১০ শর্তে মিলবে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স


ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক সপ্তাহের মধ্যেই চালু হবে আবেদন প্রক্রিয়া। তবে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে অনুসরণ করতে হবে দশটি শর্ত। আর ঋণ বিতরণের জন্য শর্ত থাকছে পাঁচটি। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভা শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মো. আবুল বশর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালকরা। আবুল বশর বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার প্রথম শর্ত হবে ১২৫ কোটি টাকার ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা, যা অফেরতযোগ্য। এ সভায় প্রথাগত ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধি করা হয়েছে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ। ন্যূনতম মূলধন ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। যা আগে ছিল ৪০০ কোটি টাকা। লাইসেন্স পাওয়ার দ্বিতীয় শর্ত প্রত্যেক স্পন্সরের ন্যূনতম শেয়ার ধারণের পরিমাণ হবে ৫০ লাখ টাকা। পরের শর্ত সরাসরি কাউন্টারে বা সশরীরে কোনো গ্রাহক সেবা দেওয়া যাবে না। এরপরে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স পাওয়ার পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি, উদ্যোক্তাদের শেয়ার ব্যাংক ব্যবসা শুরুর ৫ বছরের মধ্যে হস্তান্তর না করা, পরিচালকের সংখ্যা অনধিক ২০ জন, একই পরিবার থেকে চারজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবেন না, শক্তিশালী আইসিটি অবকাঠামো আলাদা আলাদা এলাকায় ডিজাস্টার রিকভারি সাইট থাকতে হবে, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণখেলাপি কোনো প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, ব্যক্তি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য স্পন্সর, শেয়ারহোল্ডার হতে পারবেন না এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, ব্যাংকিং রেগুলেশন ও নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয়ে ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও ব্যাংকিং পেশায় কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ঋণের ক্ষেত্রে যেসব শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে তা হলো-ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে গ্রাহক ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং (আইসিআরআর) নীতিমালা যাচাই-বাছাই করা হবে। ডিজিটাল ব্যাংকের মাধ্যমে শুধু এসএমই ঋণ বিতরণ করা যাবে। বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণ, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পে বিনিয়োগ করা যাবে না। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে অস্থাবর সম্পত্তি সহায়ক জামানত হিসাবে গ্রহণ করা যাবে। দৈনন্দিন লেনদেনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্রিয় রাখতে হবে। সভায় নতুন মুদ্রানীতির নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলারের বিনিময় হার ও ব্যাংক ঋণের সুদের হার গুরুত্ব পেয়েছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আগামী ৪ বছরের মধ্যে পুরোপুরি না হলেও ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেস মাধ্যমে আনার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেছেন, মানুষের হাতে নগদ অর্থ যত কম থাকবে, অর্থনৈতিক কার্যক্রম তত বাড়তে থাকবে।