রাজশাহীতে বিধবা নারীর সন্তান প্রসব
অনলাইন নিউজ ডেক্স
রাজশাহী জেলার চারঘাটে এক বিধবা নারী পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সন্তান জন্মের পর ওই নারী নবজাতকের পিতৃপরিচয় প্রকাশ করলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। ঘটনার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি আত্মগোপনে চলে যান। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি পশ্চিমপাড়া এলাকায়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে আকছেদ আলী মারা গেলে স্ত্রী কারিমন বেওয়া (৩৫) দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন শুরু করেন। এ সময়ে প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য শুকচান্দ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম সহায়তার নামে তার ঘনিষ্ঠ হন। ধীরে ধীরে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কের ফলে কারিমন গর্ভবতী হয়ে পড়েন। সন্তান নষ্টের জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন সাইফুল।
রোববার সন্ধ্যার আগে নিজ বাড়িতে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন কারিমন। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং শত শত মানুষ শিশুকে দেখতে ভিড় করেন। বর্তমানে কারিমন স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাড়িতেই চিকিৎসাধীন।
কারিমন বেগম জানান, ২০১৬ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তানদের নিয়ে কোনমতে দিন কাটাচ্ছিলাম। সাইফুল ইসলাম আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার সম্পর্ক করে। এতে আমি গর্ভবতী হই। সে সন্তান নষ্ট করতে বললেও আমি রাজি হইনি। আজ আমার একটি ছেলে হয়েছে। আমি সাইফুলের বিচার চাই এবং সন্তানের পিতৃপরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নাটোরের সিংড়া উপজেলার তালহাড়া গ্রামের কাবির উদ্দিনের মেয়ে কারিমন বেগম প্রায় ২০ বছর আগে আকছেদ আলীর সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর তাদের তিন সন্তানের জন্ম হয়। স্বামী মারা যাওয়ার পরও তিনি স্বামীর বাড়িতেই থাকছেন। বর্তমানে বড় ছেলে এইচএসসি ২য় বর্ষে, মেজ ছেলে অষ্টম শ্রেণীতে এবং মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে।
অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী দাবি করেন, “আমার স্বামী নির্দোষ। তার নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। কারিমনের একাধিক জনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শামীম সরদার বলেন, “আকছেদ আলী মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
কারিমনের ভাসুরের ছেলে মাসুদ রানা (৫০) বলেন, “চাচা মারা যাওয়ার পর প্রায়ই রাতে সাইফুল ইসলামকে কারিমনের বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত। সাইফুল যে অন্যায় করেছে, আমরা তার শাস্তি চাই এবং শিশুর পিতৃপরিচয় জানতে চাই।
এব্যাপারে চারঘাট মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার খবর পেয়েছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
