শালিখায় পিডিএফ কর্মীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ
মোঃ সাইফুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান, মাগুরা

মাগুরার শালিখা উপজেলার পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) মাঠকর্মী রাশেদুল ইসলাম বাপ্পি’র বিরুদ্ধে চারজন গ্রাহকের নামে ভুয়া ঋণ তুলে আট লাখ সত্তর হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। রাশেদুল ইসলাম বাপ্পি যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা আজ শুক্রবার সকালে শালিখা রিপোটার্স ইউনিটির উপজেলা কার্যালয়ে হাজির হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয় তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী নাজমুল বিশ্বাস । লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি শালিখা উপজেলার শতখালী গ্রামের নাজমুল বিশ্বাস। আমার সাথে রয়েছেন একই উপজেলার কুশখালী গ্রামের রাবেয়া, আড়পাড়া গ্রামের সোনিয়া এবং মাগুরা সদর উপজেলার ভাবনহাটি গ্রামের শাহিনা।আমরা চারজনই পিডিবিএফ এর শালিখা উপজেলা শাখার এর নিয়মিত গ্রাহক। আমরা উক্ত সমিতিতে নিয়মিত লেনদেন করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে পিডি মাঠকর্মী রাশেদুল ইসলাম বাপ্পির সাথে আমাদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে রাশেদুল ইসলাম বাপ্পি প্রতারণার মাধ্যমে আমার নামে (নাজমুল বিশ্বাস) ২ লক্ষ টাকা, রাবেয়া খাতুন এর নামে ৩ লক্ষ টাকা, শাহিনা খাতুন এর নামে ২ লক্ষ টাকা এবং সোনিয়া খাতুন এর নামে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকাসহ মোট ৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ঝণ উঠায়ে আত্মসাৎ করে বর্তমানে সে আত্মগোপনে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাশেদুল ইসলামের সাথে কয়েকবার কথা বললে, সে আমাদেরকে হুমকি দেয় এবং পাল্টা টাকা দাবি করে। আমরা একটি গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, রাশেদুল ইসলাম বাপ্পি উক্ত টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এব্যাপারে আমরা পিডিবিএফ এর শালিখা উপজেলা ব্যবস্থাপক প্রকাশ কুমার চক্রবর্তী এর সাথে কথা বললে তিনি কর্ণপাত করেননি। তিনি বলেছেন, রাশেদুল ইসলাম বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে না সুতরাং আমি আপনাদের দাবি কৃত টাকা আদায় করে দিতে পারব না। তিনি উল্টা আমাদের কাছে কিস্তির টাকার জন্য তাগিদ দেয়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাহেদুল ইসলাম (বাপ্পি) দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও অন্যান্য কাগজ সংগ্রহ পূর্বক এই প্রতারণা করেছেন। এরপর সে ভুক্তভোগীদের অজ্ঞতাসারে তাদের নামে ঋণ অনুমোদন করিয়ে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন,“আমরা কেউই কোনো টাকা পাইনি। অথচ এখন আমাদের নামে কিস্তির চাপ আসছে। এনজিও থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে কিস্তি না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রাহকরা জানান, এনজিও কর্তৃপক্ষকে বারবার বিষয়টি জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত তারা প্রতারক কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ক্ষতিগ্রস্তদের দোষারোপ করে কিস্তি আদায়ের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, অভিযুক্ত কর্মী রাশেদুল ইসলাম বাপ্পির গ্রেপ্তার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান। এ বিষয়ে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিএফ) শালিখা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, নিয়মের মধ্যে আমরা লোন দিয়েছি, কর্মীর সাথে তাদের কি ঘটেছে তা আমি জানি না। আর প্রমাণ ছাড়া আমার করার কিছুই নেই।এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রাশেদুল ইসলাম বাপ্পির মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
