অবশেষে লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে সেতু


অবশেষে লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে সেতু
অবশেষে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের কুমুদিনী হাসপাতাল সংলগ্ন সাহাপাড়া বাবুবাজারের উত্তর পাশে লৌহজং নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।জানা যায়, ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় খেয়া নৌকা ও বাঁশের সাঁকোয় ঝুঁকির মধ্যে এলাকাবাসীকে পারাপার হতে হচ্ছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পৌরসভার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পাকা সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এ যেন বাতির নিচেই অন্ধকার।এদিকে এলাকাবাসী ও কুমুদিনী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মির্জাপুর সাহাপাড়া গ্রামে দানবীর আরপি সাহার বাড়িতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এখানে নিরাপদ পাকা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। কুমুদিনী পরিবারের কর্ণধার রাজীব প্রসাদ সাহাসহ কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল বিডি লিমিটেডের কর্মকর্তারা নিরাপদ পাকা সেতু নির্মাণের একমত পোষণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন।এ সময় রাজীব প্রসাদ সাহা ছাড়া কুমুদিনী পরিবারের সদস্য রুদ্রপ্রসাদ সাহা, জি এম রণজিৎ সাহা, স্বপন কুমার পোদ্দার, ডা. অনুপম পোদ্দার, সহযোগী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ সাহা, অনিমেশ ভৌমিক লিটন, এলাকাবাসীর মধ্যে সালাউদ্দিন ডন, চিত্রশিল্পী হুমায়ুন কবীর, উত্তম সাহা ও সাবেক কাউন্সিলর তাপস সাহা উপস্থিত ছিলেন। এ খবরে এলাকায় আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে।মির্জাপুর সাহাপাড়া বাবুবাজার-কুমুদিনী হাসপাতাল সংলগ্ন লৌহজং নদীর ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে পারাপারে মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাঙ্গাইল, ঢাকা ও মানিকগঞ্জ জেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষ মির্জাপুর বাবুবাজার-কুমুদিনী হাসপাতাল রোড দিয়ে যাতায়াত করে আসছে। গুরুত্বপূর্ণ এই রোডের লৌহজং নদীর সাহাপাড়া বাবুবাজার-কুমুদিনী হাসপাতাল সংলগ্ন লৌহজং নদীর ওপর একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। তাদের সে দাবি উপেক্ষিত।একটি পাকা সেতু না হওয়ায় সাহাপাড়া, কুতুববাজার, আন্ধরা, সরিষাদাইর, মুসলিমপাড়া, ভাওড়া ইউনিয়ন, বহুরিয়া ইউনিয়ন, ওয়ার্শি ইউনিয়ন, ভাতগ্রাম ইউনিয়ন, মির্জাপুর পৌরসভাসহ দক্ষিণাঞ্চলের তিনটি জেলার দুর্ভোগের শেষ নেই। পাকা ব্রিজ না হওয়ায় বর্ষাকালে খেয়া নৌকা ও শুকনো মৌসুমে নড়বড়ে বাঁশের চালির ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করছে। ঝুঁকির মধ্যে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে মানুষ পড়ে বিপাকে। অনেকে রাস্তায় মারা যান। নদীর দুই পাশে অপরিকল্পিতভাবে ব্লক ফেলায় পারাপার আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন ডন বলেন, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করছে। তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।এ ব্যাপারে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ও মির্জাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান বলেন, সাহাপাড়া বাবুবাজার এলাকায় লৌহজং নদীর ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ সময়ের দাবি হয়ে উঠেছিল। বিষয়টি তারা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ কুমুদিনী পরিবারকে জানিয়েছিলেন। কুমুদিনী পরিবার নিরাপদ পাকা সেতু নির্মাণের দাবি মেনে নিয়েছেন। এখন আর সেতু নির্মাণে কোনো বাধা নেই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরাপদ সেতু নির্মাণ হবে।এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুল সাজ রিজন বলেন, মির্জাপুর পৌরসভার সাহাপাড়া বাবুবাজার সংলগ্ন লৌহজং নদীর কুমুদিনী হাসপাতাল সংলগ্ন একটি পাকা সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছিল। এলাকার জনগণের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে বিষয়টি কুমুদিনী পরিবার ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছিলেন। কুমুদিনী পরিবার দাবি মেনে নিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এখানে নিরাপদ সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।