রমজানে বাড়ছে না নিত্যপণ্যের দাম


রমজানে বাড়ছে না নিত্যপণ্যের দাম
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে না। কারণ দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য মজুত রয়েছে। বাজার ব্যবস্থা ভোক্তাবান্ধব থাকবে, কারণ সরকার রমজানের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।সম্প্রতি বাসসের সঙ্গে আলাপকালে শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ও কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছেন।এ মৌসুমে দেশে আলু, পেঁয়াজ ও অন্য শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের বাম্পার উৎপাদন হয়েছে, যা এই জাতীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।এদিকে অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা সারা দেশের কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে ও তাদের দাম স্থিতিশীল রাখতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করছেন।সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো এর মধ্যে বাজার ব্যবস্থাকে ভোক্তাবান্ধব করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।বাসসের সঙ্গে আলাপকালে মেঘনা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার তসলিম শাহরিয়ার বলেন, পবিত্র মাসে ভোজ্যতেল ও চিনির কোনো সংকট হবে না। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল ও চিনি মজুত রয়েছে।দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২০ লাখ টন, যেখানে রমজান মাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা সাধারণত তিন লাখ টন পর্যন্ত বেড়ে যায়।তিনি বলেন, তাদের কাছে পর্যাপ্ত ভোজ্যতেলের মজুত রয়েছে, যার জন্য সংকটের সম্ভাবনা নেই।কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) তথ্য উদ্ধৃত করে, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) জানিয়েছে , গত অর্থবছরে (অর্থবছর ২৪) দেশে সয়াবিনের উৎপাদন ছিল ১.৭২ লাখ মেট্রিক টন, সূর্যমুখী ২৭,০০০ মেট্রিক টন ও সরিষা ১৬.৭ লাখ মেট্রিক টন।আমদানি বৃদ্ধি ও দাম নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ, আলু ও খেজুরসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর শুল্ক মওকুফ করেছে।এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কমে যাওয়ার ফলে ঋণপত্র (এলসি) খোলার পথ পরিষ্কার হয়ে যায়।বাংলাদেশ বাণিজ্য ও শুল্ক কমিশন (বিটিটিসি) থেকে ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম স্থিতিশীল রয়েছে; যা এক মাস আগে প্রতি টন ৯৮৯ ডলার ছিল। প্রতি কেজি অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ১১৬.৭৫ টাকা।এছাড়া পরিশোধিত পাম তেলের আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রতি টন ১,০৭২.৫০ ডলার কমেছে; যা এক মাস আগে প্রতি টন ১,১৬৭.৫০ ডলার ছিল।বাংলাদেশে প্রতি কেজি পরিশোধিত পাম তেলের দাম ১২৬.১৮ টাকা।পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগে দেশে প্রধান খাদ্যশস্য ও পণ্য যেমন- চাল, গম, চিনি, ছোলা, খেজুর, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, লবণ ও আলুর মজুত ও দাম এখন বিবেচনাধীন রয়েছে।বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এ বছর আলু উৎপাদন হয়েছে মোট ১.৩০ কোটি টন; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১.১৩ কোটি টন।তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষক পর্যায়ে আলু এখন প্রতি কেজি ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; যা খুচরা পর্যায়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি।এছাড়া ডিমের বাজার এখন স্থিতিশীল, অন্যদিকে কাঁচাবাজারে শীতকালীন সবজির দাম ও সরবরাহ ঠিক আছে।সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শক্তিশালী বাজার পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কারণে নির্বিঘ্ন সরবরাহ শৃঙ্খলে ভোক্তারা তাদের সন্তুষ্টি ও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।প্রধান খাদ্যশস্যের মজুত: ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চালের বর্তমান মজুত ১৩.১৭ লাখ মেট্রিক টন। গমের বর্তমান মজুত ৩.৪২ লাখ টন।

Archive Calendar

শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮