এসআই অলিউল্ল্যাহর হাতে যেন আলাদিনের চেরাগ


২০০১ সালে নিঃস্ব অবস্থায় একজন কনস্টেবল হিসাবে পুলিশে যোগদান করেছিলেন বর্তমানে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিতে কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) অলিউল্ল্যাহ। কিন্তু এখন তিনি শতকোটি টাকার মালিক। এলাকার ‘বিস্ময়’ ও প্রতাপশালী ব্যক্তি। ক্ষমতা ও টাকার জোরে এক ভাইকে বানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বাহিনী। এলাকায় আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে ক্লাবের আদলে ‘চেকপোস্ট’ বসিয়ে গ্রামবাসীর চলাচল সীমিত করেছেন দুই ভাই। কেউ তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে শিকার হচ্ছেন হামলা-মামলার। এভাবে একটি গ্রামের তিন হাজার সাধারণ মানুষকে দেড় বছর ধরে জিম্মি করে রেখেছেন এ দুই সহোদর। সম্প্রতি অলিউল্ল্যাহর শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের উৎস খুঁজতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সিআইডির এসআই অলিউল্লাহর বাড়ি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের কলুঙ্কা গ্রামে। তার বাবা আবদুল কুদ্দুছ তারা মিয়া। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দেন অলিউল্ল্যাহ। পরে ২০১৫ সালে এএসআই এবং ২০১৮ সালে এসআই পদে পদোন্নতি পান। তাদের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত। অলিউল্ল্যাহরা দুই ভাই ও তিন বোন। তার ছোট ভাই সোহাগ তালুকদার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে গত বছর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করেন। নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এদিকে সিআইডির নিছক একজন সাব-ইনস্পেকটর হয়েও অলিউল্ল্যাহ কীভাবে শত শত কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন, তা নিয়ে দুদক কর্মকর্তারাও অবাক। ইতোমধ্যেই তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, নিম্নপদে অল্প সময়ের চাকরিতে এত বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার নজির নেই বললেই চলে। এদিকে তার এক নিকটাত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অলিউল্ল্যাহ ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন। তার মাধ্যমে শত শত পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ বাণিজ্য, পুলিশে বদলি, পোস্টিং করিয়ে দুহাতে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন এসআই অলিউল্ল্যাহ। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে গত বছরের ২৭ অক্টোবর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুদকের উপসহকারী পরিচালক প্রবীর কুমার দাসকে। শতকোটি টাকার সম্পদ : অনুসন্ধান ও দুদক সূত্র বলছে, ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার মালিক হওয়া অলিউল্ল্যাহর অনেক সম্পদ। তবে সবকটির তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। দৃশ্যমান সম্পদের মধ্যে রয়েছে-রাজধানীর রাজারবাগে চার কাঠা জায়গার ওপর একটি সাততলা বাড়ি এবং উত্তরায় চার কাঠা জমির ওপর আরও একটি সাততলা বাড়ি। নেত্রকোনায় আধুনিক সদর হাসপাতালের সামনে আছে ছয়তলা একটি বাড়ি, ময়মনসিংহে একটি বহুতল ভবন, শহরের নতুন জেলখানা এলাকায় রয়েছে ৪০ শতক জায়গা। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ শহরের মহিলা কলেজের পেছনে এবং থানা মোড়ে রয়েছে দুটি বড় প্লট। উপজেলার সামাইকোনা সেতুসংলগ্ন এলাকায় তিন কোটি টাকার জমি। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা শহরে ১০ শতক জায়গার ওপর একটি বাড়ি। একই শহরের পূর্বপাশে একটি দোকানও রয়েছে তার। এছাড়াও বলুংকা মৌজায় ক্রয়কৃত এক হাজার শতাংশ জমি, যার আনুমানিক মূল্য ছয় কোটি টাকা; বলুংকা মৌজায় ৬০ শতাংশ জমি, যার আনুমানিক মূল্য ৩০ লাখ টাকা; সামাইকোনা মৌজার সামাইকোনা বাজারে হাল দাগ নং ৭১, ৬৪, ৮৬, ৩৬৪, ৩৬৩, ৭৯-এ ক্রয়কৃত ৭০ শতাংশ জমি, যার মূল্য চার কোটি; মোহনগঞ্জ পৌরসভার দৌলতপুর মৌজায় মহিলা কলেজের পেছনে ক্রয়কৃত ৪৫ শতাংশ জমি, যার দাম ছয় কোটি; নেত্রকোনা শহরে জয়নগর মৌজায় অলির মামা মফিজুর রহমানের (ইন্সুরেন্স কর্মী) নামে ক্রয় করেছেন ৫ শতাংশ জমি, যার মূল্য ৬০ লাখ; এই জায়গার ওপর ৬ তলাবিশিষ্ট ভবন, যার মূল্য চার কোটি; চল্লিশা কান্দি মৌজায় (নেত্রকোনা) ১০০ শতাংশ জমি, যার মূল্য দুই কোটি; ময়মনসিংহ সদরে ক্রয় করেছেন আনুমানিক দুই কোটি টাকা মূল্যের জমি, ঢাকার উত্তরায় পাঁচ কোটি টাকার জমি, সবুজবাগ থানার রওশন মঞ্জিল গলির ৮ শতাংশ জমি বাবা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদারের নামে কিনেছেন, যার আনুমানিক দাম তিন কোটি টাকা এবং সেখানে ৫ কোটি টাকা খরচ করে ৮ তলা বাড়ি করেছেন। সবুজবাগ থানার রওশন মঞ্জিল গলিতে আরেকটি জমি বাবার নামে কিনেছেন। সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা মৌজায় তিনটি বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি টাকা, ধর্মপাশা থানার পেছনে বাড়িসহ জায়গা, যার দাম ৩০ লাখ টাকা। ধর্মপাশা বাজারে ৩০ লাখ টাকার জমি, দিগজাম মৌজার হাওড়ে আনুমানিক ২৫০ কাঠা কৃষিজমি, যার আনুমানিক মূল্য দুই কোটি টাকা। দিগজান ধর্মপাশা মৌজায় ‘দিকজান ফিশারিজ’ ক্রয় করেছেন ৫০ লাখ টাকায়। এছাড়াও রাজধানীর খিলক্ষেত ও নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরে কিনেছেন কোটি টাকার জমি। নিজের ব্যবহারের জন্য রয়েছে নোয়াহ মাইক্রোবাসসহ দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি। এছাড়াও গ্রামের বাড়িতে রয়েছে ২৫ একর আবাদি জমি, যার বর্তমান বাজার মূল্য ১০ কোটি টাকা। মামার বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার দিগজান এলাকায় রয়েছে ৩৫ একর জমি। পাশাপাশি দুটি মাছ ধরার বড় জলাশয়ও কিনেছেন অলিউল্ল্যাহ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসআই অলিউল্ল্যাহ তার বাবা আব্দুল কুদ্দুস, ভাই সোহাগ তালুকদার, তিন বোন শাপলা আক্তার, শিমলা বেগম, তমা আক্তার, মামা মফিজুর রহমান এবং তার স্ত্রী তানিয়ার নামে প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পদ কিনেছেন। ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা জমা রয়েছে। কলুঙ্কা গ্রামের বসিন্দারা জানান, অলিউল্ল্যাহ দুদক থেকে বাঁচতে সব সম্পদের বেশির ভাগই মা-বাবা, ভাই-বোন, শ্বশুর-শাশুড়ি, নিকটাত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের নামে রেখেছেন। আত্মীয়স্বজনের অনেকের নামেই করে রেখেছেন ব্যাংক ব্যালেন্স। অসম সম্পদের হিসাব সহজ করতে এক বন্ধুর সঙ্গে পার্টনারশিপ ব্যবসার লাইসেন্সও করেছেন। এখানেই শেষ নয়, নিজেকে ঋণগ্রস্ত দেখাতে ব্যাংক থেকে নিয়েছেন কোটি টাকার ঋণ। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কলুঙ্কা গ্রামের বাসিন্দা মো. সবুজ মিয়া বলেন, ওই পরিবারে অলিউল্ল্যাহই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার ছোট ভাই সোহাগ কিছুই করে না। চাকরি পাওয়ার আগে গ্রামে তাদের বাড়ি এবং প্রায় পাঁচ শতাংশ জমি ছিল মাত্র। কিন্তু এই কয়েক বছরে পুলিশে চাকরি করে কীভাবে এত সম্পদ করেছে, এর হিসাব এলাকায় কেউ মিলাতে পারছে না। এখন চারদিকে তাদের শুধু সম্পদ আর সম্পদ। নামে-বেনামে কত সম্পদ যে আছে, তার কোনো হিসাব নেই। ছুটিতে বাড়িতে এলে এক-দুইটা গরু জবাই করে তার পরিচিতজনকে খাওয়ান। তিনি বলেন, এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। যে-ই তার বিরুদ্ধে যাবে, তাকেই মামলা দিয়ে সর্বস্বান্ত করে ছাড়ে। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে জেল খেটেছেন এলাকায় এমন অনেক মানুষ আছেন। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলুঙ্কা গ্রামের একজন বলেন, ‘অলিউল্ল্যাহর দৃশ্যমান সম্পদের পরিমাণই শতকোটি টাকার বেশি। অজানা কত সম্পদ আছে, সেটার পরিমাণ কেউ জানে না। তিনি এবং তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। অলিউল্ল্যাহর বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আমি জেল খেটেছি। একবার আমায় মিথ্যা মানব পাচার মামলায় জেল খাটিয়েছে। তার পাহাড়সমান টাকা। সবকিছু তার পক্ষে। এলাকার কেউ এখন আর তার বিরুদ্ধে কথা বলে না।’ অলিউল্ল্যাহর মামার বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার দিগজান গ্রামে। তার মামার পরিবারের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অলিউল্লাহর সম্পদ শতকোটি টাকার অনেক বেশি হবে। তার মা-বাবা, ভাই, বোন, বন্ধুবান্ধবসহ মামা-মামি, মামাতো ভাই-বোনদের নামেও ব্যাংক-ব্যালান্স রয়েছে। তবে অলিউল্ল্যাহ এলাকায় গরিব মানুষকে সহায়তা করেন বলেও জানান তিনি। অলিউল্ল্যাহর অবৈধ সম্পদের অভিযোগ সম্পর্কে দুদকের ময়মনসিংহ বিভাগের উপপরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, এসআই অলিউল্ল্যাহর অবৈধ সম্পদের বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা সেই অভিযোগটি ঢাকায় দুদকের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিন হাজার মানুষকে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ : স্থানীয়দের দাবি, নিজস্ব বাহিনী গঠন করে দারোগা অলিউল্ল্যাহ ও চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার কলুঙ্কা গ্রামের তিন হাজার বাসিন্দাকে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় জিম্মি করে রেখেছেন। ওই গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চেকপোস্টের আদলে দুটি ক্লাব বানিয়ে পুরুষদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন দুই ভাইয়ের সশস্ত্র ও লাঠিয়াল বাহিনী। গ্রামের পুরুষদের এলাকার বাইরে যাতায়াতে কড়া নজরদারি করা হয়। সব জরুরি প্রয়োজন মেটাতে নারীরাই হাটবাজার, দোকানপাটে কেনাকাটা, যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সম্পাদনে জেলা উপজেলায়ও নারীরা বাধ্য হয়ে যাতায়াত করেন। তবে আদালতে হাজিরা দেওয়ার মতো জরুরি কাজে যাওয়া বাধ্যতামূলক হলে পুরুষ সদস্যরা দুই-একদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেন এবং সুযোগ বুঝে গভীর রাতে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন। দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়েও এই চেকপোস্ট অতিক্রম করার উপায় নেই। অতিসম্প্রতি চেকপোস্ট পেরিয়ে দ্রুততার সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে পালানোর সময় ১৫ কিলোমিটার ধাওয়া দিয়ে আটক করা হয় একজনকে। তার মোটরসাইকেল ভেঙে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। আর আটক ব্যক্তিকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার ঘটনাও ঘটে। দুই সহোদরের হয়ে কাজ করা শতাধিক অস্ত্রধারী ও লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন-রাকিব হাসান (৩২), মেহেদী হাসান আতিক (২২), জানে খান (৪০), মাসুদ মিয়া (২৮), ইকবাল হাসান কমল (৩৫), মোবারক মিয়া (১৮), মাহফুজ মিয়া (১৯), এরশাদ মিয়া (৪০), নয়ন মিয়া (৩০), তারিক মিয়া (৩০), বরকত উল্লাহ (২০), জুলহাস (৪৮), মানিক মিয়া (২৫), আজাহারুল ইসলাম (২৫), মনসুর খাঁ (৩৫), মহসীন মিয়া (৩০)। অতিষ্ঠ স্থানীয়দের মানববন্ধন, বিক্ষোভ : সম্প্রতি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর বড়তল বানিয়াহাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবদলের সাবেক গণশিক্ষাবিষয়ক সহসম্পাদক মো. সোহাগ মিয়া ও তার বড় ভাই সিআইডির সাব-ইনস্পেকটর অলিউল্ল্যাহর বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ নিরীহ এলাকাবাসীর ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন এবং একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। একই ইউনিয়নের কলুঙ্কাসহ আশপাশের গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপজেলার হাসপাতাল রোডে এ মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সবুজ মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মিরা আক্তারসহ কয়েকজন বক্তৃতা করেন। বক্তারা ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ মিয়ার হামলা ও নির্যাতনের শিকার এবং তারই ভাই এসআই অলিউল্ল্যাহর মামলার হয়রানিতে গ্রামের ভুক্তভোগী নারী-পুরুষদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যানকে পেশাদার অপরাধীদের গডফাদার এবং অলিউল্ল্যাহকে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও অত্যাচারী দারোগা আখ্যা দিয়ে স্লোগান, বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা মোহনগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর স্মারকলিপি দেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে এসআই অলিউল্ল্যাহর মোবাইল ফোনে একাধিক কল ও খুদে বার্তা দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ২৯ মে বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সিআইডি সদর দপ্তরে তার কর্মস্থলে অপেক্ষা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অলিউল্ল্যাহর বড় ভাই ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, এলাকার কিছু লোক নির্বাচনে হেরে গিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। আমরা কোনো লোকজনকে এলাকায় জিম্মি করে রাখিনি। ভাই অলিউল্ল্যাহ ও আমার নামে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, সেগুলো সঠিক নয়। অলিউল্ল্যাহ অল্প সময়ে এত সম্পদের মালিক কীভাবে হলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।