বাইরের কোনো শক্তি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘বাইরের কোনো শক্তি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না বরং তাদের ব্যবহার করা হবে।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপির উৎফুল্ল মেজাজ প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, তারা মনে করে- অন্য কোথাও থেকে কেউ এসে তাদের আনন্দ-উল্লাস করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউই এটি করবে না (তাদের ক্ষমতায় আনতে) এবং কখনো কেউ তা করে না বরং ব্যবহার করে। এটি (তাদের) ব্যবহার করবে, কিন্তু তাদের ক্ষমতা দেবে না।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষা করেছে এবং দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করেছে। বুধবার ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘দেশি-বিদেশি চাপ যতই আসুক না কেন, বাঙালিরা কখনোই সেই চাপের কাছে মাথা নত করবে না।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে তারা (বিএনপি) আন্দোলন-সংগ্রাম করবে। এক দিক থেকে এটি ভালো, যে তারা যদি অগ্নিসংযোগ সহিংসতা অবলম্বন করে এবং মানুষকে হত্যা করে, তবে তারা মার্কিন ভিসা পাবে না।’ তিনি বলেন, যাদের কথায় তারা (বিএনপি) নাচে, তারা তাদের (বিএনপি) ধ্বংস করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। এ নিয়ে আমাদের ভাবারও কিছু নেই।’ তিনি (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে) আগেই বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে বলে দিয়েছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারা কত আন্দোলন করতে পারে, করতে দিন। আমরা কিছু বলব না।’ তবে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সবসময় তাদের চোখ খোলা এবং ক্যামেরা চালু রাখতে বলেছেন, যাতে তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসংযোগ সহিংসতা, মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং মানুষ হত্যার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) উসকানি দিয়ে দেশের বাইরে ছবি পাঠাতে পারে। তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা বলেন, তারা দেশের জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরাই এদেশে গণতন্ত্র এনেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা থাকায়, বাংলাদেশে আজ অগ্রগতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র তিনিই ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন সাধারণ নির্বাচন এবং ২০০৬ সালে একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের জনগণকে মনে রাখতে হবে যে, খালেদা জিয়া ভোট জালিয়াতির অভিযোগে দু’বার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগ কখনো পরাজয় বরণ করেনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিবারই জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় এসেছে এবং কখনো ক্ষমতা দখল করেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী ব্যক্তির পকেট থেকে গঠিত দলের নেতারা এখন গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ভোট কারচুপির কথা বলেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শাহজাহান খান ও সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা উত্তর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।