প্যাভিলিয়ন হারাতে পারেন স্বৈরাচারী সরকারের দোসর প্রকাশকরা
সাহিত্য ডেক্স
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ শুরু হচ্ছে ১ ফেব্রুয়ারি। ইতোমধ্যে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন থাকবে কি থাকবে না সে নিয়ে নানা আলোচনা তর্ক-বিতর্কের পর্ব সমাপ্ত হয়েছে। আসছে বইমেলায় অন্যান্যবারের মতোই প্যাভিলিয়ন থাকছে। তবে আওয়ামী লীগের ‘স্বৈরশাসন’ সময়ের যেসব প্রকাশক সরকারের দোসর হিসাবে কাজ করেছেন তাদের প্রকাশনা সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন দেওয়া না-ও হতে পারে। এ বিষয়ে বুধবার ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পরিচালনা কমিটি’র এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিষয়টি আলোচিত হয় এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আজ বৃহস্পতিবারও মেলা কমিটি আলোচনায় বসবে।
জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরই এবারের বইমেলায় যেসব প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করবে তাদের নাম তালিকা আকারে প্রকাশ করা হবে। বিকালে এই তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
বুধবার অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে বাছাইকরণের জন্য মেলা পরিচালনা কমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, নির্বাহী পরিষদের সচিব সাজ্জাদ শরীফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, কবি ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও কবি মোহন রায়হান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম, প্রকাশনা সংস্থা সূচীপত্র প্রকাশনীর প্রকাশক সাঈদ বারী, ঐতিহ্য প্রকাশনীর প্রকাশক আরিফুর রহমান নাঈম, ইতি প্রকাশনের প্রকাশক মো. জহির দীপ্তি, আদর্শ প্রকাশনীর প্রকাশক মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
সভার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন মহল থেকে বেশ কিছু প্রকাশনীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসাবে কাজ করার অভিযোগ এসেছে। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা যাদের সে অর্থে অনেক মানসম্মত বই নেই, প্রত্যেক মেলায় যারা নতুন বই প্রকাশ করে না, যাদের প্যাভিলিয়নের প্রয়োজন নেই কিন্তু প্যাভিলিয়ন দেওয়া হয়েছে তাদেরকে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া থেকে বিরত থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজকে নেওয়া হবে বৃহস্পতিবার পরিচালনা কমিটির মিটিংয়ের পর।
জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় এই মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। তথ্য অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, গত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসাবে চিহ্নিত হওয়া প্রকাশকদের মধ্যে যারা প্যাভিলিয়ন নিয়ে এতদিন মেলায় অংশ নিয়েছেন তাদের কাউকে বইমেলায় অংশগ্রহণ না করতে দেওয়ার বিষয়ে কমিটি কেনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। নানা বিবেচনায় প্রকাশনাগুলোকে যার যার যোগ্যতা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী স্টল বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে প্রকাশক প্রতিনিধিরাও মত দিয়েছেন। এই বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে।
আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে নানা আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার জন্য গুরুত্বহীন, মানহীন এবং গতানুগতিক অনেক বই প্রকাশের অভিযোগ আছে আরও বেশ কিছু প্রকাশনার বিরুদ্ধে।
এদিকে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী লেখক সমাজ নামের একটি সংগঠন অমর একুশে বইমেলায় গত সরকারের দোসর হিসাবে যেসব প্রকাশক কাজ করেছে তাদের মেলায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না বলে দাবি তুলেছে। সংগঠনটি এই দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি ঘেরাও করবে বলেও জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, যেসব প্রকাশনা সংস্থাকে ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসাবে চিহ্নত করে প্যাভিলিয়ন না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে তবে মেলায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার বিষয়ে দ্বিমত নেই। তবে বৈষম্যবিরোধী লেখক সমাজের দাবির কারণে তা কতটুকু রাখা সম্ভব সেটি নিয়েও একধরনের সংশয় আছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।