বেতন বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ-কান্না শ্রমিকদের


বেতন বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ-কান্না শ্রমিকদের
ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাচ্ছেন না টিএনজেড গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল শনিবার শ্রম ভবনে বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি। শ্রমিকরা ঈদের আগে গ্রামের বাড়ি যেতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।তোপের মুখে বেতন-বোনাসের জন্য ঈদের আগে দুই কোটির জায়গায় এক কোটি টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।। তবে তা মানেননি সাধারণ শ্রমিকরা। তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন।গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় শ্রম ভবনের সামনে শ্রম সচিব ওই ঘোষণা দেন। এর আগে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন মালিকপক্ষ যন্ত্র বিক্রি করে ২ কোটি টাকা দেবে। বৈঠকের পর প্রায় আধা ঘণ্টা শ্রম ভবনে অবরুদ্ধ থাকেন। এরপর শ্রমিক নেতাদের আশ্বাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় নিচে নামেন। এ সময় গাড়িতে উঠতে চাইলে শ্রমিকরা তাঁকে ঘেরাও করে রাখেন। পরে সেখানে দাঁড়িয়ে তিন কোটি টাকা পরিশোধের কথা জানান। তাও মানেননি সাধারণ শ্রমিকরা। এ সময় সচিবকে গাড়িতে উঠিয়ে দেন শ্রমিক নেতা ও পুলিশ সদস্যরা।ঘোষণায় শ্রম সচিব মে দিবসের আগে বকেয়াসহ সব সমস্যা সমাধান করতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। ওই সময় পর্যন্ত টিএনজেড গ্রুপের পরিচালকসহ তিন কর্মকর্তা থাকবেন শ্রম অধিদপ্তরের হেফাজতে।পরে অ্যাপারেল প্লাস ইকোর শ্রমিক প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের আগে সব টাকা পরিশোধ করতে হবে। কারণ আমাদের ১৭ কোটি টাকা পাওনার বিপরীতে তিন কোটি টাকা নিলেও শ্রমিকদের কোনো কাজে আসবে না। কারণ, তিন মাস বেতন না পাওয়ায় অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে দেনায় জর্জরিত। তাই ঈদের আগে অন্তত একটি বেতন ও একটি বোনাস না দিলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’পুরো বকেয়া পরিশোধ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। ঈদের দিনেও শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান করার ঘোষণা দেন শ্রমিক প্রতিনিধিরা।শতভাগ কারখানায় বেতন-বোনাস প্রায় শতভাগ কারখানায় গতকাল বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। তবে ৯টি কারখানা শেষ কর্মদিবসেও বোনাস পরিশোধ করতে পারেনি। আর আটটি কারখানা ফেব্রুয়ারির বেতন দিতে পারেনি। এসব তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।ঢাকা ও চট্টগ্রাম মিলে বিজিএমইএর সক্রিয় কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ১০৭টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ২ হাজার ৯৮টি কারখানা বোনাস দিয়েছে। মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে ৯৯ শতাংশ কারখানা। কোনো কারখানায় পুরো মাসের বেতন, কোনো কারখানায় আধা মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে।ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গাজীপুর সড়ক অবরোধ ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গতকাল সকালে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানার বাইমাইল এলাকার স্ট্যান্ডার্ড ইস্টিস ওভেন (এফএফ টাওয়ার) কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করেছেন।গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২-এর পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, ওই কারখানার ১০১ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে মালিকপক্ষ। এ খবর পাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে থানা ও শিল্প পুলিশ এবং সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।