সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন: অনিয়ম-দুর্নীতি রোধেও নিতে হবে পদক্ষেপ
মোঃ রাছেল রানা, প্রধান সম্পাদক
চলতি অর্থবছরের শুরুতেই সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থ বিভাগ বুধবার এ সংক্রান্ত এক পরিপত্র জারি করেছে। পরিপত্র অনুযায়ী সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, পাবলিক সেক্টরের করপোরেশন এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের সংশ্লিষ্ট খাতে টাকা খরচে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে স্থগিতাদেশ। এ কর্মসূচির আওতায় ‘থোক বরাদ্দ তহবিলে’র অর্থ ব্যয়, সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ, মন্ত্রণালয় ও সংস্থার জন্য যানবাহন ক্রয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্ধ থাকবে নতুন স্থাপনা নির্মাণ। বিদ্যুৎ, পেট্রোল, অয়েল লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস-জ্বালানির মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ ব্যয়ও স্থগিত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি অর্থবছরে কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে সরকারের প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয় কমাতে এ কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি সঠিক বলেই মনে করি আমরা। তবে এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সংকট মোকাবিলায় সব ক্ষেত্রেই সাশ্রয়ী হওয়া প্রয়োজন, এমনকি উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রেও। বিশেষ করে যেসব প্রকল্পে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির প্রয়োজন হয়, সেগুলো বাস্তবায়নে এ মুহূর্তে ব্যয় সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নেওয়াই সমীচীন। তবে যেসব প্রকল্প চলমান থাকবে, সেসব প্রকল্প যেন নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই সম্পন্ন হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া দরকার। দেশে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না হওয়া যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়, তৈরি হয় দুর্নীতির সুযোগ। কোনো প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা গেলে অনাবশ্যক ব্যয় যেমন হ্রাস পায়, তেমনি হ্রাস পায় জনদুর্ভোগও। কাজেই প্রকল্পে ধীরগতি, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প সম্পন্ন না হওয়া, বাড়তি সময় নেওয়া-এ প্রবণতা রোধ করতে হবে কঠোরভাবে।
সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপচয় রোধেও দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। কারণ অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে সরকারের বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেড়ে যায়। বিশেষ করে আর্থিক খাতে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অর্থ পাচার রোধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।