পাকিস্তানে আবারও রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ
অনলাইন নিউজ ডেক্স
পাকিস্তানে আবারও রাত ৮টার মধ্যে দোকান ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। জ্বালানি সংরক্ষণের কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ১ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্যবসায়ীরা। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে দ্য ডন।
খবরে বলা হয়েছে, জ্বালানি সংরক্ষণের কথা বলে সরকার আবারও প্রতিদিন রাত ৮টার মধ্যে বাজার এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শেহবাজ সরকারের এই সিদ্ধান্ত বেশ দ্রুতই প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্যবসায়ীরা।
তাদের দাবি, রাত ৮টা থেকে তাদের ব্যবসার পিক টাইম শুরু হয়। আমদানি করা জ্বালানির ওপর দেশের নির্ভরতা কমাতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে জ্বালানি সংস্কার অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দুটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল গণমাধ্যমকে বলেন, প্রদেশগুলো আগামী ১ জুলাই থেকে তাড়াতাড়ি দোকান ও বাজার বন্ধ কার্যকর করতে সম্মত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি সংরক্ষণের জন্য পরিকল্পনার অধীনে আজ যেসব পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে, তার মধ্যে রাত ৮টার মধ্যে দোকান এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা, এলইডি লাইটের ব্যবহার বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো রয়েছে।’
এই ধরনের পদক্ষেপ বছরে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় করতে সাহায্য করতে পারে বলে দাবি করেন তিনি। অবশ্য সন্ধ্যার পর আগেভাগে বাজার বন্ধ করার জন্য সরকারের সাম্প্রতিক সময়ের সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
মূলত রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা এবং ব্যবসায়ীদের চাপের কারণে আগের সেসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় ব্যবসায়ীরা এবারও সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকার করেছেন।
অল পাকিস্তান আঞ্জুমান-ই-তাজিরানের সভাপতি আজমল বালোচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চলতি মৌসুমে আমরা রাত ৮টার মধ্যে আমাদের দোকানপাট বন্ধ করব না। সরকার অতীতে এই ধরনের অনেক প্রচেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, গরমের দিনে লোকেরা খুব কমই কেনাকাটার জন্য তাদের বাড়ির বাইরে বের হন এবং এই কারণে গ্রীষ্ম মৌসুমে কেনাকাটার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে রাত ৮টা থেকে ১১টা।
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে জ্বালানি সঞ্চয় করা কি ভালো সিদ্ধান্ত?’
জ্বালানিমন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করতেও বলেছেন আজমল বালোচ। এর আগে পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জ্বালানি এবং অবকাঠামোগত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তার দাবি, উচ্চ বৈশ্বিক মূল্যের কারণে পাকিস্তানের জন্য জ্বালানি একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব তেলের উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে দিয়েছে। আর এটি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।’
তার দাবি, পাকিস্তান যদি তার জ্বালানির প্রয়োজন মেটাতে জীবাশ্ম জ্বালানি এবং তেলের ওপর নির্ভর করতেই থাকে, তাহলে আমাদের অর্থনীতি ঝুঁকিপূর্ণই থাকবে। এটি মোকাবিলা করার জন্য সরকার যেসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে চায় তার মধ্যে জ্বালানি সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিষয়টিও রয়েছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।