স্পর্শকাতর সংবাদ নিয়ে সতর্ক থাকতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ


কোনো স্পর্শকাতর বিষয় যাতে অতিরঞ্জিত হয়ে বা মিথ্যা তথ্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রকাশ না হয়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দেশে এত এত বিষয় থাকতে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এসব নিউজ কেন করতে হবে? এটা তো সাংবাদিকতার নীতির সঙ্গে যায় না। এটি আরেকটি বাসন্তী উপাখ্যান তৈরি করার চেষ্টা কিনা– সে প্রশ্নও তোলেন সরকারপ্রধান। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় সরকারপ্রধান এমন মন্তব্য করেছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে উপস্থিত তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত ২৬ মার্চ দেশের ৫৩তম স্বাধীনতা দিবসে শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যমের অনলাইন সাইটে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারদরকে কেন্দ্র করে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। একটি শিশুর মন্তব্য দিয়ে ওই সংবাদ প্রকাশের পরপরই ব্যাপক সমালোচনার জন্ম হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অনলাইন থেকে নিউজটি উঠিয়ে নেওয়া হয়। এর পর ওই গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দুঃখও প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠক সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভায় অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তুলে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে সবাইকে পরামর্শ দেন। সূত্র জানায়, এ সময় সরকারপ্রধানের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের আরও নানা বিষয় সামনে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁরা নাম প্রকাশ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এক সিনিয়র মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারপ্রধান নিজেই যেখানে মতপ্রকাশ করেছেন, সেখানে আমাদের মন্তব্য করা সাজে না।’ আরেকজন মন্ত্রী বলেন, বর্তমান অনলাইন দুনিয়ায় শুধু গণমাধ্যম নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরনের কথা, তথ্য ভেসে বেড়ায়। অনেকে অনেক স্পর্শকাতর বিষয় তুলে ধরলেও এতটা ধর্তব্যে নেওয়া হয় না। কিন্তু দেশের একটি প্রথম শ্রেণির গণমাধ্যমে যখন সেটা আসে, তখন সে বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে কুড়িগ্রামের চিলমারীর প্রত্যন্ত এক জেলেপাড়ার দুই নারী অভাবের তাড়নায় মাছ ধরার জাল পরিধান করে সম্ভ্রম রক্ষা করছিলেন। এমন একটি ছবি তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল সরকার। হতদরিদ্র পরিবারের বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বাসন্তী এবং তাঁর চাচাতো বোন দুর্গতির জাল পরিধান করা ছবি প্রকাশ হয়েছিল। এ বিষয়ে গত বছরের আগস্ট মাসের এক শোক সভায় বাসন্তীকে দেখার আকুতি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বাসন্তী নামের একটি মেয়েকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে সারাবিশ্বে প্রচার করা হলো। সে সময় ১০-১২ টাকায় শাড়ি পাওয়া যেত। তখন একটা মাছ ধরা জালের দাম ১৫০ টাকার নিচে ছিল না।