চাপ বাড়বে মনে করে বিএনপি


যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী প্রতিনিধিদলের সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করেন, তাদের এ সফরের মধ্য দিয়ে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের ওপর চাপ বাড়বে। ক্ষমতাসীনদের কথাবার্তায় সেরকম ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। বিশ্বজনমত এখন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। তাই সরকার চাইলেও এবার যেনতেন নির্বাচন করতে পারবে না। সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ রাজপথের আন্দোলনে কাজে লাগাতে পারলে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ও দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ৩ দিনের সফর শেষে শুক্রবার বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। সফরকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন তারা। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি না হলে তারা এমন এলোমেলো কথা বলত না। তবে চাপ মানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাদ এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। সরকারের পতন নির্ভর করবে আমরা কতটা সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি। বিশ্বজনমত আজ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। সরকারের ওপর বিদেশি চাপ আমাদের সেই আন্দোলনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি প্রতিনিধিরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেনি। কিন্তু তারা তো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও কালো আইন সংশোধনের কথা বলছেন। এগুলো যথাযথভাবে করা এ সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তারা তো আকাম-কুকাম করে টিকে আছে। গয়েশ্বর রায় বলেন, বহির্বিশ্বে বিএনপি সম্পর্কে ভুল ধারণা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখার পর বিএনপিকে নিয়ে তাদের ধারণার পরিবর্তন হয়েছে বলে আমরা মনে করি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তি এ দুটি কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় এ আওয়ামী লীগ যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে তারা দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধীদের টুঁটি চেপে ধরা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, মেগা দুর্নীতিতে দেশ ধ্বংসপ্রায়। এগুলো শুধু দেশ নয় বিশ্বের জন্যও উদ্বেগের বিষয়। কারণ পৃথিবীটা এখন বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়। গণতন্ত্র বিঘ্নিত হলে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সৃষ্টি হলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য রয়েছে তাদের মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি হবে। এসব কারণে আজকে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দেশগুলোর প্রতিনিধি যারা আসছে সরকারকে অনুরোধ করছে যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করে। তিনি বলেন, সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে। তারা যদি মনে করে আবার সেভাবে ক্ষমতায় আসবে সেটা হবে না। কখন তাদের পতন হবে সেটা সময় বলে দেবে।