ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, নিহত ১
অনলাইন নিউজ ডেক্স

নরসিংদীর বেলাবো উপজেলায় ফুটবল খেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশের রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়ে এক তরুণ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা। এছাড়াও এ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বেলাব ইউনিয়নের মাটিয়ালপাড়া ও চর বেলাব গ্রামের মধ্যবর্তী সেতু এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।নিহত ওই তরুণের নাম মো. সাইফুল মিয়া (২৬)। তিনি উপজেলার বেলাব ইউনিয়নের চর বেলাব গ্রামের মো. জীবন মিয়ার ছেলে।স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বুধবার বিকেলে মাটিয়ালপাড়া ও চর বেলাব গ্রামের তরুণদের দুটি দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলার মাঠে প্রতিপক্ষের আঘাতে মাটিয়ালপাড়ার এক তরুণ আহত হন। এ নিয়ে মাঠের মধ্যেই দুইপক্ষ উত্তেজিত হয়ে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন।ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, নিহত ১ খেলা শেষে ফেরার পথে সন্ধ্যার দিকে চর বেলাব এলাকার এক তরুণের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয় অপর পক্ষের কয়েকজন খেলোয়াড় বহনকারী একটি বিভাটেক রিকশাকে। ওই সময়ও তারা তর্কে জড়ান। পরবর্তীতে রাতে চর বেলাব গ্রামের কয়েকজন এ বিষয়ে কথা বলতে মাটিয়ালপাড়ায় গেলে তাদের মারধর করা হয়।এলাকায় ফিরে ঘটনা জানানো হলে চর বেলাব গ্রামের শতশত গ্রামবাসী আজ সকালে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাটিয়ালপাড়ায় রওনা দেন। এ খবর পেয়ে প্রতিপক্ষেরও শত শত ব্যক্তি লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে যান। সেতুসংলগ্ন স্থানে দুইপক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুই পক্ষের ছোড়া ইটপাটকেলে কয়েকজন আহত হন।পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল ও শর্টগান থেকে গুলি ছোঁড়ে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ কয়েক জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাইফুল মারা যান। আহত ব্যক্তিরা বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।জানতে চাইলে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মনজুর-ই-মুশফিকা ফেরদৌস জানান, সাইফুলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার চোখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রাবার বুলেটের আঘাত ছিল। এছাড়াও একই ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ আহত অন্তত ১০ জনকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি।বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছি।ওসি আরও জানান, আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, আপনারা সংঘর্ষে জড়াবেন না, অভিযোগ নিয়ে থানায় আসুন। কিন্তু এই আহ্বানে তারা সাড়া না দিয়ে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ও ইটপাটকেল ছুড়ে অনেক ব্যক্তিকে আহত করেছেন। এছাড়াও আমিসহ ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
