পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিমান হামলা, নিহত অন্তত ৩০ বেসামরিক
অনলাইন নিউজ ডেক্স
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের তিরাহ উপত্যকায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির বিমানবাহিনী।
হামলায় অন্তত ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, সোমবার ভোররাতে সংঘটিত এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়, হামলায় চারটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিরোধী দলের সংসদ সদস্য ইকবাল আফ্রিদি অভিযোগ করেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাতের আঁধারে এ হামলা চালায়। তবে সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।
এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও চারজন শিশু রয়েছে। তিনি বলেন, তিরাহ ভ্যালি পাকিস্তান-আফগান সীমান্তের কাছে অবস্থিত, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সক্রিয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
খাইবার পখতুনখোয়া পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত এ প্রদেশে ৬০৫টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, যেখানে অন্তত ১৩৮ বেসামরিক ও ৭৯ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। শুধু আগস্ট মাসেই ১২৯টি হামলা ঘটে।
বিমান হামলার পর সোমবার বিকেলে পাশের একটি শহরে প্রায় দুই হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
অন্যদিকে ভারতের গণমাধ্যমগুলো দাবি করেছে, খাইবার পখতুনখোয়ার তিরাহ ভ্যালির মাত্রে দারা গ্রামে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো টানা আটটি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে।
এর আগে রোববার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ডেরা ইসমাইল খান জেলায় একটি গোয়েন্দা অভিযানে সাতজন টিটিপি সন্ত্রাসী নিহতের দাবি করেছিল। ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বরও অন্তত ৩১ জন টিটিপি সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে টিটিপির হামলার মাত্রা বেড়েছে। সন্ত্রাসীরা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আস্তানা বানায় এবং বেসামরিক মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেসামরিক প্রাণহানির আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সূত্র : এনডিটিভি, এএফপি
