রাজশাহীর চাঞ্চল্যকর মনিরুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার- ৭
অনলাইন নিউজ ডেক্স

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানা এলাকায় চাঞ্চল্যকর মনিরুল হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আত্মগোপনে থাকা ৭ আসামিকে দিনাজপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। একসঙ্গে এতজন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।র্যাব-৫ এর একটি দল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দিবাগত মধ্যরাতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার হায়াতপুর পূর্বপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।গ্রেপ্তার হওয়া সাতজন হলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার দেলশাদপুর শিয়ালমারা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম (৬০), তার দুই ছেলে আকবর আলী (২৮) ও বাবর আলী (১৯); নারায়ণপুর গ্রামের মফিজুল ইসলাম (৫০), তার ভাই সাদ্দাম হোসেন (৩৭) এবং মফিজুলের দুই ছেলে হানিফ (২৯) ও রমজান আলী (২০)।স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে গোদাগাড়ীর আইহাই সাগরা মোড়ে ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম (৪৭)-এর ওপর হামলা চালায় আসামিরা। প্রকাশ্যে, জনসমক্ষে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।নিহত মনিরুল স্থানীয়ভাবে একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। তার মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) মনিরুল ইসলামের পরিবার গোদাগাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় সাতজনকে নাম উল্লেখ করে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়।এরপরই র্যাব-৫-এর রাজশাহীর একটি ইউনিট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করে। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার একটি বাড়িতে গিয়ে তারা জানতে পারে, আসামিরা আশরাফুল ইসলামের আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছেন। সেখানে অভিযান চালিয়ে সাতজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়।র্যাব-৫ এর রাজশাহী সিপিসি-১ এর উপ-পরিচালক মেজর আসিফ আল-রাজেক বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। কেউ ভারতের দিকে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল, আবার কেউ দেশের ভেতরেই আত্মগোপনের চেষ্টা করছিল। আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সময়মতো অভিযান চালিয়ে সবাইকে আটক করি।”তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের রাজশাহীতে আনা হয়েছে এবং তাদের গোদাগাড়ী থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে পাঠাবে।মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে প্রকাশ্যে মেরে ফেলেছে ওরা। এত মানুষ ছিল, কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। এখন তো গ্রেপ্তার হয়েছে, আমি চাই দ্রুত বিচার হোক। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, যেন আর কোনো স্ত্রীকে এমন রাত কাটাতে না হয়।
