থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ


থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ
একটি কূটনৈতিক ফোনালাপ ফাঁসকে কেন্দ্র করে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী ব্যাংককে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।শনিবার ‘ভিক্টোরি মনুমেন্ট’ এলাকায় প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। অনেকের হাতে ছিল থাইল্যান্ডের জাতীয় পতাকা ও ‘অশুভ প্রধানমন্ত্রী, বিদায় হও’ লেখা প্ল্যাকার্ড। মঞ্চে দাঁড়িয়ে এক বক্তা সরাসরি অভিযোগ তোলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি রাষ্ট্রদ্রোহ করেছেন!’ব্যাংকক থেকে এএফপি জানিয়েছে, কম্বোডিয়ার এক সিনিয়র রাজনীতিকের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে পেতংতার্নের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফোনালাপে তিনি ওই রাজনীতিককে ‘আংকেল’ সম্বোধন করেন এবং থাই সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে ‘বিরোধী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।এই ফোনালাপের জেরে পেতংতার্নের নেতৃত্বাধীন জোট থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল সরে দাঁড়ায়। তারা পেতংতার্নের বিরুদ্ধে কম্বোডিয়ার প্রতি ‘নতজানু’ আচরণ এবং সেনাবাহিনীর সম্মান ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ তোলে। ফলে পার্লামেন্টে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রবীণ নাগরিকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। অনেকেই ছিলেন ‘ইয়েলো শার্ট’ আন্দোলনের সাবেক কর্মী— যারা ২০০০-এর দশকে পেতংতার্নের বাবা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা রেখেছিলেন।এক সময়ের থাকসিন-ঘনিষ্ঠ ও বর্তমানে তার কড়া সমালোচক এক নেতা এই বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ছিলেন।উত্তর থাইল্যান্ড থেকে বাসে করে এসে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৭০ বছর বয়সি সেরি সাওয়াংমুয়ে বলেন, ‘আমি এসেছি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়। ফোনালাপটি শোনার পরই বুঝে গেছি, প্রধানমন্ত্রীকে আর বিশ্বাস করা যায় না। বহু রাজনৈতিক সঙ্কট দেখেছি আমি— জানি এগুলোর পরিণতি কী হয়। আমি বিশ্বাস করি, তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত।’থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরেই রাজতন্ত্র ও সেনাবাহিনী-সমর্থিত ‘ইয়েলো শার্ট’ এবং থাকসিনপন্থী ‘রেড শার্ট’ গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজন বিরাজ করছে।৬৪ বছর বয়সি জামনং কালানা জানান, তিনি একসময় ‘রেড শার্ট’ সমর্থক ছিলেন, কিন্তু এখন পেতংতার্নের পদত্যাগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘যখন দেখি কেউ আমার মতো করে দেশকে ভালোবাসে না, তখন ভীষণ কষ্ট পাই।’