তিন দশক ধরে চলা ‘মিশন ইমপসিবল’ সিরিজের শেষ পর্বে কী থাকছে?


তিন দশক ধরে চলা ‘মিশন ইমপসিবল’ সিরিজের শেষ পর্বে কী থাকছে?
প্রায় তিন দশক ধরে চলতে থাকা ‘মিশন ইমপসিবল’ শুধু অ্যাকশন সিনেমা নয়, এ সিরিজ অনেকটা আবেগের। তাই ‘মিশন ইমপসিবল’ নামটির সঙ্গেই তো মিশে আছে শৈশবের নস্টালজিয়া।এবারের ক্রিস্টোফার ম্যাককুয়ারি পরিচালিত সিনেমাটি ঢাকার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে গত ২৩ মে। ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মিশন ইমপসিবল: দ্য ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’ সিনেমার এটি দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি। রহস্যময় এআই দ্য এনটিটির বিরুদ্ধে যে লড়াই ইথান হান্ট শুরু করেছিলেন, এ পর্বে সেটারই পরিণতি দেখানো হয়েছে।১৯৯৬ সালে প্রথম সিনেমা ‘মিশন ইমপসিবল’ মুক্তি পেয়েছিল। তারপর থেকে একে একে এই সিরিজের ৬টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এর আগে যারা এ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো দেখেননি, তাদেরও ‘দ্য ফাইনাল রেকনিং’ দেখতে খুব একটা সমস্যা হবে না। কারণ ‘দ্য ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’ না দেখলে আগের গল্পটি কোথায় শেষ হয়েছিল, ধরা একটু মুশকিল হবে।‘মিশন ইমপসিবল: দ্য ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’ সিনেমায় গল্পটা ঠিক এমন— ইথান হান্ট খুঁজছেন ডুবে যাওয়া রুশ সাবমেরিন সেভাস্তোপোল, যার ভেতরে লুকানো রয়েছে ভয়ংকর এআই প্রোগ্রাম দ্য এনটিটির সোর্স কোড। এই কোডকে ‘পয়জন পিল’-এ সংক্রমিত না করতে পারলে সেটি ডেকে আনতে পারে গোটা মানবজাতির ধ্বংস। এই কোডের দখল পেতে চান গ্যাব্রিয়েল (এসাই মোরালেস)। ইথানের সরকারও চায় কোড। আরও একবার পৃথিবী রক্ষার মিশনে নামেন ইথান হান্ট।শেষ দিকের প্লেনে অ্যাকশন দৃশ্যটি দুর্দান্ত। প্যারাসুট জ্বলে যাওয়ার দৃশ্যে সবচেয়ে শক্ত নার্ভের মানুষও নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হবেন। দুটি দুর্দান্ত স্টান্ট সিনেমার মেরুদণ্ড। সিনেমায় কিছু টান টান মুহূর্তও আছে। যেমন বেনজি (সাইমন পেগ) ফুসফুস অকেজো হয়ে পড়ার মধ্যেও বোমা নিষ্ক্রিয় করেন। দেখতে দেখতে পর্দার দর্শকদেরও ফুসফুস থেমে যাওয়ার উপক্রম হবে বৈকি।‘দ্য ফাইনাল রেকনিং’-এ ‘মিশন ইমপসিবল’ এর আগের সিনেমার মুহূর্তগুলো ফ্ল্যাশব্যাক হিসেবে ফিরে আসে, যেন গ্রেটেস্ট হিটস সংকলন। অনেকের কাছে এ অংশটুকু মনে হতে পারে— স্মৃতির পাতা থেকে তুলে আনা কিছু মণিমুক্তা।‘দ্য ফাইনাল রেকনিং’ মেজাজে ধীর হলেও শুরু থেকেই দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখে দুটি কারণ।প্রথমত ১০০ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে এনটিটিকে থামাতে হবে, না হলে পারমাণবিক বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবী। দ্বিতীয়ত গ্যাব্রিয়েল যেন এনটিটিকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। দুই কাজ কীভাবে ঠিক হবে, সেটি দেখানোটাই তো রোমাঞ্চকর ব্যাপার। যদিও ‘মিশন: ইমপসিবল’ ফ্র্যাঞ্চাইজি মানেই ধুন্ধুমার অ্যাকশন, দুর্দান্ত ধাওয়া আর চোখধাঁধানো স্টান্ট।‘দ্য ফাইনাল রেকনিং’-এ সবই আছে, কিন্তু সিনেমার মেজাজ বড্ড গম্ভীর। এ ছাড়া সাগরের গভীরে দুর্ঘটনায় পতিত সাবমেরিনের ইথানের ঢোকার দৃশ্যটি সিনেমার সবচেয়ে আশ্চর্য দৃশ্য বললেও কম বলা হবে। ২০ মিনিটের সংলাপহীন দৃশ্যটিতে এক ধরনের রোমাঞ্চকর গাম্ভীর্য লুকিয়ে আছে, যা ‘থান্ডারবল’-এর পানির নিচের দৃশ্যগুলোকে মনে করিয়ে দেয়।সবকিছু মিলিয়ে সিনেমাটিকে আলাদা করে তুলে ধরেছে টম ক্রুজের অভিনয়। তিনি বারবার ভেঙে পড়েন, শরীর-মন সায় দেয় না; তবু নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকেন। তিনি কখনোই তার দলের কাউকে ফেলে যান না। এ সিনেমায় তিনি কেবল স্টান্টম্যান নন; বরং রক্তমাংসের মানুষ হিসেবেই দেখানো হয়েছে বেশি।এ ফ্র্যাঞ্চাইজির সিনেমার পরিচালক ক্রিস্টোফার ম্যাককুয়ারি, যিনি মূলত সংলাপ আর দৃশ্যকল্প তৈরির দিকেই বেশি মন দিয়েছেন। যদিও লার্জার দ্যান লাইফ অ্যাকশন দেখতেই অভ্যস্ত দর্শকরা।এ সিনেমায় টম ক্রুজ ছাড়াও আছেন হেইলি অ্যাটওয়েল, সাইমন পেগ, ভিং রেমস, এসাই মোরালেস, পম ক্লেমনতিফ প্রমুখ।