চরম হিন্দুত্ববাদীদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তুলসি গ্যাবার্ডের


নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রাক্তন ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি তুলসি গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান হিসাবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর, তার বিরুদ্ধে খোলাখুলি প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরমধ্যে, চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদের অনুসারী হিসাবে বর্ণিত একটি গোষ্ঠির সাথে তুলসির ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততার প্রতিবেদনগুলো সামনে আসতে শুরু করেছে। একজন ঊর্ধ্বতন প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তা পলিটিকোকে দেয়া একটি সাক্ষাতকারে বলেছেন, গ্যাবার্ডকে ট্রাম্পের মনোনীত করা একটি উল্টো মোড় এবং পথচ্যুত সিদ্ধান্ত। এছাড়া, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন সিএনএনকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তুলসি গ্যাবার্ডকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মন্ত্রিপরিষদ-স্তরের নিয়োগ› বলে অভিহিত করেছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ম্যাট গেট্জের মনোনয়ন এবং তুলসির বিষয়ে বোল্টন বলেন, ‹এখন আমরা দেখতে যাচ্ছি যে আমেরিকান সিনেট উঠে দাঁড়াতে পারে এবং এমন দুই ব্যক্তিকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে যারা সম্পূর্ণ অযোগ্য, পেশাগতভাবে অনুপযুক্ত এবং এই চাকরিগুলো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় নৈতিক চরিত্রের সত্যিই অভাব রয়েছে। আমি মনে করি এই ভোট তাদের উভয়ের বিরুদ্ধে ১শ’ বনাম শূণ্য হওয়া উচিত।’ দ্য ডেইলি মেইল জানিয়েছে যে, তুলসি এবং তার স্বামী আব্রাহাম উইলিয়াম্স সায়েন্স অফ আইডেন্টিটি ফাউন্ডেশন (এসআইএফ) এর সাথেও পারস্পরিকভাবে যুক্ত ছিলেন, যেটির এলজিবিটিকিউ এবং মুসলমানদের প্রতি শত্রুতার ইতিহাস রয়েছে। গোষ্ঠিটির নেতা ক্রিস বাটলারকে এর সদস্যরা একজন ইশ^র হিসাবে প্রচার করে থাকেন। ২০১৩ সালে হাওয়াইয়ের হয়ে কংগ্রেসে তুলসি প্রথম আমেরিকান সামোয়ান এবং হিন্দুত্ববাদ অনুশীলনকারী হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন। এসআইএফকে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠি ‘হরে কৃষ্ণ’-এর একটি বিকল্প শাখা হিসাবে অভিহিত করা হয়ে থাকে, যা হাওয়াই, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে হাজার হাজার অনুসারী গড়ে তুলেছে এবং বাটলারকে ঈশ্বরের একটি সম্প্রসারণ হিসাবে ঘোষণা করেছে। ২০১৭ সালে মিডিয়াম-এ একটি পোস্টে একজন প্রাক্তন এসআইএফ সদস্য বলেছিলেন, ‹আমি ক্রিস বাটলারকে পৃথিবীতে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর বলে বিশ্বাস করার জন্য গড়ে উঠেছি, এবং আপনি যদি তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন বা তাকে কোনোভাবে অসন্তুষ্ট করেন, তাহলে আপনি কার্যকরভাবে ঈশ্বরকে অপমান করেন।› তুলসির খালা ড. ক্যারোলিন সিনাভায়ানা গ্যাবার্ড, সংগঠনটি সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার ভাগ্নির সম্পৃক্ততা সম্পর্কে ২০২২ সালে দ্য ইন্ডিপেনডেন্টকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আবারও আমি স্পষ্টতই দেখতে পেলাম যে আমার ভাগ্নীর টাকার কার্লসন এবং ভøাদিমির পুতিনের মতো জঘন্য শক্তিশালী ব্যক্তিদের বন্দনা করার অনুরাগ যা সমস্যাযুক্ত এবং গভীরভাবে উদ্বেগজনক।’ এটি উল্লেখ করাটা আমাকে মোটেই আনন্দ দেয় না যে, তুলসীর একক পরিচালনার নীতিটি অনুপযুক্ত বলে মনে হয়, যা কার্যত কোনো নীতিই বহন করে না।’ ক্যারোলিন আরও অভিযোগ করেছেন যে, ২০২০ সালের নির্বাচনে তুলসির সাফল্য বাটলারের রাজনৈতিক প্রভাবের ফলাফল ছিল, যেখানে তুলসি খোলাখুলিভাবে বাটলারকে তার গুরু হিসাবে বন্দনা করেছিলেন। সূত্র: ডেইলি বিস্ট।