ভাঙ্গায় চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ
অনলাইন নিউজ ডেক্স
সাবেক পিআইও মানস বসুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগীর অভিযোগ
মো. আনিছুর রহমান ফরিদপুরে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ লক্ষা টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে সাবেক ভাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানুস বসুর বিরুদ্ধে। জানাযায়, ভাঙ্গার হোগলা ডাঙ্গী সদরদী এলাকার দুই যুবককে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ লক্ষ হাতিয়ে নেন মানস বসু। নির্ধারিত সময় পার হলেও চাকরী পাননি হোগলা ডাঙ্গী এলাকার আছমত আলীর পুত্র মোসলেম উদ্দিন ও কায়েস মুন্সির পুত্র সাব্বির হোসেন লিমন। মোসলেম এবং সাব্বির হোসেন লিমন চাকরী না পাওয়ায়, টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত করেন হোগলা ডাঙ্গী সদরদী এলাকার মৃত আ: রব মুন্সীর পুত্র আলহাজ্ব মোঃ সোবহান মুন্সী। গত ২৮ নভেম্বর সোবহান মুন্সির পক্ষে ফরিদপুর জজ কোর্টের এ্যাডভোকেট এ.ও. এম খালেদ সাবেক ভাঙ্গা ও বর্তমান বোয়ালমারী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানস বসুকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অভিযোগসূত্রে জানাযায়, মানস বসু ভাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (চ.ও.ঙ) হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাধে আলহাজ্ব মোঃ সোবহান মুন্সীর সাথে তার পরিচয় হয়। অফিসে যাতায়াতের সুবাধে মানস বসুর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে সোবহান মুন্সীর। ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে হঠাৎ ঢাকা হেড অফিসে কিছু সংখ্যক অফিস সহকারী পদে লোক নিবে বলে সোবহান মুন্সিকে জানান মানস বসু এবং সোবহান মুন্সিকে বলেন, আপনি ২/১ জন লোকের নাম দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক থাকায় আলোচনার মধ্যে অনেক কথার এক পর্যায় ২ জন ৩০ লক্ষ টাকা আপোষ হয়। সেই মোতাবেক সোবহান মুন্সি তার ভাঙ্গা শাখার অগ্রনী ব্যাংক একাউন্ট থেকে চেকের মাধ্যমে মানস বসু (চ.ও.ঙ) কে ২৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এছাড়াও ঢাকায় যাতায়াতের জন্য নগদ ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মানস বসুকে প্রদান করেন বলেও অভিযোগ সূত্রে জানাযায়। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোবহান মুন্সি বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে চাকরী নিয়োগ দেওয়ার কথা হয়। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাস অতিবাহিত হলেও চাকরীর কোন সমাধান হয় না। মার্চ মাসে ঢাকার খবর ভাল না বেশী টাকায় অন্য লোক নিয়োগ দিয়েছে মানস বসু আমাকে জানান। তিনি বলেন, ভাই চিন্তা করবেন না দ্রুত আপনার টাকা দিয়া দিব। কিন্তু মানস বসুর কথার বাস্তবতার মিল না পেয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (জনাব কুদরত-এ-খোদা) সাহেব-কে ঘটনাটি খুলে বলি। উনি আমার কথা ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে টাকা উনার অফিস সহকারী রুবেল এর স্বাক্ষরিত প্রমান পত্র হাজির করি (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিন দিন পরে তাহার অফিসে আমাকে তলব করে এবং অভিযুক্ত তিন জনকে তার অফিসে ডেকে আমার দেওয়া টাকা ফেরত দিতে হুকুম প্রদান করে। চ.ও.ঙ তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নির্দেশ মোতাবেক তিনটি চেক উনার প্রধান সহকারী শেখ সাদীকে দিয়ে টাকা উল্লেখ করে এক মাসের মধ্যে (সেপ্টেম্বর ২৪) মাসে দিবে স্বীকার করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেপ্টেম্বর ২৪ মাসে সাউথ ইষ্ট ব্যাংকে যোগাযোগ করলে ব্যাংকে ঐ পরিমান টাকা নাই। বারবার ফেরত আসি। তারপর চ.ও.ঙ এর সাথে যোগাযোগ করলে মাঝে মধ্যে ফোন ধরে ভাই ২/১ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আবার সময়,সময় নিয়ে আর ফোন ধরে না। এদিকে অফিস সহকারীদের কাছে গেলে তারা বলেন, বসু স্যার টাকা ম্যানেজ করতে পারলে আপনাকে দিবেন। এই বলে আমাকে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকেন। অবশেষে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে ,আমার টাকাগুলো ফেরত পেতে সরকারে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করি। আমি বিশ্বাস করি প্রশাসন তদন্তপূর্বক আমার টাকাগুলো উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এবিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে মানস বসু বলেন, সাদী(প্রকল্প কর্মকর্তার প্রধান সহকারী শেখ সাদী)’র সাথে সোবহান মুন্সির ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল , সেই সুবাধে সাদির কাছে টাকা পাবে এবং সাদী স্বীকারও করেন টাকার কথা, তারপরেও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তবে সাদী এবং সোবহান মুন্সির টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, সোবহান মুন্সির সাথে সাদী (প্রকল্প কর্মকর্তার প্রধান সহকারী শেখ সাদী)’র কোন ব্যবসা নেই , ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধারে প্রথমে অফিসিয়াল ভাবে শালিসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও মানস বসুকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলো। চলবে...
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।