যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়ে আ.লীগ-বিএনপির প্রতিক্রিয়া ‘একই’


‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ীদের ভিসা না দেওয়ার নতুন নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথে আন্দোলনরত দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে একই ধরনের প্রতিক্রিয়া এসেছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে যারা আগুন দিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে তাদের খবর আছে।’ অন্যদিকে একই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নয়, খবর আছে আওয়ামী লীগ সরকারের।’ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মজয়ন্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তারা একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বুধবার বলেছেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবেন তাদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সে লক্ষ্যে নতুন এ ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।এর আওতায় বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে, সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আপনি যখন বলছেন বাধার প্রশ্ন, আমাদেরও একটা কথা, নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদেরকে আমরা অবশ্যই প্রতিহত করব। বাধা প্রদানকারীর বিরুদ্ধে এখানে বক্তব্য আছে। আমরা এখানে বলতে চাই, যারা নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলনের নামে বাসে আগুন দেয়, বাস ভাঙচুর করে, এরাই একটা পলিটিক্যাল ভায়োলেন্সে আছে। কাজেই ওদের খবর আছে। পরে একই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আমাদের খবর নয়, খবর আছে আওয়ামী লীগ সরকারের। কারণ জনগণ ফুঁসে উঠেছে। জনগণ এবার দিনের ভোট রাতে করতে দেবে না ।’ বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে না দিয়ে তাদের শুভ বুদ্ধি উদয় হওয়া উচিত। বাংলাদেশ কি পুরো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন ও এক ঘরে হয়ে যাবে? পুরো পৃথিবী বয়কট করবে বাংলাদেশকে?’ এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, বাংলাদেশের জন্য যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে, গণতন্ত্রের জন্য যে বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয় এবং তারা যে কর্মকাণ্ডগুলো করেছে, নিষেধাজ্ঞার যে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে, আমি মনে করি এটা যথার্থই করেছে।’ বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে আসছি। যেটা ইতোমধ্যে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক।’