‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’, হয় না সত্যি সবার


‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’, হয় না সত্যি সবার
মিলন মাহমুদের গলায় ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার/পথ দেব পাড়ি তোমার’ গানটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। ঈদ এলেই গানটির জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। মানুষ আপনজনের কাছে ফেরার সময় গানটি নিজেদের ফেসবুকে শেয়ার করেন।তবে ঈদে স্বপ্ন সত্যি করে বাড়ি ফেরা হয় না সবার। আর্থিক অসংগতি এবং দায়িত্বের বেড়াজালে আটকে থেকে অনেকেই পরিবার থেকে দূরেই ঈদ কাটান।বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) যখন প্রায় ফাঁকা, তখন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে দেখা হয় নিরাপত্তাকর্মী শাহ আলমের সঙ্গে। প্রতিবছরই পরিবারের সদস্যরা তার ওপর অভিমান করে থাকেন। কারণটা খুবই অনুমেয়-ঈদের দিন সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন না তিনি।শুধু এই ঈদেই নয়, গত ১৭ বছরের কোনো ঈদই পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করতে পারেননি শাহ আলম। সন্তানরা অভিমান করে থাকে তার সঙ্গে।শাহ আলমের মতোই দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত আছেন আরও অনেক নিরাপত্তাকর্মী। তাদেরই একজন মোসলেম উদ্দিন। তিনিও এবারের ঈদেও ছুটি পাননি।মোসলেম উদ্দিন বলেন, ৩১ বছরের চাকরি জীবনে কোনোবারই ঈদের ছুটি পাইনি। একসঙ্গে কি সবার ছুটি নেওয়া সম্ভব? আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকি। পরিবারকে বলেছি পরের ঈদে ছুটি পেলে একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করব।শুধু আর্থিক অসংগতি নয়, বরং পেশাগত দায়িত্ব পালনেও অনেকের বাড়ি যাওয়ার স্বপ্ন আটকে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য তোতা মিয়া বলেন, আমাদের তো বিশেষ কোনো দিবস নেই। সারা বছরই পেশাগত কাজে থাকতে হয়। তাই সব মিলিয়ে ঈদে সবার সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ হবে না। মা-বাবা বারবার ফোন করছেন, মন খারাপ করছেন তারা। তবে ঈদের বাইরে হয়তো কোনো এক সময় গিয়ে দেখা করব।গানের সুরে ‘বাড়ি যাওয়ার যে স্বপ্ন’ তা নির্বিঘ্নে সত্যি করতে পুলিশ সদস্যরা কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রেখেছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের হাইওয়ের দায়িত্ব পালনের সময় দেখা হয় হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনজিল আহমেদ তুষারের সঙ্গে।তিনি বলেন, নাড়ির টানে সবাই এখন ঘরমুখো। হাইওয়ে সড়কে এখন অনেক যানজট। তাছাড়া ঈদ সামনে থাকলে চুরি-ডাকাতির ঝুঁকিও থাকে। সবার নিরাপত্তার দায়িত্ব তো আমাদেরই। আমরা দায়িত্বে থাকব বলেই সবাই নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারবে।