সরকার গঠন নিয়ে নওয়াজ ও বিলাওয়ালের দলের শীর্ষ নেতারা যে সিদ্ধান্ত নিলেন


পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।এমতাবস্থায় জোট সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে দেশটিতে। জোট সরকার গঠনে সম্মত হয়েছে পাকিস্তানের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিটি)।তবে এখনও পর্যন্ত যে ফল এসেছে তাতে এই দুটি দল মিলেও সরকার গঠন করতে পারছে না। কারণ সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৪ টি আসন পায়নি তারা। এমতাবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন মুসলিম লিগ ও পিপিপি নেতারা। রোববার পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়ালের বাসায় মুসলিম লিগ ও পিপিপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই জোট সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। জোট সরকার গঠনে জন্য পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজকে (পিএমএল-এন) সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন ১৮-২০ স্বতন্ত্র প্রার্থী। রোববার এমন দাবি করেছে নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি দল। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এ খবর জানিয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ জানিয়েছে, দক্ষিণ পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও রাওয়ালপিন্ডি থেকে পিএমএলএন-পিপিপি সঙ্গে জোট সরকারে যোগ দেওয়ার কথা বলেছেন নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে একাধিক বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পিপিপি ও পিএমএল-এন। দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে জাতীয় পরিষদে জোট সরকার গঠন করবেন স্বতন্ত্ররা। দলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, তারা ধারণা করছে, জোট সরকার গঠনে স্বতন্ত্রদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পিপিপি জানিয়েছে, স্বতন্ত্রদের জন্য আমাদের দরজা সব সময়ই খোলা আছে। তাছাড়া স্বতন্ত্রদের প্রতিও দৃষ্টি রেখেছে পিপিপি। তারা বলছে, নির্বাচনের পর সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পিপিপি ও পিএনএল-এন-এ যোগ দেওয়ার বিষয়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কাছে জানতে চাইলে দলের সিনিয়র নেতারা বলেন, এ সব ফালতু কথা। এটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৩৩৬ আসনের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হয় ২৬৬ আসনে। বাকি ৭০টির মধ্যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন। তিন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল ২৬৩ আসনে। রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন\'র প্রতিবেদনে দেখা যায়—২৬৩ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫৬ আসনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাথমিক ফলাফলে ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৩ আসন, নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ (পিএলএম-এন) পেয়েছে ৭৩ ও বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি আসন। দেশটির সরকার গঠনে প্রয়োজন অন্তত ১৩৪ আসন। এমন পরিস্থিতিতে এক সময়ের বৈরী পিএলএম-এন ও পিপিপি মিলে সরকার গঠন করার সম্ভাবনার কথাই বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডন\'র হিসাবে এখন এই দুই দলের আসন ১২৭টি। সেই জাদুকরী সংখ্যা থেকে তারা সামান্য পিছিয়ে। আজ পাকিস্তানের স্থানীয় সময় ভোররাত ১২টা ১১ মিনিটে পিএলএম-এন\'র মুখপাত্র মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক্স বার্তায় জানিয়েছেন—গতকাল পিএলএম-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও পিপিপির কো চেয়ারম্যান আসিফ জারদারির বৈঠক থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। দল দুটি আরও আলোচনায় রাজি হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও তিনি এক্স বার্তায় জানান। ডন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পিএলএম-এন ও পিপিপির মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পাশাপাশি ১৭টি আসন পাওয়া এমকিউএম-পির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন পিএলএম-এন নেতারা।