‘ডামি’ নির্বাচন করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে আ.লীগ: মঈন খান
অনলাইন নিউজ ডেক্স
ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, সত্যিকার প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। মানুষের ন্যূনতম অধিকারও আজ সরকার হরণ করেছে। ‘ডামি’ ও ‘বানরের পিঠা ভাগাভাগির’ নির্বাচন করে দেশে একদলীয় সরকার কায়েম করেছে। দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। সেই কারণে গণতন্ত্র, ভোটাধিকারসহ মানুষের সব অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিএনপি রাজপথে নেমেছে। রাজপথে শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে কোটি কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনব।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর পূর্ব জুরাইনে কারাগারে মৃত্যুবরণ করা বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি ইদ্রিস আলীর বাসায় যান। তার স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজখবর নেন। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবীনসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের ২২টি পরিবারের পরিবর্তে আজ বাংলাদেশে ২২০টি ধনী পরিবার সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, তারা দেশের সব সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়ে যাচ্ছে। দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
বিএনপির অত্যন্ত একজন নিরীহ কর্মী ইদ্রিস আলী মোল্লা উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির এই সিনিয়র সদস্য বলেন, যেদিন গ্রেফতার হন তার আগে পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না তিনি এমন কোনো আইনের বাইরে কোনো কর্মকাণ্ড করেছেন, যে কারণে তাকে গ্রেফতার হয়ে এভাবে জীবন দিতে হবে। আজকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এ রকম- এখানে যদি কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাহলে যেটা হয়ে যায় অপরাধ। মানুষের যে মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার, ভোটাধিকার- আজকে দেশের মানুষ সব হারিয়েছে। আমরা তার প্রতিবাদে রাজপথে দাঁড়িয়েছি। রাজপথে কালো পতাকা দেখাতে চেয়েছি। রাজপথে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এ সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চেয়েছি। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ন্যূনতম মানুষের যে অধিকার তা পর্যন্ত সরকার আমাদের কাছ থেকে হরণ করে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, একজন তৃণমূলের মানুষের ওপর সরকারের কী প্রতিহিংসা থাকতে পারে; যার প্রমাণ ইদ্রীস আলী। যে কারণে তাকে ঘর থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। হাসপাতালে অসুস্থ হলে কোনো চিকিৎসা পায়নি। পাঁচ দিন পরে তার মৃতদেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মঈন খান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূলের রাজনীতি করেন। তৃণমূলের প্রতিটি নেতাকর্মী সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল আছেন। এ বিষয়ে তিনি সব সময় সচেতন- আমাদের নেতাকর্মীরা কে কোথায় কী অবস্থায় আছেন, দু:খে আছে না কষ্টে আছে সেটা আমরা কোনোভাবে লাঘব করতে পারি কিনা। সে কারণে এখানে এসেছি। একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা বাংলাদেশে আন্দোলন করছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। এ দেশের লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধা জীবন দিয়েছিল। ইদ্রিস আলীর কদমতলী থানা বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এর চেয়ে বড় গর্ব আর কী হতে পারে। অথচ একজন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তিনিও কিন্তু এ সরকারের রোষানল থেকে রেহাই পাননি।
এ সময় ইদ্রিস আলীর সন্তানের দিকে তাকিয়ে মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তো রাজপ্রসাদ চায় না। লাখ লাখ কোটি টাকা চায় না। ইদ্রিস আলী কি লাখো কোটি টাকা চেয়েছিলেন? ১০তলা প্রাসাদ চেয়েছিলেন? তিনি ভোটের অধিকার চেয়েছিলেন; যার পরিণতি জেলে যেতে হয়েছে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে। সন্তান তার বাবা, আর স্ত্রী তার স্বামী হারিয়েছেন। এর চেয়ে দু:খজনক ও লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।
পরে সদ্য কারামুক্ত বিএনপি কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক অসুস্থ সালাউদ্দিন আহমেদের শ্যামপুরের পশ্চিম কদমতলীর বাসায় যান ড. মঈন খান। এ সময় সালাউদ্দিন আহমেদের শারীরিক খোঁজ নেন তিনি।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।