চিকিৎসক —এর পরামর্শ মেনে চলুন ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সচেতন থাকুন – তৌফিক সুলতান


চিকিৎসক —এর পরামর্শ মেনে চলুন ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সচেতন থাকুন – তৌফিক সুলতান

ডেঙ্গুর সূত্রপাত বিষয়ে সবাই কম-বেশি জানেন। এডিস মশার প্রজনন যাতে বৃদ্ধি না পায় সেটিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। মশার কামড় থেকে বেঁচে চলতে হবে। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশাগুলো বাসাবাড়ি ও আঙিনার বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে, বংশবিস্তার করে। দীর্ঘদিন কোনো জায়গায় পানি জমে থাকলে সেখানে এডিস মশা ডিম পাড়ে। তাই ডাবের খোল, ক্যান, টায়ার, ফুলের টবসহ পানি জমে থাকে এমন জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। ডেঙ্গু নির্মূল করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
ভাইরাস বহনকারী কোনো ডেঙ্গু মশা একজন ব্যক্তিকে কামড়ালে, ভাইরাস মশার লালার সঙ্গে মিশে রক্তে প্রবেশ করে। এটি রক্তের শ্বেতকণিকাতে প্রবেশ করে,সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং কোষের ভিতর প্রজনন করে।
ডেঙ্গু মাঝেমধ্যে শরীরের অন্যান্য সিস্টেমকে আক্রান্ত করতে পারে। একটি চেতনা হ্রাস মাত্রা তীব্র ক্ষেত্রে ০.৫-৬.০% হয়, যা মস্তিষ্কের ভাইরাস সংক্রমণ দ্বারা বিশেষণীয় হয় বা পরোক্ষভাবে অত্যাবশ্যক অঙ্গহানি হতে পারে যেমন, লিভার।
লক্ষণ এবং উপসর্গ হলো সাধারণত, ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত ৮০% মানুষের কোনো লক্ষণ থাকে না। অথবা শুধুমাত্র হালকা জ্বর দেখা দেয়। ৫% মানুষের ক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থতা দেখা দিতে পারে এবং তা আশঙ্কাজনক হতে পারে। জীবাণুর সংস্পর্শে আসার ৩-১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৪-৭ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়। ডেঙ্গু কবলিত এলাকা থেকে ফিরে আসার ১৪ দিন পর জ্বর বা অন্যান্য উপসর্গ হলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তা ডেঙ্গু জ্বর নয়। শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বর, সাধারণ সর্দি-কাশি এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণের লক্ষণ ​​দেখা দেয় যেমন বমি ও পাতলা পায়খানা এবং তাদের জটিলতার সম্ভাবনা বেশি থাকে,এডিস মশা শুধু সন্ধ্যা বেলায় কামড়ায়। ফলে দিনের বেলায়ই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিভিন্ন স্থানে ৪/৫ দিন জমে থাকা বৃষ্টির পানি ও পরিষ্কার পানি হল এডিস মশার বংশ বিস্তারের স্থান, তাই মশা বংশ বিস্তার বন্ধ করতে পারলে এ রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনাও কমে যায়। এটি বর্ষা মৌসুমেই সাধারণত দেখা দেয়। এডিস মশা পায়ে কামড়ায় তাই সন্ধ্যায় পা ঢেকে রাখতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। রোগের লক্ষণের উপর চিকিৎসা নির্ভর করে, বাড়িতে নিয়মিত দেখাশোনার সঙ্গে ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি থেকে শুরু করে হাসপাতালে ভর্তি করে ইন্ট্রাভেনাস থেরাপি বা ব্লাড ট্রান্সফিউশন পর্যন্ত।
সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নির্ভর করে আক্রান্ত ব্যাক্তির শারীরিক অবস্থার উপর, বিশেষ করে যাদের স্বাস্থ্যের সমস্যা আগে থেকেই আছে।ডেঙ্গু ভাইরাসের কোন স্বীকৃত টিকা ভ্যাকসিন নেই। সুতরাং প্রতিরোধ নির্ভর করে জীবাণুবাহী মশা নিয়ন্ত্রণ এবং তার কামড় থেকে সুরক্ষার উপর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পাঁচটি মৌলিক দিশাসমেত সংবদ্ধ একমুখী নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর সুপারিশ করেছে:

(১) সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার করে রোগ নিয়ন্ত্রণে সুসম্বদ্ধ প্রয়াস।
(২)প্রচারণা, সামাজিক সক্রিয়তা, এবং জনস্বাস্থ্য সংগঠন ও সমুদায়সমূহকে শক্তিশালী করতে আইন প্রণয়ন।
(৩) স্থানীয় অবস্থায় পর্যাপ্ত সাড়া পেতে সক্ষমতা বৃদ্ধি।
(৪) স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিভাগসমূহের মধ্যে সহযোগিতা (সরকারী ও বেসরকারী)
(৫) যে কোন হস্তক্ষেপ যাতে সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে হয় তা সুনিশ্চিত করতে প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন।

এখন মশার উপদ্রব, ডেঙ্গুর উপদ্রব। এই ক্ষেত্রে সবারই কিছু করণীয় আছে।আপনারা যার যার নিজেদের ঘর-বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন। মশার হাত থেকে বাঁচতে হলে মশারির ব্যবস্থা করতে হবে।
পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছে কি না; বিনা পয়সায় যে ৩০ প্রকার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, সেটা মানুষ ঠিক ভাবে পাচ্ছে কি না তা দেখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে মানুষের চিকিৎসা সেবা।
শুধু মশা মেরেই শেষ করা যাবে না,নিজেদের সচেতন হতে হবে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্লেটলেট ২০ হাজারের নিচে নেমে গেলে শরীরে রক্তক্ষরণের আশংকা বেড়ে যায়। ব্যথা কমাতে পেইনকিলার খাওয়ার কারণেও প্লেটলেট কমে যেতে পারে। এতেও রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় পেপে পাতার রস গ্রহণে শরীরে প্লেটলেট সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলেও, সরাসরি ডেঙ্গু নিরাময়ে তার কার্যকরীতা এখনও প্রমাণিত হয়নি।
দিনে ৪ গ্রামের বেশি প্যারাসিটামল না খাওয়াই ভালো। যাদের আগে থেকে হার্ট, লিভার বা কিডনিতে সমস্যা আছে, তারা ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
প্লেটলেট সংখ্যার বিষয়টি বুঝে নিন: প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা রক্তেরই অংশ। এরা আমাদের রক্ষক্ষরণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত প্লেটলেটের ভ্যালু জেনে রাখবেন। কখনো এর কম হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্লেটলেট সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। সাধারণত মানুষের রক্তে প্লেটলেট সংখ্যা প্রতি ১০০ মিলিলিটারে দেড় থেকে চার লাখের মধ্যে থাকলে সেটা স্বাভাবিক। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যায়। ডেঙ্গু জ্বরে প্লেটলেটের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যেতে পারে। প্লেটলেট লাখের নিচে নেমে আসাটা রোগীর জন্য অতীব ঝুঁকিপূর্ণ। এমন হলে প্রতিদিন একবার করে টেস্ট করতে হয়।
জ্বর নামার পর করণীয় কোনো রকম চিকিৎসা না নিয়েও অনেক সময় জ্বর ছেড়ে যেতে পারে। ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে জ্বর নেমে গেলে অনেকেই নিজেকে সুস্থ ভাবেন। এটা একেবারেই করা যাবে না। জ্বর কমার পরও অসুবিধা হতে পারে। জ্বর ছাড়ার ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় শরীরে র‌্যাশ, এলার্জি বা ঘামাচির মত হতে পারে। এ সময় ব্লাড টেস্ট করে রক্তে প্লেটলেটের অবস্থা জেনে নেবেন। ডেঙ্গু হিমোরোজিক ফিভার হলে এ পরীক্ষাটা অবশ্যই করাবেন। জ্বর ছাড়ার পরের সময়টা অনেক ক্রিটিকাল। জ্বর কমে আসার ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তীব্র পেট ব্যথা, ক্রমাগত বমি, নাক বা দাতের মাড়িতে রক্তক্ষরণ হলে, যকৃত বড় হয়ে গেলে, রক্তবমি হলে, মল কালো হলে কিংবা প্রসাব কমে গেলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। এ সময় বিন্দুমাত্র অবহেলা করা চলবে না। হঠাৎ চিকিৎসা বন্ধ করলে ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম দেখা দিতে পারে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে মশারি ব্যবহার করুন ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। কেবল ভাইরাসবাহী এডিস মশার কামড়েই ডেঙ্গু হতে পারে। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশারির বাইরে বের হলে ফুল হাতা পোশাক পরতে হবে। সুরক্ষার জন্য মশা মারার স্প্রে বা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
পুনরায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। সুস্থ হয়ে গেলেই রোগী যে ঝুঁকিমুক্ত, তা কিন্তু নয়।কেউ যখন ডেঙ্গুর একটি ধরণে আক্রান্ত হয়, সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্ম নেয়। কিন্তু তার মানে এই না যে রোগী আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবেন না। বরং তিনি আবার ডেঙ্গুর শক্তিশালী ধরণগুলোতে আক্রান্ত হতে পারেন। তখন হেমোরেজিক ফিভার বা শক সিন্ড্রমের মত জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ বারের সময় ডেঙ্গুর শক্তিশালী অন্য কোনো ভ্যারিয়্যান্ট থেকেও পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) মতে, একবার ডেঙ্গু হয়ে গেলে পূণরায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে ভ্যাক্সিন নেওয়া নিরাপদ।
প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। দেখতে দেখতে প্রায় মহামারির রূপ নিয়েছে ডেঙ্গুজ্বর। ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগী ও এ রোগে মৃতের সরকারি আর বেসরকারি সংখ্যায় বিস্তর ফারাক। হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগী নিয়ে হিমশিম অবস্থায়। মেয়র-মন্ত্রীদের বক্তব্যে রোগের প্রকোপ কমছে না, শুধু বাড়ছেই। কথার দাপটে এডিস মশা মরবে না। বসবাস করতে হবে মশার সঙ্গেই। মশা এতো বেশি যে সে তুলনায় করপোরেশনগুলোর সক্ষমতা ও জনবল নেই। আবার মশা মারার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও অভিযোগ উঠছে। ওষুধ কার্যকর না হওয়ার মশা মরছে না। ফলশ্রুতিতে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত সিটি করপোরেশন ব্যর্থ। এর কারণ তারা মশা নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত ছিলো না। তারা হয়তো বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। তাই যা হওয়ার তাই হয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কতৃপক্ষ কে আরও কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ :

➤ ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতিদিনই বাড়ছে। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এডিস মশার বিস্তার ঘটার কারণে এমনটি হচ্ছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে বলে বিভিন্নস্থানে পানি জমছে। সেখানে এডিস মশা ডিম দিচ্ছে। মশার বংশবৃদ্ধি বেশি বেশি হচ্ছে। মশার সংখ্যা বাড়ার কারণে সেসব মশা কামড়াচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির জমে থাকা পানি কিংবা টপে রাখা পানি অথবা আসেপাশের কোনো স্থানে যেন এডিস মশা জন্ম না নিতে পারে। রোধ করতে হবে এডিস মশার বংশ বিস্তার।
➤ জ্বর হলে অবহেলা করা যাবে না। অমুক ওষুধ খেলে জ্বর ভালো হয়ে যাবে, এজাতীয় ভাবনা যে কারো জন্যে ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। অবহেলা করে ঘরে বসে থাকা যাবে না। জ্বর হলে ডাক্তার দেখাতেই হবে। অন্তত ডেঙ্গু হয়েছে কী না তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। জ্বর হলেই আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। এমনকি ডেঙ্গু হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই যদি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়। গত কয়েকদিনে কয়েকজন যে মারা গেলেন তারা তাদের জ্বরকে সাধারণ ভাইরাস জ্বর মনে করেছিলেন। তাই ঘরে বসে ছিলেন। হঠাৎ করে শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ায় আর সামাল দিতে পারেননি।
➤আরেকটি বিষয় হলো- ডেঙ্গু জ্বরের সময় ভীষণ ব্যথা হয় বলে অনেকে বিভিন্ন রকমের ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। নিয়ম হচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। তা না হলে পরিস্থিতি বিপদজনক হতে পারে। জ্বর হলে কী ধরনের খাবার খাবেন, সে বিষয়েও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু করা যাবে না।
➤যদি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে ডেঙ্গুজ্বরের রোগীর সংখ্যাও বাড়তে থাকবে আগামী শীতকাল পর্যন্ত। শীতকালে এডিস মশা থাকে না। সাধারণত সেসময় ডেঙ্গুজ্বর হয় না। মূল সমস্যা হচ্ছে মশার সংখ্যা বাড়ছে। তাই অবশ্যই অবশ্যই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
➤এছাড়াও, সিটি করপোরেশনগুলো যেভাবে ওষুধ ছিটাচ্ছে সেভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ করপোরেশনের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। দুটি করপোরেশন যদি এক সঙ্গে কাজ না করে তাহলে ডেঙ্গুর মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। যদি উত্তর সিটি করপোরেশন মশা মারতে শুরু করে তাহলে মশা দক্ষিণে চলে আসবে। আবার দক্ষিণে মশা মারতে শুরু করলে সেগুলো উত্তরে চলে আসবে। তাই একই সঙ্গে দুটি করপোরেশনে মশা মারা শুরু না করলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষদেরও সচেতন থাকতে হবে।
➤ ঘরের বাইরে মশা নিয়ন্ত্রণ করা সিটি করপোরেশনের কাজ। আর ঘরের ভেতরের মশা নিজেদেরই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সিটি করপোরেশন তো ঘরে ঘরে গিয়ে মশা মারতে পারবে না। তাই নিজের ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিজেকেই করতে হবে। ঘরে বা ছাদে রাখা গাছের টব, এসির নিচে, ফ্রিজের নিচে তিন থেকে পাঁচদিনের বেশি জমা পানি রাখা যাবে না। এগুলো নিজেদেরকেই মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ, নিজেদেরকে সচেতন হতে হবে আশপাশের মানুষদের কে সচেতন করতে হবে। নিজেদের ঘরের আশপাশের জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে।
➤ নিজেকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করার জন্যে আরো কিছু নিয়ম মানতে হবে। যেমন, কেউ যদি দিনের বেলায় ঘুমান তাহলেও মশারি টাঙাতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ফুলহাতা জামাকাপড় পরিয়ে রাখতে হবে যাতে মশা না কামড়াতে পারে।
➤ পুনরার্বৃত্তি করছি, ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই চলতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। কোনো অবস্থাতেই কেউ যেনো অবহেলা করে ঘরে বসে না থাকেন। আবারও বলছি, যেকোনো ধরনের জ্বর হোক না কেনো জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তৌফিক সুলতান : ইন্টার্ন শিক্ষার্থী, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
towfiqsultan.help@gmail.com