যৌনস্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে অনেকেই সংকোচবোধ করেন। সেই কারণে অনেক রোগ চাপা থেকে যায়। এমনই একটি রোগ রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন।
এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে পুরুষের বীর্যপাতের সময় বীর্য লিঙ্গ দিয়ে বের হওয়ার পরিবর্তে মূত্রাশয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে, বীর্যপাতের সময় মূত্রাশয়ের স্ফিংটার বন্ধ হয়ে যায়, যাতে বীর্য শুধুমাত্র মূত্রনালী দিয়ে বাইরে বের হতে পারে। রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনে এই স্ফিংটার সঠিকভাবে বন্ধ হয় না, ফলে বীর্য মূত্রাশয়ে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। একে অনেক সময় “শুষ্ক বীর্যপাত”ও বলা হয়, কারণ এই রোগ থাকলে বীর্যপাতের সময় খুব সামান্য বা একেবারেই বীর্য বের হয় না।
উপসর্গ
রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের প্রধান উপসর্গ বীর্যপাতের সময় খুব সামান্য বা একেবারেই বীর্য বের না হওয়া। বীর্যপাতের পর প্রস্রাব ঘোলাটে হওয়াও এই রোগের লক্ষণ। এর কারণ হল বীর্য মূত্রাশয়ে প্রবেশ করে প্রস্রাবের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে প্রস্রাব ঘোলাটে দেখায়। অনেক সময় এই রোগে পুরুষত্বহীনতা না বন্ধ্যত্ব দেখা দিতে পারে। যেহেতু বীর্য লিঙ্গ দিয়ে বের হতে পারে না, তাই এটি প্রাকৃতিক গর্ভধারণ পদ্ধতিতে বাধা সৃষ্টি করে।
রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্নায়ুর ক্ষতি। ডায়াবেটিস, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, স্পাইনাল কর্ডে আঘাত বা অন্য কোনও স্নায়বিক রোগের কারণে মূত্রাশয়ের স্ফিংটারের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এটি হতে পারে। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, প্রোস্টেট বৃদ্ধি বা মানসিক অবসাদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত কিছু ওষুধ মূত্রাশয়ের স্ফিংটারকে শিথিল করতে পারে। ফলে এই ঘটনা ঘটে।
সমাধানের উপায়
রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের চিকিৎসা সাধারণত তখনই প্রয়োজন হয় যখন এটি বন্ধ্যত্বের কারণ হয় বা রোগী এই অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হল বীর্যকে মূত্রাশয়ে প্রবেশ করা থেকে বাধা দেওয়া বা মূত্রাশয় থেকে বীর্য পুনরুদ্ধার করে প্রজনন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করা।
ইমিপ্রামিন, সিউডোএফেড্রিন, এফেড্রিন বা মিডোড্রিন ইত্যাদি ওষুধ মূত্রাশয়ের স্ফিংটারের পেশিগুলিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে, যাতে বীর্য স্বাভাবিক পথে বের হয়। তবে, এই ওষুধগুলি একেবারেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।