‘বিষাদময় রক্তাক্ত ঈদ, আমরা সব হারিয়েছি’


‘বিষাদময় রক্তাক্ত ঈদ, আমরা সব হারিয়েছি’
‘এটি শোকের ঈদ বিষাদময় রক্তাক্ত ঈদ, আমরা সব হারিয়েছি’- গাজার মধ্যাঞ্চলীয় শহর দেইর আল-বালাহতে খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায়ের পর এভাবেই বলছিলেন গাজার বাসিন্দা আদেল আল-শায়ের।তার ভাষায়, ইসরাইলি হামলায় ইতোমধ্যেই পরিবারের ২০ জন সদস্যকে হারিয়েছি। যাদের মধ্যে মাত্র কয়েকদিন আগেই নিহত হয়েছে চারজন শিশু ভাতিজা। বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।কান্নারত আল-শায়ের আরও বললেন, ‘আমরা আমাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছি, আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি, আমাদের জীবন ও ভবিষ্যৎ হারিয়েছি। আমরা আমাদের শিক্ষার্থী, স্কুল এবং প্রতিষ্ঠানও হারিয়েছি। আমরা সব হারিয়েছি।’গাজায় রোববার ঈদের দিনেও থেমে থাকেনি বর্বর ইসরাইলি হামলা। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন এই ঈদুল ফিতর। কিন্তু গাজায় এমন একটা দিনেও কেবল মৃত্যুর ছায়া, বাস্তুচ্যুতি, অভুক্ত শিশু আর অবরোধের নিষ্ঠুরতা।সাঈদ আল-কুর্দ নামের এক মুসল্লি বলেন, আমরা আল্লাহর ইবাদত করতে বের হই, যেন অন্তত আমাদের শিশুদের জন্য ঈদের আনন্দ বজায় থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই ঈদে কোনো আনন্দ নেই। এখানে শুধু দুঃখ, ক্ষুধা আর শোক।গাজার আকাশে যুদ্ধবিমান গর্জন করছে, চারদিকে ধ্বংসস্তূপ আর কান্নার সুর। এ বছর গাজার ঈদ মানেই হারানোর ঈদ, শোকের ঈদ।যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অনাহারক্লিষ্ট গাজাবাসী পুরো মাস খেয়ে না খেয়ে রোজা পালনের পর একটুখানি ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতেও বাধ সাধলো রক্তপিপাসু বর্বর ইসরাইল।যাতে আরও একটি রক্তাক্ত বিষাদময় ঈদের দিন কাটলো ফিলিস্তিনিদের।রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও গাজাবাসীর ওপর বোমা হামলা চালানো দখলদার ইসরাইল। গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ এ হামলায় নিহতের সংখ্যা ২০-এ পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন শিশু রয়েছে।রোববার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য দিয়েছে আল-জাজিরা।সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আল-মাওয়াসি এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত তিন কন্যাশিশুর হৃদয়বিদারক দৃশ্য ধরা পড়েছে ভিডিও ফুটেজে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, শিশুগুলো রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সম্ভবত ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য নতুন পোশাক পরেছিল তারা।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ ইসরাইল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে তীব্র বিমান হামলা শুরু করে। এর পর থেকে অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত ৯২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।