শীতে অন্তঃসত্ত্বার বাড়তি যেসব যত্ন দরকার
অনলাইন নিউজ ডেক্স
ঝেঁকে বসেছে শীত। প্রচন্ড হিমশীলত বাতাস বাইরে। শীতের দাপটে ঘরের বাইরে বেরোনো দায়। এই সময়টায় অন্তঃসত্ত্বাদের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। শীতের প্রভাবে মা ও শিশুর যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় সেজন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মিরপুরের বিআইএইচএস জেনারেল হসপিটারের ফাটিলিটি কনসালটেন্ট এবং গাইনোকোলজিস্ট ডা. হাসান হোসেন আখি।* সুষম খাবার খেতে হবেঅন্তঃসত্ত্বাদের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হয়। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে গর্ভের সন্তানের ওপরও। এ সময় মা যদি নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হয় তবে সন্তানও সুস্থ থাকবে এবং প্রসবকালীন জটিলতা কমে যাবে ৯৫ ভাগ। শীতকালে বাজারে শিম, মুলা গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক সুলভমূল্যে কিনতে পাওয়া যায়। গর্ভবতী মায়েদের ভাত কম খেয়ে এ খাবারগুলো বেশি বেশি খাওয়া উচিত। আলু একটু কম খাওয়াই ভালো। কারণ, এতে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। ফলের মধ্যে পেয়ারা, বরই, কদবেল, জলপাই, কামরাঙ্গা, কমলালেবু, আনার একটু বেশি পরিমাণে খাওয়া দরকার। এসব ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফসফরাস, লোহা, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ বি ও সি।* পরিমিত পানি পান করতে হবেশীতকালে যেহেতু ঘাম কম হয় এবং পিপাসা কম পায় তাই স্বাভাবিকভাবে আমরা এ সময় পানি কম খাই। গর্ভবতীদের এ সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিত। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কমে যাওয়া, মাথা ব্যথা ও প্রিটাম লেবারের মতো জটিলতা কমবে।* ত্বকের যত্ন নিতে হবেগোসল করার সময় গায়ে অনেকক্ষণ পানি ঢালবেন না। কিংবা অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না। এতে ত্বকের শুষ্কতা আরও বেড়ে যায়। চেষ্টা করবেন চার থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোসল শেষ করতে এবং উষ্ণ গরম পানি ব্যবহার করতে। গোসলের সময় গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করুন। গোসলের পর ত্বক ভেজা থাকা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। হাতে পায়ে মুখে ও শরীরে মাখুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে গ্লিসারিন কিংবা অলিভ অয়েল নিয়মিত মাখতে পারেন। ঠোঁটে ভেসলিন ব্যবহার করবেন। ঠোঁটের উপরিভাগের পাতলা শুষ্ক ত্বক কখনো টেনে তোলার চেষ্টা করবেন না, তাতে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে। নিয়মিত মেসেজ করতে পারেন, এতে রক্ত চলাচল ভালো থাকে যা ত্বকের জন্য উপকারী।* আরামদায়ক গরম পোশাক পরা ভালোশীতে সোয়েটার কিংবা গরম কাপড় পরিধান করুন। এমন কিছু পরবেন না যাতে পেটের ওপর চাপ পড়ে এবং চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। লম্বা ও সামনের দিকে বোতাম আছে এমন সোয়েটারগুলো এ সময় গর্ভবতী মায়েদের আরাম দিতে পারে। শীতের কাপড়ের সঙ্গে জুতার দিকেও নজর রাখতে হবে। পা থেকে ঠান্ডা লেগে মা এবং সন্তানের সমস্যা হতে পারে। পা ঢাকা জুতা এবং ঘরে-বাইরে মোজা পরে থাকবেন।* সর্দি কাশি হলে নিরাময়ের ব্যবস্থা নিনঅনেক গর্ভবতীরা সন্তানের ক্ষতি হবে ভেবে সর্দি কাশিতে ওষুধ খেতে চান না। সর্দি কাশি যদি দুই তিন দিনের বেশি থাকে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে। এসব সর্দি কাশি সংক্রমণ এবং জীবাণুবাহিত রোগের লক্ষণ হতে পারে এবং অনেক সময় এসব থেকে নিউমোনিয়া পর্যন্ত হতে পারে। ডাক্তার এসময় গর্ভকালীন অবস্থায় নিরাপদ ওষুধই রোগীকে দেবেন। যদি মায়ের ঠান্ডার সমস্যা আগে থেকেই থাকে তবে ঠান্ডা পানি ব্যবহার এবং ঠান্ডা কিছু খাওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।