এক মাসের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে মরিচের উৎপাদন
অনলাইন নিউজ ডেক্স
রাজশাহী অঞ্চলের মোকামগুলোতেও কাঁচামরিচের দাম কমতে শুরু করেছে। সবজি ও মাছ সরবরাহের বড় মোকাম রাজশাহীর খড়খড়িতে সোমবার সকালে সব ধরনের কাঁচামরিচ খুচরা ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। উত্তরাঞ্চলজুড়ে খরা ও তীব্র তাপের কারণে শত শত হেক্টর মরিচের খেত নষ্ট হয়েছে। এ উৎপাদন স্বাভাবিক হতে মাসখানেক সময় লাগবে। তখন মরিচের দাম আরও কমবে।চাষি ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, দুদিন আগে শনিবার সকালে খড়খড়ি মোকামে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। ৪০ কেজির মনের হিসাবে এই দাম ছিল প্রায় ১৪ হাজার টাকা। সোমবার পাইকারিতে ১ মন কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ২০০ টাকায়।মরিচ চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলজুড়ে খরা ও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শত শত বিঘা মরিচের খেত নষ্ট হয়েছে। ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাইকারি মোকামে কমেছে কাঁচামরিচের আমদানি। আর এ কারণেই মরিচের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। উল্লেখ্য, রাজশাহীর খড়খড়ি মোকাম থেকে প্রতিদিন ১০০ মন করে কাঁচামরিচ চালান হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে। তবে আমদানি কমায় মরিচের চালানও কমে গেছে দুই সপ্তাহ ধরে।সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু ছাড়াও স্থানীয়ভাবে কাঁচামরিচের আমদানি বাড়তে শুরু করেছে স্থানীয় হাটবাজার ও পাইকারি মোকামে। কয়েকদিনের মধ্যে কাঁচামরিচের দাম আরও কমবে। তবে মরিচের উৎপাদন স্বাভাবিক হতে মাসখানেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।সোমবার সকালে উত্তরাঞ্চলের সবজি ও মাছ সরবরাহের বড় বৃহৎ মোকাম খড়খড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক চাষি অপুষ্ট কাঁচামরিচও আনছেন মোকামে। বেশি দামের আশায় খড়খড়ি মোকামে পার্শ্ববর্তী জেলা নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর বিভিন্ন এলাকা থেকেও চাষিরা কাঁচামরিচ বিক্রির জন্য আনছেন। তবে অপুষ্ট কাঁচামরিচ কিছুটা কম দামে কিনছেন পাইকাররা।রাজশাহীর পবার পারিলা হাট রামচন্দ্রপুরের মরিচচাষি তাইফুর রহমান বলেন, মে মাসের শুরু থেকে ২০ জুন পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে খরার সঙ্গে সঙ্গে মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ চলেছে। দীর্ঘ সময়ের খরায় প্রচুর মরিচখেত পুড়ে গেছে। এ কারণে কাঁচামরিচের স্বাভাবিক ফলনে ঘাটতি পড়েছে। তিনি আরও বলেন, এই সুযোগে আড়তদার ও ফড়িয়ারা কাঁচামরিচের মতো সাধারণ পণ্যের দামও আকাশে তুলেছে।রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ জানান, গ্রীষ্মকালীন (খরিফ-১) কাঁচামরিচের ভালো ফলন হয়। বিঘাপ্রতি ২০ মন পর্যন্ত মরিচ পাওয়া যায়। কিন্তু তীব্র তাপপ্রবাহ ও দীর্ঘকালীন খরায় উত্তরাঞ্চলজুড়ে কাঁচামরিচের বিপুল পরিমাণ খেত নষ্ট হয়েছে। অনেক মরিচ খেতেই ঝরে পড়েছে। একপর্যায়ে মরিচগাছ শুকিয়ে মরে গেছে। এবার খরাকালীন শত শত হেক্টর মরিচ খেত নষ্ট হয়েছে পুরো উত্তরাঞ্চলজুড়ে। আর এ কারণে কাঁচা মরিচের সংকট বেড়েছে। তবে দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মরিচ খেতগুলো আবার সজীব হচ্ছে। নতুন পাতা গজিয়ে মরিচের ফলন পেতে মাসখানেক অপেক্ষা করতে হবে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া জেলায় সর্বাধিক ৮ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। বিঘা প্রতি মরিচের ফলন হিসাব করা হয়েছে ১৫ থেকে ২০ মন। কিন্তু কৃষি বিভাগ বলছে, খরার কারণে উত্তরাঞ্চলজুড়ে বিপুল পরিমাণ মরিচখেত নষ্ট হয়েছে। ফলে ভরা মৌসুমেও কাঁচামরিচের সংকট দেখা দিয়েছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।