প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।  নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’   ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন।  মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি।   মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না।   নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে।  মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন।   নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’ ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন। মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি। মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না। নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন। নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

আরও খবর

যুদ্ধ ইউক্রেনে, ভুগছে বিশ্ব


যুদ্ধ ইউক্রেনে, ভুগছে বিশ্ব
বিশ্বের ধনশালী দেশ জাপান ও যুক্তরাজ্যকে কাছাকাছি সময়ে এমন মূল্যস্ম্ফীতির ফেরে পড়তে হয়নি। তবে গেল বছর দু\'দেশের জনগণকেই নিতে হয়েছে চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ম্ফীতির চাপ। চালের গুঁড়ার দাম বেড়ে যাওয়ায় রুটির আকার ছোট হয়ে গেছে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়ায়। জার্মানির মতো শক্তিশালী অর্থনীতির দেশেও লন্ড্রি মালিকের গ্যাসের বিল বেড়েছে পাঁচ গুণ। পাকিস্তান কার্যত দেউলিয়া। আর বাংলাদেশের দেড় দশকের স্থিতিশীল অর্থনীতিতেও হঠাৎ লেগেছে বড় ধাক্কা।মূলত ইউক্রেন যুদ্ধই বিভিন্ন দেশের নানামুখী সংকটের অনুঘটক। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে এর রেশ ধরে বিশ্ব অর্থনীতি হয়ে পড়ে টালমাটাল। সময় যত গড়িয়েছে; অর্থনীতির অভিঘাত ততই গভীর হয়েছে। করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত অর্থনীতি পড়ে আরও গাড্ডায়। এতে অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ সংকটের ঘূর্ণিতে খাচ্ছে ঘুরপাক। বাদ যায়নি ইউরোপের ধনী দেশও। যুদ্ধের সরাসরি কোনো পক্ষ না হলেও এ বছর জার্মানির অর্থনীতি ১৭১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। যুদ্ধের কারণে সার্বিকভাবে গত বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি (১.৬ ট্রিলিয়ন) ডলারের।যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ম্ফীতি বেড়ে বদলে গেছে কোটি কোটি মানুষের জীবনের ছক। যাপিত জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। বেড়েছে বেকারত্ব। যুক্তরাষ্ট্রের লাভজনক শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও অকল্পনীয় হারে কর্মী ছাঁটাই করেছে। যুদ্ধে পাল্টে গেছে বিশ্বায়নের ধারাও। \'নিজে বাঁচো\' নীতিই এখন মূলনীতি। বদলে গেছে ভূ-রাজনীতি। গড়ে উঠছে অলিখিত নতুন রাজনৈতিক ও সামরিক জোট। অস্ত্র প্রতিযোগিতা হয়েছে আরও জোরদার।রাশিয়ার মতো বিশাল শক্তির বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াইয়ে ইউক্রেন অভাবনীয় প্রতিরোধ দেখালেও অব্যাহত হামলায় দেশটি এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ। দেশটির অর্থনীতির ৩০ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। রাশিয়ার ক্ষতিও কম হয়নি। এক সময়ের পরাশক্তি দেশটি এখন কার্যত একঘরে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তার পক্ষে পাঁচটির বেশি ভোট পড়ে না। অর্থনীতিতে ধস না নামলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশটি। রাশিয়ার হাজার হাজার (পশ্চিমাদের মতে দুই লাখ) সেনা হতাহত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে অর্ধেক সংখ্যক ট্যাঙ্ক।বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাসে বলা হয়েছে, যুদ্ধের ধাক্কায় ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসবে। এটা প্রায় তিন দশকের মধ্যে তৃতীয় সর্বনিম্ন। জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের গবেষণা বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২৩ সালে তামাম বিশ্বে উৎপাদন ক্ষতির পরিমাণ আরও ১ ট্রিলিয়ন ডলার বা তার বেশি হতে পারে।জার্মান চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমার্স জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ বছর ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটির আর্থিক ক্ষতি হতে পারে মোট জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশ। জার্মানির শিল্পগুলোকে ২০২১ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে জ্বালানির জন্য প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি অর্থ খরচ করতে হতে পারে। নজিরবিহীন মূল্যস্ম্ফীতি :জাপানে মূল্যস্টম্ফীতি গত বছরের শেষ দিকে ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডিসেম্বরে জাপানের মূল ভোক্তামূল্য এক বছর আগের চেয়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। ব্রিটেনেও মুদ্রাস্টম্ফীতি ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গত বছরের শেষ দিকে। যুদ্ধের কারণে বিশ্বের বৃহত্তম গম আমদানিকারক দেশ তিউনিসিয়া, মরক্কো ও মিসর ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গমে ভর্তুকিসহ আর্থিক সংকট কাটাতে মিসর সরকার সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে।মিসরে জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে উঠছে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে। হালিমা রাবি তাঁদেরই একজন। এই বিধবা তাঁর পাঁচজন স্কুলগামী শিশুর ভরণপোষণ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এখন অবস্থা আরও শোচনীয়। কায়রোর গিজার একটি রাষ্ট্রচালিত হাসপাতালে ক্লিনার হিসেবে চাকরি করা হালিমা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, তাঁর কাছে মাংস আর ডিম এখন বিলাসিতা।পাকিস্তানে সাত দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ম্ফীতি হয়েছে। এটা ৩৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ডলারের বিপরীতে রুপির দাম অর্ধেকের নিচে নেমেছে। তুরস্কে ভূমিকম্পের আগে এক পর্যায়ে মূল্যস্ম্ফীতি ৫৮ শতাংশে পৌঁছেছিল। তবে দেশটির অর্থনীতি ততটা নড়বড়ে হয়নি।নাইজেরিয়া রাশিয়ার গমের অন্যতম শীর্ষ আমদানিকারক। আফ্রিকার দেশটিতে গড় খাদ্যমূল্য গত বছর ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। গমের ঘাটতির মধ্যে কিছু জায়গায় রুটির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। রাজধানী আবুজার অন্তত ৪০ শতাংশ বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানায় এপি। কারণ সেখানে আটার দাম প্রায় ২০০ শতাংশ বেড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার রাস্তার অনেক খাদ্য বিক্রেতা জানান, পণ্যমূল্যের চাপে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া ক্রেতাদের কাছে খাবারের দাম বাড়ালে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এক কেজি চালের গুঁড়া দিয়ে আগে তাঁরা ৮টি রুটি বানালেও এখন বানান ১০টি।ব্যাংকিং জায়ান্ট সিটির গ্লোবাল চিফ ইকোনমিস্ট নাথান শিটস বলেছেন, ভোক্তামূল্য গত বছর ধনী দেশলোতে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। দরিদ্র দেশগুলোতে এই হার ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি গোল্ডম্যান স্যাক্স কমোডিটি সূচকে দেখা যায়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে জ্বালানির দাম ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গ্লোবাল ডিরেক্টর মার্সেলো এস্তেভাও বলেছেন, জ্বালানি আমদানিকারক পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ জ্বালানি সংকটে ভুগছে। কারণ তারা ধনী ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো স্পট কার্গো আমদানির খরচ বহন করতে পারছে না।জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো তোরেরো বলেছেন, \'যেসব দেশে গমের ভর্তুকি বেশি; মূল্যবৃদ্ধির মানবিক ও আর্থিক মাশুল তাদের বেশি দিতে হয়েছে। বিশ্বে ক্ষুধা তীব্রভাবে বিরাজ করছে।\' ২০২২ সালে বার্ষিক খাদ্যমূল্য সূচক আগের বছরের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ২০২০ সালের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে ৩৫ কোটি মানুষ গত বছর তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হয়েছে।ভূ-রাজনীতি :ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ভূ-রাজনীতিকে বদলে দিয়েছে। নতুন নতুন জোট সংঘাতকে আরও বাড়িয়েছে। ওয়াশিংটন ও বেইজিং ঘিরে জোট গঠনের প্রবণতা জোরালো হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল গত ডিসেম্বরে বলেছেন, \'আমরা একটি বিশৃঙ্খল বহুমুখী বিশ্বে স্থানান্তরিত হয়েছি, যেখানে সবকিছুই একটি অস্ত্র। শক্তি, ডেটা, অবকাঠামো, অভিবাসন- সবই অস্ত্র। এখন ভূ-রাজনীতি হলো অত্যাবশ্যক শব্দ। সবকিছুই ভূ-রাজনীতি।\'যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো শক্তিশালী হয়েছে। এ সামরিক জোটের পরিধিও বাড়ানো হচ্ছে। সুইডেন ও ফিনল্যান্ড দ্রুতই হয়তো ন্যাটোর সদস্য হবে। ইউক্রেনও যোগ দিতে পারে। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও সদস্য হতে চায়। অন্যদিকে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। তাদের সঙ্গী হচ্ছে ইরান। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান দুই মেরুর রশি টানাটানির বড় শিকার। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তো বলেই ফেলেছেন- ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ না নেওয়ায় ওয়াশিংটন তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। ওয়াশিংটনের পক্ষ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের ওপরেও প্রবল চাপ আছে। মধ্য এশিয়া, ককেশাস, বলকান, আফ্রিকা এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলগুলো চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং তুরস্কের মতো শক্তির প্রভাব বাড়ানোর লড়াইয়ের থিয়েটারে পরিণত হয়েছে। এশিয়ায় প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর ওপর মস্কোর প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়েছে। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুরস্ক নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।অর্থনৈতিক সংকট থেকে বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়েছে। এ সংকটেও পরাশক্তির মদদ আছে বলে মনে করা হয়। গবেষক নাওমি হোসেন এবং জেফ্রি হ্যালক এক গবেষণায় লিখেছেন, ২০২২ সালে প্রতিবাদের একটি অভূতপূর্ব তরঙ্গ দেখেছে বিশ্ব। বেশ কয়েকটি দেশে এই বিক্ষোভ আরও বৃহত্তর জাতীয় রাজনৈতিক সংকটে পরিণত হয়েছে। সেখানে উল্লেখযোগ্য সহিংসতা, হতাহতের ঘটনা এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের দাবি উঠেছে।রাশিয়ার অর্থনীতি :যুদ্ধ শুরুর পর বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, রাশিয়ার জিডিপি ২০২২ সালে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হবে। ফলে গত ১৫ বছরের অর্থনৈতিক অর্জন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবে তা হয়নি। নজিরবিহীন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় নিঃসন্দেহে গত ১২ মাস রাশিয়ার অর্থনীতির জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। এরপরও এটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ভালো করেছে। এ সময় রাশিয়ার জিডিপি ৩ থেকে ৪ শতাংশ কমেছে। রাশিয়ার সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা অবশ্য বলেছে, ২০২২ সালে তাদের অর্থনীতি ২ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।তবে দেশটির সামরিক ক্ষতি অপরিমেয়। দেশটির দেড় লক্ষাধিক সেনা নিহতসহ দুই লাখ হতাহত হয়েছে বলে দাবি পশ্চিমাদের। যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এখন ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশের সাহায্য নিতে হচ্ছে পুতিনকে। পশ্চিমারা এখন চাচ্ছে, রাশিয়াকে এমন অবস্থায় নিয়ে যেতে, যাতে ভবিষ্যতে দেশটি আর কোনো দেশে হামলা চালানোর হিম্মত না দেখায়।ইউক্রেনের ক্ষতি :গত সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাংক অনুমান করেছে, দেশটির পুনর্নির্মাণে প্রায় ৩৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, শেষ পর্যন্ত এই ক্ষতি এর বহু গুণ হবে। শুধু বাজেট ঘাটতি মেটাতেই দেশটির গত বছরের শেষ নাগাদ ৩৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন ছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির বাজেট ঘাটতি মেটাতে ১৮ বিলিয়ন ডলার এবং ওয়াশিংটন আরও ১০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের সিংহভাগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।গত ১২ মাসে ইউক্রেন বিদেশি উৎস থেকে ৩৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ছিল রেয়াতি ঋণ এবং বাকিটা অনুদান। ওয়াশিংটন কিয়েভের শীর্ষ ঋণদাতা ছিল। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ১৩ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুদান এবং ঋণ মিলিয়ে ১১ বিলিয়ন ডলারের বেশি দিয়েছে। ইউক্রেনের মানবিক ক্ষতি অসীম। দেশটির ২১ হাজার বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের দাবি। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ৮ হাজার। দেশটির ৮০ লাখ নাগরিক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। দেশের ভেতরেও উদ্বাস্তু হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।শেষ কোথায় :পুতিন ২০২১ সালে পাঁচ হাজার শব্দের একটি নিবন্ধে ইউক্রেন আক্রমণের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। এতে তিনি একটি জাতি হিসেবে ইউক্রেনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিয়েভকে মস্কোর বলয় বা কক্ষপথ থেকে চলে যেতে দেওয়া একটি ঐতিহাসিক ভুল বলে তিনি বিশ্বাস করেন। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া রোধ এবং রাশিয়ার প্রভাব বলয়ে রাখা ও নিরস্ত্রীকরণের দাবিতে পুতিন গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু করেছিলেন এবং মনে করেছিলেন, এটি কয়েক দিনের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। ইউক্রেনে পুতুল সরকার বসানো তাঁর লক্ষ্য ছিল বলে মনে করা হয়।তবে পুতিনের সেনারা রাশিয়া-সংলগ্ন কিছু এলাকা দখল করতে সক্ষম হলেও হামলা শুরুর পরপরই কিয়েভ ছাড়তে বাধ্য হয়।পুতিনের এ হামলাকে তাঁর দুই দশকেরও বেশি সময়ের শাসনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পুতিনের ছোট এবং দুর্বল প্রতিবেশীর আক্রমণ তাঁকে নিশ্চিতই হতচকিত করেছে। কেউ কেউ বলছেন, তাঁর জুয়াখেলা চমকপ্রদভাবে \'ব্যাকফায়ার\' করেছে। পুতিনের জীবনী লেখক ব্রিটিশ সাংবাদিক ফিলিপ শর্ট বলেছেন, আক্ষরিক অর্থে তিনি যা করতে শুরু করেছিলেন তা বিপর্যয়করভাবে ভুল প্রমাণ হয়েছে। চেচনিয়া, সিরিয়া এবং জর্জিয়ায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপে সাফল্যের পরও পুতিন তাঁর সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাকে অতিমূল্যায়ন এবং ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ ও পশ্চিমা সমর্থনকে অবমূল্যায়ন করেছেন। তবে যুদ্ধ তাঁর এবং তাঁর সামরিক, গোয়েন্দা পরিষেবা এবং কিছু অর্থনৈতিক খাতের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে।বিশ্নেষকরা এখন পুতিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ কয়েকটি দৃশ্যকল্পের কথা বলছেন। এর একটি- তাঁর বিরুদ্ধে সেনা বা অভিজাতদের অভ্যুত্থান, যেমনটা তিনি ১৯৮৯ সালে পূর্ব জার্মানিতে কেজিবি এজেন্ট হিসেবে দেখেছিলেন। ১৯৯১ সালে রাশিয়াতেও অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছিল কট্টরপন্থি কমিউনিস্টরা। বর্তমানের সামরিক বাহিনীর কেউ কেউ পুতিনের বিরুদ্ধে সমালোচনামুখর হয়ে উঠছে। বলা হচ্ছে, ২০২৪ সালেই তাঁর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটতে পারে। আরেকটি আশঙ্কা হলো পুতিনের মৃত্যু। ৭০ বছর বয়সী পুতিন অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন বলে গুজব রটছে। তবে সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস তা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পুতিনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রচুর গুজব রয়েছে এবং যতদূর আমরা বলতে পারি, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। মস্কোতে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নস অবশ্য মনে করেন, পুতিন এমন কঠোর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন যে, তিনি তাঁর চারপাশের লোকদের মাধ্যমে উৎখাত হওয়ার চেয়ে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত হার্ট অ্যাটাকে মারা যেতে পারেন।যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফসের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক এ মিলি বলেছেন, বিচ্ছিন্ন রাশিয়া ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে। রাশিয়া এখন বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। ইউক্রেনের সাহসিকতা এবং অনমনীয়তা দেখে বিশ্ব অনুপ্রাণিত। সংক্ষেপে বললে, রাশিয়া এরই মধ্যে কৌশলে হেরেছে। তবে কেউ কেউ বলছেন, কোণঠাসা রুশ নেতার টিকে থাকার জন্য একটি সামরিক বিজয় দরকার। সেটা দৃশ্যত এখন অসম্ভব হলেও তিনি নির্মমভাবে এবং যে কোনো মূল্যে জয়ী হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে।জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ নিকোলে মিত্রোখিন আলজাজিরাকে বলেছেন, যুদ্ধ ২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হতে পারে। কারণ উভয় পক্ষের সম্পদই শেষ হয়ে যাবে। আরেকটি কারণ হলো ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েরই লক্ষ্য অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সেনা নেই। তবে এ যুদ্ধে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে চীন। দেশটি এতদিন রাশিয়াকে মৌখিক সমর্থন জোগালেও এখন সমরাস্ত্র সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে। এর কারণও আছে। রাশিয়া এ যুদ্ধে হেরে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্ব ব্যবস্থা আরও শক্তপোক্ত হবে। এটা যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলার জন্য চীনের দীর্ঘদিনের লালিত উচ্চাভিলাষের পরিপন্থি। রাশিয়া ইউক্রেনে পরাজিত হলে চীনের তাইওয়ান দখলের স্বপ্নও ফিকে হয়ে আসবে।