লেবাননে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, আক্রমণ বাড়ানোর নির্দেশ
অনলাইন নিউজ ডেক্স
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের তরফ থেকে দেওয়া লেবাননে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ প্রস্তাবে সরাসরি সাড়া না দিলেও, ইসরাইলি বাহিনীকে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে কাটজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘উত্তরে (লেবানন সীমান্ত সংলগ্ন দখলকৃত উত্তর ফিলিস্তিন) কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না। আমরা আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না আমরা বিজয় অর্জন করি এবং উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের (ইহুদি) নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফেরাতে পারি’।
কাটজের এই মন্তব্য লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির আশার বিপরীতে এসেছে। মিকাতি আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, শীঘ্রই একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। কেননা, ইসরাইলি হামলার জেরে লেবাননের হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপত্তার আশায় পালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে এদিনই নেতানিয়াহু জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার জন্য ইসরাইল ত্যাগ করার পর একটি বিবৃতি জারি করেন। এতে তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে পূর্ণ শক্তি দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং জানান যে, তারা যে অপারেশনাল পরিকল্পনা অনুসরণ করছে, তা চালিয়ে যেতে হবে।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিষয়ে নেতানিয়াহুর অফিস জানায়, ‘এটি একটি মার্কিন-ফরাসি প্রস্তাব, যার প্রতি প্রধানমন্ত্রী কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি’।
এদিকে ইসরাইলি বাহিনীও জানায় যে, তারা বৃহস্পতিবার লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে আক্রমণ চালিয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা বেকা উপত্যকা এবং দক্ষিণ লেবাননের হিজবুল্লাহ লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে আক্রমণ চালিয়েছে। তারা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেশ কয়েকটি এলাকায় হিজবুল্লাহর ঘাঁটি এবং অস্ত্র গুদামে আক্রমণ করেছে।
এর আগে, গতরাতে লেবাননের ইয়ুনিন শহরে ইসরাইলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন সিরীয় নাগরিক নিহত হয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সিরীয়রা লেবাননে গৃহযুদ্ধের কারণে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেবাননে ইসরাইলের সাম্প্রতিক আক্রমণে প্রায় ৬২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা ইসরাইল ও লেবাননের সীমান্তে কার্যকর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনও এ প্রস্তাবের প্রতি সাড়া দেননি। তিনি সেনাবাহিনীকে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় আকারে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে ইসরাইল প্রায় একই সঙ্গে লেবাননে হিজবুল্লাহ ও গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের অধিবেশনে জড়ো হওয়া বিশ্বনেতারা এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চেয়েছেন, কারণ লেবাননে ইসরাইলি আক্রমণ চলতে থাকলে মানবিক বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে। সূত্র: রয়টার্স
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।