৫৪ দিন পর খবর এলো নায়িকা সুনেত্রা আর নেই


বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দিবাগত রাত ৩টা ৭ মিনিটে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিলম্বিত খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা জায়েদ খান। পোস্টে তিনি লিখেন, ‘এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা, শৈশবে আমার পছন্দের একজন নায়িকা, চোখের প্রেমে পড়তো যে কেউ, তিনি সুনেত্রা। অনেকদিন বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতা। আমি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে বেশ কয়েকবার ফোনে কথা বলেছিলাম। আজ হঠাৎ শুনলাম তিনি আর নেই, মৃত্যুবরণ করেছেন।’ জায়েদ খান আরও লিখেন, ‘নীরবে-নিভৃতে চলে গেলেন। এভাবেই হারিয়ে যায় মানুষ, চলে যায়। আপনি ভালো থাকবেন ওপারে। অনেক চলচ্চিত্র দেখবো, আর আপনাকে মিস করবো।’ জায়েদ খানের সেই পোস্টে ভক্ত-অনুরাগীরা সমবেদনা জানিয়েছেন। দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুনেত্রা। বাংলাদেশের পরিচালক মমতাজ আলী ঢাকাই সিনেমায় নিয়ে আসেন সুনেত্রাকে। সে সময়ের হার্টথ্রব নায়ক জাফর ইকবালের বিপরীতে ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘উসিলা’ সিনেমাতে প্রথম দেখা যায় তাকে। ১৯৯০ সালে দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘পালকি’ ছবির মাধ্যমেই মূলত প্রথম জনপ্রিয়তা এবং দর্শকমহলে পরিচিতি পান সুনেত্রা। এ ছাড়া সমকালীন জনপ্রিয় অভিনেতা জসীম, সোহেল রানা, ফারুক, জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চন ও মান্নাসহ অনেকের সঙ্গেই পর্দা ভাগ করেছেন গুণী এ অভিনেত্রী। জাফর ইকবালের বিপরীতে ‘ঘর ভাঙা ঘর’ ছবিটিকেই সুনেত্রা অভিনীত সর্বশেষ বাংলাদেশি ছবি বলে ধরা হয়। এটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর কিছুদিন কাজ করেন কলকাতার ছবিতে। ১৯৯৯ সালের সেখানে সবশেষ সুনেত্রা অভিনীত ‘দানব’ ছবিটি মুক্তি পায়। সেই ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন কলকাতার শক্তিমান অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জির বিপরীতে। কলকাতায় তিনি কাজ করেছেন ‘সিঁথির সিঁধুর’, ‘মনসা কন্যা’ ইত্যাদি ছবিগুলোতে। তিনি ‘তালাশ’, ‘শূন্যে কি তালাশ’ নামের দুটি উর্দু ছবিতেও অভিনয় করেছেন। পাকিস্তানের টিভি নাটকেও সুনেত্রা ছড়িয়েছেন অভিনয়ের দ্যুতি। ১৯৭০ সালের ৭ জুলাই সুনেত্রা জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে। পারিবারিক নাম তার রিনা সুনেত্রা কুমার। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সুনেত্রা ছোট। তিনি মাধ্যমিক শেষ করেছিলেন কলকাতার গখলে মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলে। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রাণিবিদ্যায় মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতি চর্চার প্রতি মনোযোগী ছিলেন সুনেত্রা। নাচ, গান ও অভিনয়ে নিজেকে তৈরি করেছিলেন তিনি।