বিগত সরকারগুলো ১৪ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ ফয়জুল করিম বলেছেন, আমরা দেখেছি যারা বিগত দিনে ৭১-এর পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাত পর্যন্ত যারা শাসক ছিল, তারা এই দেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন করেছে, তারা আবরারকে বুয়েটের মধ্যে হত্যা করেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একশ মেয়েকে ধর্ষণ করার পরে সেঞ্চুরিবরণ করা হয়েছিল, সদরঘাটের সামনে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, বিগত সরকারগুলো বাংলাদেশের ১৪ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, গোটা ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। চুরি-ডাকাতির মেগা প্রজেক্ট খোলা হয়েছিল, যেখানে খুন এবং ধর্ষণ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সেই বাংলাদেশ আর দেখতে চাই না। বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চিটাগাং রোড চত্বরে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের থানা সভাপতি বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল্লাহ আল ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শরিয়াহ উপদেষ্টা মুফতি ওমর ফারুক সন্দ্বীপি, কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ। মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ ফয়জুল করিম বলেন, এই দেশ চারবার স্বাধীন হয়েছে। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য। ভারতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পাকিস্তান সৃষ্টি করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য। একাত্তরেও আন্দোলন করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অন্দোলন করে স্বাধীন করেছিলাম, ভারতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পাকিস্তান নামে ভূখণ্ড পেয়েছিলাম। এরপর পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বাংলাদেশ নামে একটি দেশ পেয়েছিলাম। চরমোনাই নায়েবে আমির আরও বলেন, আর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আমরা স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, খুনি শেখ হাসিনার থেকে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য। বারবার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি, কিন্তু বৈষম্য দূর হচ্ছে না। যে জুলম, নির্যাতন, হত্যা, মিথ্যা মামলা, ধর্ষণ থেকে বাঁচার জন্য আন্দোলন করেছিলাম। আবার ৫ আগস্টের পরে দেখেছি সেই একই দখলদারি, চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা। এর জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করে নাই। আমরা আন্দোলন করেছি মুক্তির জন্য। গরিবদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। যেখানে থাকবে জেলে, শ্রমিক, মজলুম, তাঁতী, কৃষক, কামার, মেথর, চামারদের অধিকার। যেখানে থাকবে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের অধিকার। সবার অধিকার যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমন একটি বাংলাদেশের জন্যই আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। আজও যদি বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে, বস্ত্রহীন থাকে, আজকে বাংলাদেশের মানুষ যদি চিকিৎসাবিহীন মারা যায়, তাহলে আমরা ব্যর্থ হয়েছি, আন্দোলন সফল করতে পারি নাই। তিনি বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে মানুষে অধিকার থাকবে। মেয়েরা ইজ্জত-আবরুর নিয়ে বসবাস করতে পারবে। আমাদের মেয়েরা-ছেলেরা বড় ব্যবসায়ী হবে, আমাদের বোনেরা-ভাইয়েরা বড় শিক্ষিত হবে, চাকরিজীবী হবে। গরিবেরা দরিদ্রসীমার উপরে চলে যাবে। বাংলাদেশে যদি ইসলামিক অর্থনীতি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে একজন গরিবও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনীতি সব ধনীদের জন্য, গরিবদের জন্য নয়। অন্যদিকে ইসলামী অর্থনীতি সবই গরিবদের জন্য।