২ ভাইকে পিটিয়ে হত্যা: মহাসড়ক অবরোধ বিক্ষোভ, পুলিশের গুলিতে আহত ১৫


মন্দিরে আগুন দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত ফরিদপুরের মধুখালী। হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। সড়ক থেকে জনতাকে সরাতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মধুখালীর বিভিন্ন স্থানে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পিটুনিতে দুই মুসলিম সহোদর নিহত হওয়ার ঘটনার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেন স্থানীয়রা। সকাল ১০টার আগেই কয়েক হাজার লোক মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধন করার জন্য অবস্থান নেন। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে তারা কিছুটা দূরে মধুখালীর মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে মাহসড়ক অবরোধ করেন। পাশাপাশি মধুখালীর বাগাট বাজার ও মধুখালী রেলগেট এলাকায়ও অবরোধ সৃষ্টি করেন। ফলে মহাসড়কের ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে মহাসড়ক থেকে লোকজন সরাতে পুলিশ টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে ১৫ জন আহত হন। মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন জানান, পঞ্চপল্লীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধুখালী উপজেলার পাইলট স্কুল থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা হয়। কোথাও বুঝিয়ে-শুনিয়ে, কোথাও টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে পুলিশ। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমদাদ হোসাইন বলেন, পঞ্চপল্লীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধুখালী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল থেকে নওপাড়া পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্থানে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা হয়। পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ এনে আশরাফুলও আশাদুল নামের নির্মাণ শ্রমিক দুই ভাইকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে মধুখালী থানার ইউএনও এবং ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপরও হামলা হয়। এ সময় ফরিদপুর ও রাজবাড়ী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। খবর পেয়ে ফরিদপুর থেকে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ঘটনাস্থলে যান। প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর আহতদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।