বহিস্কার হলেও প্রশাসনের ‘আশীর্বাদ’ পায় ওরা


বহিস্কার হলেও প্রশাসনের ‘আশীর্বাদ’ পায় ওরা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা ঘটনায় বারবার শিরোনামে আসছে ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, সাংবাদিক হেনস্তা, আবাসিক হল ভাঙচুর, ছিনতাই, মারামারিসহ বিভিন্ন ঘটনায় ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীকে বহিস্কারও করেছে প্রশাসন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে গত এক বছরে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। তবে চাপে পড়ে ছাত্রলীগের ব্যাপারে নমনীয় থাকে প্রশাসন। চবিতে বহিস্কারের পরও ছাত্রলীগ নেতাদের পরীক্ষা দেওয়ার নজির আছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে শাস্তি ঘোষণার পরও ক্যাম্পাসে \'রাজত্ব\' করছে বহিস্কৃৃতরা।জানতে চাইলে চবি উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার বলেন, \'অপরাধীর কোনো দল নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিয়েছে। সাংগঠনিকভাবেও উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখনও যেসব ঘটনার তদন্ত হচ্ছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে অপরাধীরা পার পাবে না।\' সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা চবির সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট ড. শিপক কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, \'তদন্ত কমিটি চাইলেও হুটহাট সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তথ্যপ্রমাণ নিয়ে অপরাধী শনাক্ত করতে হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার, আমরা তা করছি।\' মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহেনা আক্তার বলেন, \'মেডিকেলে নানা ঘটনায় আমরা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিস্কার করেছি। তাদের সংশোধন হওয়ার জন্যও সুযোগ দিয়েছি। এটির অপব্যবহার করছে কেউ কেউ। আমরা এবার আরও কঠোর হব।\'চবিতে বহিস্কার ১৮ জন: চবিতে গত ১১ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়া হলে ছাত্রলীগের চার নেত্রীর মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় উপতথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক তাসফিয়া জান্নাত নোলককে দেড় বছরের জন্য বহিস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাসফিয়া ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। কিন্তু বহিস্কারের পরও তিনি প্রভাব বিস্তার করছেন ছাত্রী হলে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে না যাওয়া সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বহিস্কার দু\'জন হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আরশিল আজিম এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শোয়েব মোহাম্মদ আতিক। গত ৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দুই কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন- সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ আর শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শহিদুল ইসলাম। গত ২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দু\'পক্ষের সংঘর্ষ ও রাম দা উঁচিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় ছয় ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন- সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি শিকদার, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের লাবিব সাঈদ, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সিফাতুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাহিদুল ইসলাম, একই বর্ষের ইতিহাস বিভাগের মো. মোবারক হোসেন। এ ছাড়া ২৪ আগস্ট শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আটক ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী জোবায়ের হোসেনকে দুই বছরের জন্য বহিস্কার করে কর্তৃপক্ষ। গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দু\'দিন রাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ। এতে উভয় পক্ষের ১১ নেতা আহত হন। এ ছাড়া আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। দু\'দিনের ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে বহিস্কার করে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন- ফাইন্যান্স বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগের একই বর্ষের নয়ন দেবনাথ, বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম। তবে ক্যাম্পাস ছাড়েননি তাঁদের বেশিরভাগই।পরীক্ষা দিলেন বহিস্কৃত শিক্ষার্থীরা: চবি ছাত্রলীগের দু\'পক্ষের সংঘর্ষের পর বহিস্কৃত এক শিক্ষার্থী গত জানুয়ারিতে পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনি হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিক্সটি নাইনের কর্মী মাহমুদুল হাসান (ইলিয়াস)। ৫ ও ৬ জানুয়ারি দুই রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের ১১ নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ইটের আঘাতে আহত হন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ ঘটনায় মাহমুদুল হাসানসহ ছয় শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়। লিখিত আদেশ তৈরি করে কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানালেও ঘটনার পর মাহমুদুল হাসান কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ৪২০ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিয়েছেন।বহিস্কার হয়েও পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনা এটি প্রথম নয়। গত ৩ আগস্ট ছাত্রী হেনস্তার দায়ে বহিস্কৃত হয়েও পরীক্ষা দিয়েছিলেন ছাত্রলীগের দুই কর্মী ইমন আহম্মেদ ও রাকিব হাসান। তাঁরা ২০২১ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে হেনস্তা করার দায়ে এক বছরের জন্য বহিস্কৃত হয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তাঁদের পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সংঘর্ষে জড়ান শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের অনুসারীরা। এর চার দিন পর ১২ শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর বহিস্কৃত হয়েও দুই মাসের মাথায় ডিসেম্বরে স্নাতকের প্রথম বর্ষের তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেন। তখনও তিন বিভাগের প্রধান দাবি করেন, তাঁরা চিঠি পাননি। এই তিন ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের বর্তমান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. নাঈম, একই বর্ষের বাংলা বিভাগের সাইফুল ইসলাম ও আরবি বিভাগের তৌহিদ ইসলাম।মেডিকেল কলেজেও অপরাধীরা পায় আশীর্বাদ: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে আকিব নামে এক শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করায় পাঁচ শিক্ষার্থী অভিজিত দাশ, সৌরভ ব্যাপারী, সাজেদুল ইসলাম, জাহেদুল ইসলাম ও ইমতিয়াজ আলমকে দুই বছরের জন্য বহিস্কার করা হয়। কিন্তু মাস কয়েক নীরব থেকে আবারও ক্যাম্পাসে দাপিয়ে বেড়াতে থাকেন তাঁরা। একই ঘটনায় এক থেকে দেড় বছরের জন্য বহিস্কার হওয়া অন্য ছয়জনও বহাল তবিয়তে আছেন ক্যাম্পাসে। তাঁরা হচ্ছেন- সাজু দাস, রিয়াজুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মাহিন আহমেদ, জুলকাফল মুহাম্মদ শোয়েব ও চমন দাশ। বহিস্কারাদেশ দিলেও তাঁদের সংশোধন হওয়ার জন্য সুযোগ দিয়েছে প্রশাসন। এটিকেই কাজে লাগিয়ে ক্যাম্পাসে সম্প্রতি চার শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন তাঁদের কয়েকজন মিলে।

সর্বশেষ :

চাকরি জীবনে একবার গুরুদণ্ড পেলে ওসি হতে পারবেন না   চাকরি জীবনে একবার গুরুদণ্ড পেলে ওসি হতে পারবেন না পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার   পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ভারতের   সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ভারতের মোহাম্মদপুরের গ্যাং প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৪২   মোহাম্মদপুরের গ্যাং প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৪২ সৌদিতে নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা আনছে উবার   সৌদিতে নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা আনছে উবার নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।  নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’   ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন।  মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি।   মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না।   নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে।  মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন।   নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।   নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’ ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন। মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি। মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না। নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন। নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মামদানির জয়ে নিউইয়র্কের আবাসন খাতে আতঙ্ক   মামদানির জয়ে নিউইয়র্কের আবাসন খাতে আতঙ্ক শালিখায় চায়না জালে সয়লাব, বিলুপ্তির পথে দেশি মাছ   শালিখায় চায়না জালে সয়লাব, বিলুপ্তির পথে দেশি মাছ