হঠাৎ তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা সৌদির, নাখোশ যুক্তরাষ্ট্র


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মধ্যপ্রাচের দেশগুলোর দূরুত্ব দিন দিন বাড়ছে নানা কারণে। বদলে যাচ্ছে রাজনৈতিক সম্পর্কও। ইরান-সৌদি আরব সম্পর্ক স্থাপানের পর এই ধারা ব্যাপক গতি পেয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কথায় যেন শুনতে চাই না সৌদি আরব। এই পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি আরব সফর করবেন বলে জানা গেছে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ অপেক্ষা করে সৌদি আরব জুলাই মাস থেকে দৈনিক তেল উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেল হ্রাস করবে। উৎপাদন বাড়ায় দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তেল উৎপাদনকারী সংস্থা ওপেক এবং এর সাথে জোটবদ্ধ দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। ভিয়েনায় ওপেক এবং রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশ রোববার ভিয়েনায় তেলের উৎপাদন হ্রাসের ব্যাপারে একমত হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে সৌদি আরবের উৎপাদন হয়ে যাবে দিনে ৯০ লাখ ব্যারেল। আর জুলাই মাসে তাদের মোট উৎপাদন হ্রাস পাবে দিনে ১৫ লাখ ব্যারেল। রোববার বৈঠকের পর সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী আবদুলআজিজজ বিন সালমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, \'আমাদের জন্য আজ একটি মহান দিন। কারণ আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, তা নজিরবিহীন।\' তিনি বলেন, নতুন লক্ষ্যমাত্র \'অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং অনেক বেশি নিরপেক্ষ।\' ওপেক ও এর সাথে জোটবদ্ধ দেশগুলো বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ৪০ ভাগ উৎপাদন করে। ফলে তারা উৎপাদন হ্রাস করলে তা তেলের বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে দিনে ১৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন স্বেচ্ছায় হ্রাস করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্যের দেশগুলো তেল উৎপাদন হ্রাস করার জন্য ওপেকভুক্ত দেশগুলোর সমালোচনা করে বলছে, এতে করে রাশিয়া উপকৃত হবে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পাশ্চাত্যের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করলেও তেলের দাম বাড়ায় ওই অবরোধ খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না। তেলের উৎপাদন হ্রাস করা হলে দাম বাড়বে। এতে করে অনেক দেশই সমস্যায় পড়বে। তবে সৌদি আরব মনে করছে, তার উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে তহবিলের সংস্থান এবং দেশের অর্থনীতিকে তেলের নির্ভরশীলতা থেকে বের করার জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে। সূত্র : আল জাজিরা ও আরব নিউজ