সাদা পোশাক আতঙ্কে বিএনপি নেতাকর্মীরা


রাজধানীসহ সারা দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন বিরাজ করছে সাদা পোশাক আতঙ্ক। শুক্রবার রাজধানীর আজিমপুর থেকে ছয় ছাত্রদল নেতাকে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর তাদের মাঝে এ আতঙ্কের মাত্রা বেড়েছে। একটি নম্বরবিহীন হায়েস মাক্রোবাসে (ইঞ্জিন নং ০৪৪৭১৩৩) ওই ছাত্রদল নেতাদের তুলে নেওয়া হয়। সরকার পতনের একদফা দাবিতে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি শুরুর পর থেকে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীকে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেওয়ার একের পর এক অভিযোগ আসছে। যাদের তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে বলা হচ্ছে, পরে বিভিন্ন মামলায় তাদের আদালতে হাজির করা হচ্ছে। সবশেষ আজিমপুর থেকে তুলে নেওয়া নেতাকর্মীদেরও ব্যাপারে শনিবার সারাদিন কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেছিলেন, এ বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। বিস্তারিত জানতে তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়ও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছিলেন। অবশেষে রাতে ডিএমপির মিডিয়া শাখা থেকে এক বার্তায় জানানো হয়, রাজধানীর লালবাগে নাশকতার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিকালে তিনটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৭ রাউন্ড গুলিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছয় নেতাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতীতের দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতারের নির্দেশনা ছিল। এবার এ ধরনের নির্দেশনা নেই। তাই গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কৌশলে এগোচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যাদের নামে মামলা আছে, বা যারা ওয়ারেন্টের আসামি তাদের কোনো ছাড় দিচ্ছে না পুলিশ। আটকের পর ভালোভাবে যাচাই শেষেই তাদের আদালতে হাজির করা হচ্ছে। আগের মামলা বা ওয়ারেন্ট না থাকলেও নতুন কোনো ঘটনায় জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলেও তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা সক্রিয় রয়েছেন তাদের শনাক্তেও কাজ করছে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের কৌশলী ভূমিকায় আতঙ্কে আছেন সংগঠনের হিটার কর্মীরা। সিসি ক্যামেরা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ এবং স্টিল ছবি দেখে শনাক্ত করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। ছাত্র-যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা রয়েছেন এ তালিকায়। এ কারণে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। এসব নেতাকর্মীর অনেকেই বিদেশি সিম ব্যবহার করছেন। এতে প্রথম তাদের গতিবিধি বুঝতে পুলিশের বেগ পেতে হয়েছে। দুবাই, কুয়েত ও সিঙ্গাপুরের সিম ব্যবহার করে অনেক নেতা দেশে বসে কর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ডিএমপির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সামনের দিনগুলোতে আলোচনায় আসার জন্য দলের অনেক নেতা মারমুখী ভূমিকায় থাকবেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই নেতাদের অনুসারীদের নজরদারিতে আনা হয়েছে। তাদের গতিবিধি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।