কল্যাণ পার্টি থেকে অতিরিক্ত মহাসচিব সাকীবের পদত্যাগ


মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকীব। সোমবার দলের নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাকীব বলেন, দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম এমপি হওয়ার পর দলের আদর্শ থেকে সরে এসেছেন। একইসঙ্গে দলে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন তিনি। এসব কারণে কল্যাণ পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছি। দলটির আরও ৮-১০ জন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে পদত্যাগ করবেন বলে দাবি করেন তিনি। সাকীব আরও বলেন, স্যার (ইবরাহিম) বহুদিন ধরে হুমকি দিচ্ছিলেন, নির্বাচনে সম্পৃক্ত না হলে ক্ষতি করবে। পরে পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে নির্বাহী কমিটির সভায় দল থেকে পদত্যাগ করলাম। এরপরও আমাকে আবারো হুমকি দেওয়া হয়েছে, আমার ক্ষতি করবে। স্যার (ইবরাহিম) অফারও করেছেন ব্যাংকের ডাইরেক্টর, তিতাসের ডাইরেক্টর, যে কোনো একটি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করবেন। কিন্তু রিজিকের মালিক কি জেনারেল ইবরাহিম? আমি একজন অ্যাডভোকেট, আমার যেহেতু পরিবার আছে, তাই ভয়ে এতদিন কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলাম না। আল্লাহর ওপর ভরসা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। জেনারেল ইবরাহিমের সঙ্গে দলটির অধিকাংশ নেতারই দ্বিমত রয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সাকীব বলেন, আমি ইবরাহিম সাহেবের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ তায়ালা উনাকে বুঝ দান করুন এবং জনগণের মনের ভাষা বোঝার তৌফিক দান করুন। শুধুমাত্র এমপি হওয়া একজন মানুষের লক্ষ্য হতে পারে না। রাজনৈতিক দল হতে হবে জনগণের কল্যাণের জন্য। শুধুমাত্র নিজের পরিবারের বিলাসিতার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করাই যাদের উদ্দেশ্য তাদের দিয়ে জনগণের কোনো কল্যাণ হবে না। অতএব বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে একমত পোষণ করে ইবরাহিম সাহেবের হুমকি উপেক্ষা করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন নিজেকে পুনরায় শামিল করলাম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, সাকীব পদত্যাগ করেছেন। অনেক দিন ধরে দলে ছিল, তার জন্য আমার শুভেচ্ছা। সাকীবের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এই রাজনীতিবিদ বলেন, উনি (আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকীব) যেটা চান সেটা না দিলে এই বিপদ। উনি চকোরিয়ায় রাজনীতি করতে চেয়েছেন। কিন্তু সেখানে কল্যাণ পার্টি নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। কারণ সেখানে আমি আমার দলের স্বার্থ দেখব, নাকি যে দলটি আওয়ামী লীগ আমাকে সমর্থন দিয়েছে তাদের স্বার্থ দেখব। ওই উপজেলা ছাড়াও তো দেশে আরও চার’শ উপজেলা আছে। আর আমার কি কোনো দায়িত্ব দেওয়ার পজিশন আছে? যে আমি তাকে কিছু বানাব। সৈয়দ ইবরাহিম আরও বলেন, বেশ কিছুদিন আগে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ৬ মিনিটের অডিও শোনানো হয়েছিল, সেখানে কার কণ্ঠ ছিল, সেটা তো সাকীবের। সেখানে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলেছিল। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে কল্যাণ পার্টিতে বিভক্তি দেখা দেয়। তখন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে ‘বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন পারভেজকে নতুন কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আবু হানিফকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়।