শেয়ারবাজারে বীমা খাতের দাপট


শেয়ারবাজারে বীমা খাতের দাপট তুঙ্গে। চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন থেকে বীমা খাত লেনদেনে একক প্রাধান্য বিস্তার করে। দিনে দিনে তা বেড়ে চলেছে। রোববার এ খাতের লেনদেনে ভর করে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর লেনদেন গত ২০ জুলাই বা প্রায় দুই মাস পর আটশ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ লেনদেনের অর্ধেকেরও বেশি শুধু বীমার শেয়ারে। গতকাল ডিএসইতে ৩২৬ কোম্পানির ৮৬৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বীমা খাতের ৫৭ কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৮২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা বলেন, মনে হচ্ছে শেয়ারবাজারে এখন বীমার শেয়ারের বাইরে আর কোনো শেয়ার নেই। বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তাদের সবার চোখ বীমা কোম্পানির শেয়ারে। ২০২০ সালের শেষ অর্ধে এমন অবস্থা ছিল। তখনও বীমার শেয়ার নিয়ে বড় কারসাজি হয়েছিল, এখনও হচ্ছে। তারা আরও বলেন, গাড়ি বীমা বাধ্যতামূলক করে নতুন আইন আসছে এবং ব্যাংকাস্যুরেন্স নীতিমালাও শিগগিরই সংশোধন হয়ে কার্যকর হবে– এমন দুই ইস্যুকে কেন্দ্র করে শেয়ারবাজারের একাধিক চক্র এসব শেয়ারের দর বাড়াচ্ছে। ২০২০ সালের কারসাজিতে যারা যুক্ত ছিল, এখনও তারাই কারসাজির সঙ্গে যুক্ত। এদের কারণে গত দুই সপ্তাহে কয়েকটি বীমার শেয়ারে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে। ২০২০ সালের কারসাজিতে কোনো কোনো বীমা কোম্পানির শেয়ার দর মাত্র চার থেকে ছয় মাসে ১০ থেকে ১৫ গুণ হয়েছিল। তবে গতকাল যে হারে লেনদেন বেড়েছে, সেই হারে বীমার শেয়ারদর বাড়েনি। তালিকাভুক্ত ৫৭ বীমা কোম্পানির সবক’টিরই কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ফারইস্ট লাইফ, ন্যাশনাল লাইফ, পদ্মা লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, সানলাইফ, ইসলামী কমার্শিয়াল এবং প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ফ্লোর প্রাইস বা আগের দিনের মূল্যে কেনাবেচা হয়েছে। বাকি ৫২ শেয়ারের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ২৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ২২টির। তার পরও গড়ে সোয়া ১ শতাংশ হারে বেড়েছে বীমা খাতের শেয়ার দর। বীমার বাইরে তথ্য-প্রযুক্তি এবং কাগজ ও ছাপাখানা খাতে দর হারানো শেয়ার সংখ্যার তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার সংখ্যা বেশি ছিল। উভয় খাতের ১০ শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে ছয়টির দর কমেছে। বাকি সব খাতের ফ্লোর প্রাইসের ওপরে থাকা অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে।