট দেবে। এখন আমি যদি বলি আমি যখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে আসছি তখন থেকেই আমার একটা লড়াই সংগ্রাম ছিল। যেমন ঢাকা ইউনিভার্সিটিকে সাত কলেজ থেকে পৃথকীকরণ আন্দোলন। তারপর জুলাই আন্দোলনে তো আমি প্রথম সারিতে ছিলাম। যদিও সমন্বয় পদ নেইনি তখন। কিন্তু আমার একদম ১৬ তারিখের আগ পর্যন্ত আন্দোলনের সঙ্গে একদম ডিরেক্ট সম্পৃক্ততা ছিল। এরপরও অনলাইনে যে লেখালেখিতে বিভিন্নরকম পোস্টের মাধ্যমে আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি।
কী ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ট্যাগিং বুলিং এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এতটুকুই আমি চ্যালেঞ্জের শিকার হচ্ছি এখন পর্যন্ত। আশা করি, নির্বাচনের আগে আমি আমার জায়গা থেকে ব্যালেন্স রেখে কথা বলে আমি সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাকি কাজ পরিচালনা করব।
নির্বাচনে জিতলে কী ধরনের কাজ করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে রয়েছে নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরি করা। সেকেন্ড রয়েছে আবাসন সংকট দূর করা। তো আমাদের যে প্যানেল তার একটা স্লোগান রয়েছে ‘অন বেড অন টেবিল’। আর ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থীবে কীভাবে নিরাপদ নিশ্চিত করা যায় সেটার লক্ষ্যে আমি কাজ করব।
সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের এজিএস প্রার্থী ফাতেমা শারমিন এ্যানি বলেন, নারী হিসাবে অন্য কারও তুলনায় নিজেকে অযোগ্য মনে করছি না কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৯ সাল থেকে আমার পলিটিক্যাল একটা জার্নি আছে ২৪ পর্যন্ত। ২৪-পরবর্তী সময়ে আমি আমার যে রাজনৈতিক ধারাবহিকতা এটা আমি বজায় রেখেছি। আমি মনে করছি না যে, অন্য যারা ক্যান্ডিডেট আছে তারা আমার থেকে অযোগ্য। কিন্তু তাদের সঙ্গে ফাইট দেওয়ার মতো ক্যাপাবিলিটি আমার আছে। আমি কিন্তু নারী মানে প্রতিনিধি হিসাবে এখানে দেখছি না। আমি মনে করছি যদি আমি নির্বাচিত হই তাহলে যে প্রতিনিধিরা ছিল তারা যে প্রতিশ্রুতি নিয়েছে বাস্তবায়নে এটা কিন্তু আমি কম বাস্তবায়ন করতে পারব না। উপরন্তু আমি কিন্তু নারী হলে আমার এক্সেস আছে। আমি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে হলে থেকেছি। নারীদের প্রবলেমগুলো আমার থেকে ভালো কেউ জানবে না। একই সঙ্গে আমি গণরুমের বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে লড়াই করেছি তো সেখানে ছেলেদের হলের যেগুলো সমস্যা রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আমি খুব ভালোভাবে অবগত। আমাদের এই দুইটা জায়গা একই সঙ্গে সমানভাবে ব্যালেন্স করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, এই জায়গাটায় আমি বলব যে, এখানে আমি নারী এই কারণে আমাকে কিছু অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে।
প্রচারণামূলক বিলবোর্ড-ব্যানার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে টানানো প্রচারণামূলক বিলবোর্ড-ব্যানার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার ডাকসুর চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের সই করা এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেসব প্রচারণামূলক বিলবোর্ড/ব্যানার টানানো রয়েছে কিংবা এরই মধ্যে টানানো হয়েছে, সেগুলো অনতিবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রচারণা শুরুর নির্ধারিত দিন থেকে আচরণবিধি অনুযায়ী প্রচারকাজ চালানো যাবে। এর আগে, অন্য একটি বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন জানায়, ২২ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রচারণা চালানো আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়বে।
শুক্রবার বিকালে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় প্যানেলটির ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট প্রদানের সুবিধার্থে আমার ভোটকেন্দ্রগুলো পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল ও কুয়েত মৈত্রী হলের ভোটকেন্দ্রে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সামসুন্নাহার হলের ভোটকেন্দ্র পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্থাপন করা আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের হলগুলোর পাশাপাশি ছেলেদের হলের ক্ষেত্রেও ভোটকেন্দ্রের দূরত্ব রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে হলপাড়ার হলগুলোকে বিজনেস ফ্যাকাল্টিতে ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানাচ্ছি। এতে বেশি মাত্রায় ভোট কাস্টিং হবে।’
উমামা ফাতেমা বলেন, ‘২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে লক্ষ্য করেছি, ডাকসু নিয়ে বিভিন্ন তথ্যগুলো প্রশাসন সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করে না। হল কার্ড রিনিউ না করলে কেউ ভোট করতে পারে না?। তখন শিক্ষার্থীদের ভোট প্রদানের সদিচ্ছা থাকলেও তারা ভোট দিতে পারে না। তাই সেন্ট্রাল আইডি কার্ড দিয়ে ভোট নেওয়ার আহ্বান করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ভোটারদের ভোগান্তি কমানো।’
মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রার্থী নুসরাত জাহান নিসু বলেন, ‘কুয়েত মৈত্রী হল থেকে শুরু করে অন্যান্য হলের ক্ষেত্রে হলের কাছাকাছি ভোটকেন্দ্র নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তা ছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসনকে নতুন করে ভাবতে হবে। বাস ট্রিপগুলো বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নারীরা সাইবার বুলিংয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা দেখছি না। এজন্য প্রশাসনকে অতি দ্রুত সাইবার সেল গঠন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এদিন মধুর ক্যান্টিনে ডাকসু নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, শিবিরের প্যানেল বিজয়ী হলে নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটের সমাধান হবে। আমরা বিজয়ী হলে নারীদের আবাসন নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছি। এসবের সমাধান নিয়েই আমাদের ইশতেহার সাজানো হবে।
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা নির্বাচিত হলে ‘লাঞ্চের পরে আসুন’ টাইপের কথাবার্তা চলবে না। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংকে আধুনিকায়ন করা হবে। এছাড়াও, সেখানে শিক্ষার্থীদের পার্ট টাইম কাজের ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হলে শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। ছাত্রীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু এতে তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। তারা ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল ভবন বানাচ্ছে, আর এদিকে শিক্ষার্থীদের আজিমপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদে কালচারাল সেন্টার স্থাপন, হলের অডিটোরিয়াম, রিডিংরুম ও মাঠ সংস্কার, অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, এক হলের ছাত্রীদের অন্য হলে প্রবেশের এক্সেস, হলের ভেতরে গার্ডিয়ান লাউঞ্জ স্থাপন, ডাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্তি, বাস সিন্ডিকেট নির্মূল, ডে-কেয়ার, চিলড্রেন কেয়ার স্থাপনসহ নানা বিষয় শিবিরের ইশতেহারে থাকবে বলে জানান তিনি। এ সময় শিবিরের জিএস পদপ্রার্থী ও ঢাবি শাখার সভাপতি এসএম ফরহাদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক মু. সাজ্জাদ হোসাইন খাঁনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক ও ডাকসু নির্বাচনের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ডাকসু নির্বাচনে নারী শিক্ষার্থীদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে একটা গোষ্ঠী অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাবির ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও কুয়েত মৈত্রী হলের নারী শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্র হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবকে ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু ওই দুটি হলের পাশেই সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট রয়েছে। সেখানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন হলে ওই দুই হলের শিক্ষার্থীরা সহজে ভোট দিতে পারতেন। মূলত তাদের ভোট থেকে দূরে রাখার জন্যই এই চক্রান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকবে শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা। আমাদের স্লোগান হবে ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান সিট। এছাড়াও গণরুম-গেস্টরুম প্রথা ক্যাম্পাস থেকে চিরতরে নির্মূল করারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
দলটির জিএস প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমাদের অন্যতম ইশতেহার হচ্ছে, আবাসিক হলগুলোতে ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া। ঢাবিতে স্টারলিংক সেবা চালু করা হবে এবং হিসাব করে দেখা গেছে, এর জন্য শিক্ষার্থীর মাথাপিছু মাত্র ৪০ টাকা খরচ হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা স্পনসরশিপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা সম্ভব।
