লক্ষ্মীপুরে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, আহত অর্ধশতাধিক


লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে যুবদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। এ সময় পুলিশের ২০-২৫ সদস্য আহত হয়েছেন। নিহতের নাম নাম মো. সজিব হোসেন। তিনি সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকালে বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে জেলা শহরের সামাদ মোড় সংলগ্ন কলেজ রোডের পুকুর পাড়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর মদিন উল্লাহ হাউজিংয়ের একটি বাসার সিঁড়িরুম থেকে লাশটি উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পদযাত্রায় বাধা পেয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আত্মরক্ষায় লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদসহ ৫০ জন আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জেলা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘হাসপাতালে আহত অবস্থায় অনেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধও রয়েছেন।’ একই হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৃত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা লাশের ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।’ এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘বিএনপি গতকাল আমাদের কাছে এসেছিল আজকের পদযাত্রার অনুমতির জন্য। আমরা তাদের শহরের গোডাউন এলাকা থেকে দক্ষিণ তেমুহনি পর্যন্ত পদযাত্রা করার অনুমতি দিয়েছিলাম। আজ উত্তর তেমুহনিতে আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রা ছিল। আমরা বিএনপি নেতাদের বলেছিলাম, দক্ষিণ তেমুহনিতে যে ব্রিজের কাজ চলছে, এর মাঝামাঝি থাকতে। তাদেরকে হাইওয়েতে উঠতে দেওয়া হবে না এমনটাই বলা ছিল। তারা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু আজকে তারা হাইওয়েতে ওঠার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।’ পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বিএনপির প্রত্যেকের কাছে পতাকার সঙ্গে লাঠি ছিল। পুলিশ শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে নিবৃত করার চেষ্টা করেছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, তাদেরকে লাইন ক্রস করতে না দেওয়া এবং হাইওয়ে উঠতে বাধা দিয়েছি। কিন্তু তারা এতটাই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যায়, পরে আমরা লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছি। একজন মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে, সেটা এখনও জানি না। এ সময় পুলিশের ২০-২৫ সদস্য আহত হয়েছেন।’ জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন ও সদর (পূর্ব) উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বাবু দাবি করেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রথমে কলেজ রোড এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এরপর রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীর ওপর গুলি ছুড়তে থাকে। এতে আমাদের এক নেতা নিহত ও গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।’