অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

৩ শিক্ষকের পদত্যাগ, উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আবাসিক হলগুলোও বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেট সভা সূত্র জানায়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে আলাপ-আলোচনা করে দুটি কমিটি গঠন করা হবে। একটি শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে এবং অন্যটি ২৮ এপ্রিল যে ঘটনা ঘটেছে তার তদন্তের জন্য কমিটি করা হবে। আবাসিক হল কেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে এক সিন্ডিকেট সদস্য জানান, উপাচার্য দাবি করেছেন আবাসিক হলগুলোতে প্রচুর অস্ত্র ঢুকছে। শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। এতে এখানে অন্যরকম ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন উপাচার্যের বিরুদ্ধে গিয়েছে তখন তার নৈতিকভাবে কোনো অবস্থান থাকে না। তার প্রশাসনের সব সহকর্মীই পদত্যাগ করেছেন। এখন তিনি বুঝতে পেরেছেন তার পতন শুধুই সময়ের ব্যাপার। তাই তিনি সময়ক্ষেপণের অপচেষ্টা করেছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট নিরসন, শিক্ষকদের ওপর হামলা ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের অপসারণের দাবিতে ফের ৩ শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকটে প্রশাসনিক পদের প্রায় ১৯ জন পদত্যাগ করেছেন। এদিকে উপাচার্যের নেতৃত্বে শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, নতুন করে পদত্যাগ করা ৩ শিক্ষক হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মোছা. আশিখা আক্তার, সহকারী প্রক্টর মো. মোশাররফ হোসাইন। তারা প্রত্যেকেই উপাচার্যপন্থি শিক্ষক হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। পদত্যাগের বিষয়ে আশিখা আক্তার বলেন, শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আমি পদত্যাগ করেছি। আমাকে না জানিয়ে উপাচার্যের করা থানার অভিযোগে সাক্ষী রাখা হয়েছে। এজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। একই কথা বলেছেন মো. মোশাররফ হোসাইনও। তিনি বলেন, আমি প্রক্টরিয়াল বডিতে থাকার কারণে নাকি আমাকে সাক্ষী বানানো হয়েছে। এদিকে শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ উপাচার্যের ও প্রক্টরের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষকদের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে তা অবিশ্বাস্য। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করেছে। বিভিন্ন অনিয়ম করার কারণে বারবার সংবাদের শিরোনাম হতে হয়েছে। আমরা এমন উপাচার্য চাই না। কোষাধ্যক্ষকেও আমরা এই ক্যাম্পাসে চাই না। তাদের যদি এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা এখনই ক্লাসে ফিরব। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে ক্যাসিনো মঈন নামে পরিচিত। সেখানকার বারে যাকেই জিজ্ঞাসা করবেন ক্যাসিনো মঈন কে? প্রত্যেকেই বলবে, হি ইজ ফ্রম বাংলাদেশ। তবে আমি উনাকে মাতাল বলব। উনি নারীদের নির্যাতন করেন। শুধু তাই নয়, তিনি শিক্ষার্থী বহিষ্কার করেছেন, সাংবাদিক বহিষ্কার করেছেন।