‘সজিব তুই কই, আমার জন্য কি আর ওষুধ আনবি না’


লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার পর খুন হওয়া সজিব হোসেনের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সজিবের শোকে কান্না করতে গিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা নাজমা বেগম। অসহায় বাবা আবু তাহের ছেলের শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। বুধবার জোহর নামাজের পর সদর উপজেলা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ধন্যপুর গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সজিবের মরদেহ দাফন করা হয়। সজিবের শোকে তার মা নাজমা বারবার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে যাচ্ছেন- ‘সজিব তুই কই? সবাইকে দেখছি, তোকে দেখছি না। সবাই আমার বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে। তুই কোথায় গেলি? তুই বুঝি আর আমার জন্য ওষুধ কিনে আনবি না? আর কি তোকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারব না। আমি তোকে বুকে জড়িয়ে রাখতে চাই। তুইতো আমার সবার আদরের। তোকে ছাড়া আমি কিভাবে বাঁচব?’ সজিবের মা নাজমা বেগম ও বোন কাজল আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৪ সালে ১৩ জুন সজিব জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সজিব সবার ছোট, এজন্য সে সবার আদরের ছিলেন। সজিব পেশায় টাইলস মিস্ত্রি ছিলেন। মেজো ভাই মো. সুজনের সঙ্গে তিনি কাজ করতেন। তার বড় ভাই মো. মিজান সৌদি প্রবাসী। কয়েক দিন পর সজিবেরও সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল। সজিবের বাবা আবু তাহের জানান, সজিব লক্ষ্মীপুরে বিএনপির মিটিংয়ে গিয়েছিল। সেখানে তাকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। যে বা যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের গ্রেফতারে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। সজিবের দাদা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হানিফ মিয়া বলেন, সজিব আমার সঙ্গে মিছিলে এসেছিল। কিন্তু আমার নাতিকে আওয়ামী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। সদরের চরশাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাফায়ত হোসেন বলেন, সজিব কৃষক দলের সক্রিয় সদস্য। সবসময় আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রোগ্রামে যেত কিন্তু সন্ত্রাসীরা তাকে অমানবিকভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আর কখনো তার দেখা পাব না, এটি সহ্য করতে কষ্ট হচ্ছে। দুপুরে সজিবের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার পর লক্ষ্মীপুরে কৃষক দল নেতা সজিব হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সজিব সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধন্যপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। তিনি চন্দ্রগঞ্জ থানা কৃষক দলের সদস্য।