রাজশাহী ১ : বিএনপির সাত নেতা মাঠে, ক্ষুব্ধ তৃণমূল
অনলাইন নিউজ ডেক্স
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা বেড়েছে। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও গ্রুপিং স্থানীয় রাজনীতিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে বিএনপির সাতজন নেতার নাম আলোচনায় রয়েছে। তারা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন, শিল্পপতি অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক, ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েল, ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, সাজেদুর রহমান মার্কনি, অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিপ্লব এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন শাহীন।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সাবেক সামরিক সচিব। তিনি প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোট ভাই। তবে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সহকর্মীদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ এনে অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের হাই কমান্ডকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন এবং তাঁকে মনোনয়ন থেকে বিরত রাখতে প্রচার চালাচ্ছেন।
এদিকে অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক স্থানীয়ভাবে সবচেয়ে সক্রিয়। তিনি ‘রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা’ প্রচারসহ নানা সভা-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি চালিয়েছেন। তার দাবি, প্রতিপক্ষের দারা একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন তিনি ও তাঁর কর্মীরা।
সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, ‘দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মনোনয়ন চাওয়া সবার অধিকার। তবে কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। বিএনপির দুর্দিনে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীর পাশে আছি ছিলাম। দলের কারাবন্দি কর্মীদের বের করার ব্যবস্থা করেছি। অনেক কর্মীর পরিবারকে মাসিক অর্থ সহযোগিতা দিয়েছি। তারা এখন আমার সঙ্গে আছেন। প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূলের মতামতের প্রাধান্য থাকলে দলের সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে থাকবে বলে আমি মনে করি।’
ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েল বলেন, ‘২০০১ ও ২০০৮ সালেও আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবারো মনোনয়ন চাইছি। ১/১১ এ পর সাতটি রাজনৈতিক মামলায় আসামি হয়ে নির্যাতন, জুলুম ও হয়রানির শিকার হয়ে আত্মপোগনে থাকতে হয়েছে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। যার মধ্যে দুইটি মামলায় সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের সঙ্গে আসামী ছিলাম। রাজনৈতিক দৈন্যতা ও উচ্চাভিলাসিতা আমার মধ্যে কোন দিন কাজ করেনি। পারিবারিক ভাবে রাজনৈতিক আদর্শ লালন করে আসছি। আশা করি, ক্লিন ইমেজসহ রাজনৈতিক দক্ষতা বিবেচনায় নিয়ে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’
কে এম জুয়েল আরও বলেন, ‘স্বৈরাশাসক এরশাদের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে রাজশাহীর প্রথম সারির ছাত্রনেতা ছিলাম। সে সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলের এক মনোনয়নপ্রত্যাশীর অনুসারীদের দুই গ্রুপের দ্বন্ধে তানোরে বিএনপির দুইজন ত্যাগী নেতা প্রাণ হারিয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তি তানোর-গোদাগাড়ীতে এই প্রথম রাজনৈতিক হত্যা। যা দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেছে। বিষয়টি দলের হাই কমান্ডকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে। এ নিয়ে হাই কমান্ডই সিদ্ধান্ত নেবে।’
অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিপ্লব বলেন, ‘দল এবার পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থী চাইছে। যারা দীর্ঘদিন এলাকায় আসেননি বা দলের কোনো কার্যক্রমে অংশ নেননি, তাদের প্রার্থী করা হলে তৃণমূল ক্ষুব্ধ হবে।’
তিনি আরও বলেন, মামলা ও হয়রানির শিকার নেতাকর্মীদের জন্য আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরেছি। তাদের জামিনের ব্যবস্থা করেছি। তাই আমি মনে করি এবার দলীয় মনোয়নের সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে থাকবে।
